ছাত্র ধর্মঘটের ডাক কোটা আন্দোলনকারীদের
নিরাপদ সড়কের জন্য ৯ দফা দাবিতে চলমান আন্দোলনে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতারা।
শনিবার দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
শুক্রবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে এই কর্মসূচি ঘোষণা দেয় কোটা নিয়ে আন্দোলনকারী সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির যুগ্ম আহ্বায়ক বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, শনিবার সকাল থেকে সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে কোনো ক্লাস-পরীক্ষা হবে না এবং কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গাড়ি চলাচল করবে না। কর্মসূচিতে শিক্ষার্থী ছাড়াও শিক্ষক ও নাগরিকদের এ ধর্মঘটে অংশগ্রহণের অনুরোধ করা হয়।
তিনি বলেন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে ঢাকার মিরপুর, দনিয়া, নারায়ণগঞ্জ, নোয়াখালী, চাঁদপুরসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ এবং সন্ত্রাসীদের হামলার প্রতিবাদে সব স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে শনিবার সারা দেশব্যাপী ছাত্রধর্মঘট ঘোষণা করা হলো।
এর আগে পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুনের স্বাক্ষর করা একটি বিজ্ঞপ্তি বিলি করা হয়। এতে কোটা নিয়ে তাদের দাবির পাশাপাশি নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্রদের ৯ দফা দাবি মেনে নিয়ে দ্রুত সমস্যার সমাধানের আহ্বান জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গত ফেব্রুয়ারি থেকে আন্দোলন করছে পরিষদ। এর মধ্যে ১১ এপ্রিল সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কোনো কোটা থাকবে না। আর পরদিন সংসদেই প্রধানমন্ত্রী বলেন, উচ্চ আদালতের রায়ের কারণে এই কোটা বাতিল করলে তিনি আদালত অবমাননায় পড়বেন।
এর মধ্যে কোটা সংস্কার বিষয়ে সুপারিশ করতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়।
এর পর গত ১ জুলাই দুপুরে মিরপুর-১৪ নম্বরের ভাষানটেক বাজার এলাকার মজুমদার রোডের ১২ নম্বর বাসা থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা মুহাম্মদ রাশেদ খানকে তুলে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ। পরে শাহবাগ থানায় করা আইসিটি মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। মামলাটি দায়ের করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক আল নাহিয়ান খান জয়।
মামলার নথিতে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন, যা প্রজ্ঞাপন প্রকাশের প্রক্রিয়াধীন। এরপরও গত ২৭ জুন রাশেদ খান ‘কোটা সংস্কার চাই’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ থেকে ভিডিও লাইভে এসে বক্তব্য দেন। সেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে মানহানিকর বক্তব্য ও মিথ্যা তথ্য দেন।