পরিবর্তনের অসীম আশা জাগিয়েছে শিক্ষার্থীরা: যুক্তফ্রন্ট
স্কুল-কলেজের ছাত্রদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনকে শিক্ষনীয় উল্লেখ করে যুক্তফ্রন্ট নেতারা এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা-নির্যাতন বন্ধ করে সড়ক, মহাসড়ক থেকে র্যাব ও দাঙ্গা পুলিশ প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন।
শুক্রবার যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক এ.কিউ.এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, জেএসডি সভাপতি আ.স.ম আবদুর রব ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না গণমাধ্যমে পাঠানো এক যুক্ত বিবৃতিতে এই আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, ‘জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছে যে ভয়াবহ তথ্য, লাখ লাখ লাইসেন্সবিহীন ড্রাইভাররা গাড়ি চালাচ্ছে। কয়েক লাখ ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় চলছে। তাদের কারণে সড়ক নিরাপদ নয়। সড়কের দায়িত্বে যারা আছেন তারা অধিকাংশই দুর্নীতিগ্রস্ত, ঘুষ খেয়ে গাড়ি চালনার অনুমতি দেয়।’
‘গত পাঁচ দিনে স্কুল-কলেজের ছাত্রদের নিরাপদ সড়কের আন্দোলন, এই সকল তথ্য সত্য বলে প্রমাণ করেছে। সরকারের আন্তরিকতা থাকলে এই সমস্যাগুলোর সমাধান মোটেও কঠিন নয় ‘
যুক্তফ্রন্টের তিন নেতা বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের মাধ্যমে দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যাটি জনগণের চোখের সামনে তুলে ধরার জন্য স্কুল-কলেজে পড়া এই সকল কিশোর-তরুণকে আমরা অভিনন্দন জানাই। গাড়ির বৈধ ডকুমেন্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ির ইনসুরেন্সের মতো অতি সাধারণ বিষয়গুলোও নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তর। ট্রাফিক ব্যবস্থা শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসতে সততা ও নিয়মানুবর্তিতা ছাড়া আর কিছুই লাগে না, তা এই কিশোররা গত কয়দিনে প্রমাণ করেছে।’
বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘এসব কিশোর চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ সঠিক কাজটি করছে না। একই সাথে তারা বুঝিয়ে দিয়েছে, সুশাসন কায়েম করা গেলে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বাংলাদেশকে ইতিবাচক পথে পরিচালনা করা যায়। জনমন থেকে হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন, তারা পুনঃপ্রবর্তন করেছে। পরিবর্তনের অসীম আশা জাগিয়েছে দেশবাসীর মনে।’
যুক্তফ্রন্ট নেতারা বলেন, ‘সরকারের প্রতি আমাদের অনুরোধ, কিশোর-তরুণদের আকাঙ্ক্ষার অভিব্যক্তি, শিক্ষনীয় এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ওপর হামলা-নির্যাতন বন্ধ করুন। রাজপথ, সড়ক, মহাসড়ক থেকে র্যাব ও দাঙ্গা পুলিশ তুলে নিন।’
নেতারা বলেন, ‘যুক্তফ্রন্ট মনে করে, সারাদেশের মানুষ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের নয় দফা দাবি পরিপূর্ণভাবে সমর্থন করে।’ তারা বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষের মৃত্যু নিয়ে হাসি-তামাশা করা দেশের মানুষ অমানবিক ও নিষ্ঠুর বলে মনে করে।’ তারা ছাত্রদের নয় দফার মধ্যে আশুপূরণীয় দাবিগুলো আগামী তিন দিনের মধ্যে বাস্তবায়ন করার আহ্বান জানান।
যুক্তফ্রন্ট নেতারা বলেন, ‘আন্দোলনের সময় আক্রান্ত সব শিক্ষার্থীর সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা, সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা ও যারা আক্রমণ করেছিল তাদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার জন্য আমরা দাবি জানাচ্ছি। ভবিষ্যতে কেনো ছাত্রের বিরুদ্ধে কেনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। কারণ তারা আামাদের নন্দিত সন্তান। সারাদেশের সমস্ত অবিভাবক ও মঙ্গলাকাঙ্ক্ষী জনগণ তাদের পাশে আছে এবং থাকবে।’