শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার দায় ‘আওয়ামী সন্ত্রাসীদের’: মির্জা ফখরুল
রাজধানীর জিগাতলাসহ বিভিন্ন স্থানে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার জন্য ‘আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের’ দায়ী করেছে বিএনপি। শনিবার (৪ আগস্ট) রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ দাবি করেন। একইসঙ্গে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ওপর এসব হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা জানেন যে, আজ দুপুরে পর থেকে জিগাতলা, মিরপুরসহ বিভিন্ন স্পটে ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর দফায় দফায় হামলা করা হয়েছে। নিরাপদ সড়কের দাবিতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের এই শান্তিপূর্ণ এবং শিক্ষণীয় আন্দোলনের ওপর আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা অমানবিক আক্রমণ চালিয়ে শিশু-কিশোরদের মারাত্মকভাবে আহত করেছে। আমরা এহেন কাপুরুষিত হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ছাত্র-ছাত্রীরা অভিযোগ করেছে যে, সম্পূর্ণ বিনা উস্কানিতে ধানমন্ডি আওয়ামী লীগের অফিস থেকে ছাত্রলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। পূর্ব পরিকল্পতভাবে ওইসব সন্ত্রাসীরা হেলমেট পড়ে আগ্নেয়াস্ত্র, রামদা ও অন্যান্য অস্ত্র নিয়ে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের রক্তাক্ত ও জখম করেছে। আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি যে সেখানে মুহুর্মূহু গুলি হয়েছে। তাতে অনেক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ওপর যে পৈশাচিক আক্রমণ হয়েছে তাও বিএনপি মহাসচিব তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের চলমান এই আন্দোলনকে নসাৎ করতে সরকার বিএনপিকে জড়িয়ে মিথ্যাচার করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গত ক’দিন ধরে একেবারে শান্তিপূর্ণভাবে নিরাপদ সড়কের জন্য শিক্ষণীয় আন্দোলন চলছিল। ছাত্র-ছাত্রীদের এই আন্দোলন শুধুমাত্র তাদের জীবনের নিরাপত্তার জন্য, নিরাপদ সড়কের জন্য। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক ও সেতু মন্ত্রী (ওবায়দুল কাদের) এই আন্দোলনকে সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে চিহ্নিত করে ছাত্র-ছাত্রীদের এই ন্যায়সঙ্গত যৌক্তিক আন্দোলনকে নসাৎ করার জন্য যে মন্তব্য করেছেন আমি তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। সরকার সুপরিকল্পিতভাবে এই আন্দোলনকে নসাৎ করার জন্য বিএনপিকে জড়িয়ে মিথ্যা কথা বলছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই, আমরা ছাত্র-ছাত্রীদের এই ন্যায়সঙ্গত যৌক্তিক আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছি এবং অত্যন্ত যৌক্তিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে সব বিষয়ে ব্যর্থতার জন্য সরকারের পদত্যাগ দাবি করেছি। আমরা কখনোই কোনও সন্ত্রাসী কার্যকলাপকে উৎসাহ দেয়নি এবং দেবো না। বরং সরকার ও সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা আজ ন্যাক্কারজনক সন্ত্রাসী কার্যকলাপ সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর চালিয়েছে।’
কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রসঙ্গে টেনে তিনি বলেন, ‘কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপরও ঠিক একইভাবে যে সন্ত্রাসী আক্রমণ চালিয়েছিলো এটা তারই ধারাবাহিকতা। সরকারের এহেন হামলার ঘটনার মধ্য দিয়ে ‘একদলীয় বাকশালী চরিত্র’ পুনরায় প্রকাশিত হয়েছে। এর বিরুদ্ধে জনগণকে সোচ্চার হতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, এম এ কাউয়ূম, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, শ্যামা ওবায়েদ, ইমরান সালেহ প্রিন্স, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, সহ-দফতর সম্পাদক বেলাল আহমেদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম প্রমুখ।