দেশে গণতন্ত্র নেই, গুন্ডাতন্ত্র আছে: ড. কামাল
দেশে গণতন্ত্র নেই, গুন্ডাতন্ত্র আছে বলে মন্তব্য করে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল বলেছেন, আমার জীবনের বিনিময়ে হলেও গুন্ডাতন্ত্র মুক্ত হোক। আমি এই গুন্ডাতন্ত্রের মধ্যে বেঁচে থাকতে চাই না। আমি চাই যে আমাকে গুলি করে মারা হোক। তাহলে অন্তত বলতে পারব গুন্ডাতন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে মারা গেছি।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক প্রতিবাদ ও সংহতি সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষার্থীদের ওপর নিপীড়নের প্রতিবাদ ও এই সংহতি সমাবেশের আয়োজন করে উদ্বিগ্ন নাগরিক সমাজ।
ড. কামাল হোসেন বলেন, যে দেশে স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাজউদ্দীন আহমদকে জীবন দিতে হয়েছে, সেই বাংলাদেশে গুন্ডাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে এটা মেনে নেয়া যায় না।
কারণ যে দেশের জন্য লাখো শহীদ জীবন দিয়েছে, যাদের লাশও আমরা পাইনি, তারা আমাদেরকে ঋণী করে রেখে গেছেন। তারা একটা দেশ রেখে গেছেন, যেখানে সভ্যতা থাকবে, মানুষ মানবাধিকার ভোগ করবে। সেখানে গুন্ডাতন্ত্র থাকা মানে তাদের অপমান করা।
দেশে অসুস্থ শাসনব্যবস্থা চলছে দাবি করে এই আইন বিশেষজ্ঞ বলেন, অসুস্থ শাসনব্যবস্থা বলব কারণ এই তরুণ ছাত্রদের সাহায্য না করে তাদের ওপর গুন্ডা লেলিয়ে দিয়েছে। তরুণ ছাত্ররা যা দেখাল তা হলো জাগ্রত বিবেক। তা এখনও আমাদের মধ্যে আছে, যা প্রবলভাবে গোটা দেশকে কাঁপিয়ে দিয়েছে। কোনো অস্ত্র নেই তাদের কাছে।
তিনি আরও বলেন, যারা লাঠি ও অস্ত্র নিয়ে মাঠে নেমেছে, তাদের কোনো ছাত্র সংগঠন বলব না। এদের জন্য একটাই শব্দ আছে তা হলো এরা গুন্ডা। লাঠি নিয়ে নিরীহ মানুষের ওপর হামলাকারীদের আমরা গুন্ডা ছাড়া আর কোনোভাবে চিহ্নিত করতে পারি না।
আগস্ট মাসে বঙ্গবন্ধুকে অপমান করা হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, এই মাসে গুন্ডারা লাঠি নিয়ে নিরীহ মানুষের ওপর হামলা করছে। এটা কি বঙ্গবন্ধুকে সম্মান জানানোর প্রক্রিয়া। বঙ্গবন্ধু জীবনের বিনিময়ে যে সভ্যতা আমাদের মধ্যে রেখে গেছেন, সেই সভ্যতার বিরুদ্ধে আজকে গুন্ডা লেলিয়ে দেয়া হয়েছে।
সংবিধানকে ছিঁড়ে ফেলে দেয়া হচ্ছে দাবি করে এই সংবিধান বিশেষজ্ঞ বলেন, সংবিধানের কোথায় লেখা আছে যে পুলিশের পাশে লাঠিয়াল থাকবে? পুলিশের পাশে থেকে লাঠিয়াল বাহিনী বেআইনিভাবে নিরীহ মানুষের ওপর আক্রমণ করবে, আর পুলিশ এদের সহযোগী হবে। এটা পুলিশকে অপমান করা এবং তাদের ধ্বংস করা।
তিনি আরও বলেন, পুলিশের আইজি কোনো সরকারের চাকর নয়, তিনি রাষ্ট্রের দায়িত্বে আছেন। সংবিধান অনুযায়ী আপনার দায়িত্ব হলো গুন্ডাদের পাশে পুলিশকে দাঁড়াতে দেবেন না। কেউ হুকুম করলেও তা করতে পারেন না।
পারলে আপনার চেয়ারের পাশে একজন গুন্ডাকে বসান। হয় আপনি নিজের দায়িত্বপালন করুন, না হয় পদত্যাগ করুন। আমি আপনাকে পদত্যাগ করতে বলতে চাই না। কারণ আপনার একটা সুনাম আছে। তাই বলব সুনাম নষ্ট করবেন না, দায়িত্বপালন করুন।
ড. জাফরউল্লাহ চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশ আরও উপস্থিত ছিলেন বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রধান সাবেক রাষ্ট্রপতি ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না প্রমুখ।