স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কের জের – ২০ > বাংলাদেশীরা মোরগের চেয়েও অধম
- মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন: আরএসএস শাসিত প্রভুদেশ ভারতের সাথে স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কের জেরে বাংলাদেশের জনগণের মোরগের মতো স্বাধীনতাও নেই। মোরগ স্বাধীনভাবে ডাকাডাকি করতে পারে, তার ডাকাডাকির স্বাধীনতা সংরক্ষণে আদালতে তার পক্ষে থাকে। বাংলাদেশে জনগণের তাও নেই। আরএসএস পছন্দকৃত সরকারের অধীনে বাংলাদেশের জনগণের মনে এমন ভীতি ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে যে, তারা নিজেদের মতামতও প্রকাশ করতে ভয় পান।
ফোনে কথাও বলতে চান না। তারা বলছেন, আমরা অনেক কিছুই দেখি, বুঝি। কিন্তু সবকিছু যে বলতে মানা! আমরা সবাই এক ভয়ের সংস্কৃতিতে বসবাস করছি। আমরা বুঝলেও, জানলেও বলতে পারি না। অনেক কিছু দেখলেও জানাতে পারি না। আমরা ভয় পাই, ভীষণ রকমের ভয় পাই। মোরগের স্বাধীনতা আছে বাংলাদেশীদের তাও নেই ।
একটি দৈনিকের একটি লেখা আমার মনোযোগ আকর্ষণ করেছে: বাংলাদেশে বেশ কিছু বিষয়ে বিশেষ বিশেষ ধরনের ক্ষমতার চর্চা আছে। ক্ষমতাহীনরা অনেক সময়ই ন্যায়বিচার পান না, যাঁরা পান সংখ্যায় তাঁরা একেবারেই কম। প্রায়ই দেখা যায়, ক্ষমতাবানেরা বিচারের আওতাধীন হন না। যতো অভিযোগ, অপরাধ, বিচার আর মামলা শুধু বিরোধীদলের জন্য ।
বিরোধী দল মানেই সন্ত্রাসী, জঙ্গী, লুটেরা। ১৫ সেপ্টেম্বর কুমারখালিতে এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের ফতুয়া: দেশের সম্পদ লুটপাট করার জন্যই বিএনপির প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘বিএনপির প্রতিষ্ঠা হয়েছিলো দেশের সম্পদ লুটপাট করার জন্য : হানিফদবিএনপি নেতাকর্মীদের কথাবার্তা, চিন্তা চেতনায় প্রমাণ হয়, বিএনপি নামক দলটি প্রতিষ্ঠা হয়েছিলো এই দেশের সম্পদ লুটপাট … .. জন্য।
হানিফের ঘোষণা: “আমরা শুধু পরিষ্কার ভাবে বলে যেতে চাই, আপনারা যে অপকর্ম করেছেন গণতন্ত্রের দোহাই দিয়ে তা মুছে যেতে পারবেন না। অপকর্ম করেছেন ক্ষমতায় থাকতে, অপকর্ম করেছেন ক্ষমতায় বাইরে থাকতে। এসব অপকর্মের বিচার চলছে, বিচার চলবে এবং এর জন্য আপনাদের অনেক নেতাকর্মীকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।” (দৈনিক নয়া দিগন্ত, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯)
একই ধরনের কথা শেখ হাসিনা, তার মন্ত্রীবাহিনী এবং তাদের সমর্থক স্বার্থশিকারীরা প্রায়ই বয়ান করেন। গত ১২ বছরে বাংলাদেশে কী পরিমাণ সম্পদ ভারতসহ বিশ্বের অন্যদেশে চলে গেছে, লুটপাট- দুর্নীতি কেমন অবাধে চলছে তা স্বাক্ষী দেশের জনগণ। ভোট খুন, ডাকাতিসহ হাজারো অপরাধ করেও আওয়ামীমহল শাস্তির উর্দ্ধে। এইসব কোন অপরাধই নয়। নিজেদের অপরাধ মুছে ফেলে অন্যদের অপরাধী বানায়, শাস্তি দেয়।
শেখ হাসিনাস তার দলের নেতাকর্মীদের সব মামলা রাতারাতি তুলে নেয়া হয় । আর বেগম জিয়াসহ তার দলের নেতাকর্মীদের ক্ষেত্রে উল্টো ব্যবস্থা নেন শেখ হাসিনা। তখন তিনি সাফাই গান: অন্যায়কারী যে-ই হোক তাকে শাস্তি পেতে হবে। তিনি ও তার দলের সন্দেহভাজন আসামীরা যে অন্যায়কারী নন, তা আদালত কর্তৃক প্রমাণিত হয় নি। আর শেখ হাসিনারা যে আইনকে পুলিশকে আদালতকে সঠিকভাবে চলতে দিচ্ছেন না, বরং সব সংস্থাই শেখ হাসিনার দখলে তা বলার ব্যাখ্যার কোন প্রয়োজন নেই। বাংলাদেশের মানুষ তো বটেই, সারা বিশ্ববাসী বিষয়টি জানেন অনুভব করেন।
বাংলাদেশে কেবল ক্ষমতাসীনরা অন্যায়কারীরা। এদের বিচার নেই, যতোক্ষণ পর্যন্ত না শেখ হাসিনার কৃপার ছায়ায় আছেন। তাই খুনের মামলার আসামী হাইকোর্টের বিচারপতি হন। ফাঁসির নির্দেশ পাওয়া আসামীরা মাফ পেয়ে যান। কারণ তারা স্বাধীন। আর স্বাধীন প্রভুু সম্প্রদায়ভুক্তরা । এই সম্প্রদায়ের হলে তো কথাই নেই তাদের সাতখুন, সব খুনই মাফ। তারাই এখন দেশের মালিক। হিন্দুদের ভয়ে আওয়ামী ক্যাডাররা পর্যন্ত সন্তস্ত্র। কালোবিড়াল মন্ত্রী টাকার বস্তাসহ ধরা পড়ার পর তাকে মন্ত্রীত্ব থেকে বাদ দেয়া হয়। কিন্তু প্রভুদেশের নির্দেশে ২৪ ঘন্টার মধ্যে তাকে আরো বেশি সুবিধা দিয়ে আবার মন্ত্রীত্বে ফিরিয়ে আনা হয়। কোন কাজ না করেই ওই হিন্দু কালো বিড়াল আমৃত্যু মন্ত্রীত্বের স্বাদ ভোগ করেছেন।
প্রভুসম্প্রদায়ের সাতখুন মাফের সর্বশেষ প্রমাণ মেলে আসামী নির্ধারণে হিন্দু অপরাধীর প্রতি আনুকুল্যতা। বরগুনার রিফাত হত্যার আসামীদের ভাষায় নির্দেশদাতা আসামী প্রভু সম্প্রদায়ের সুনাম দেবনাথ। তাকে এই হত্যা মামলায় আসামী করা হয় নি। কারণ সুনাম দেবনাম কেবল প্রভু সম্প্রদায়ের লোক নয়, তার বাবা সংসদ সদস্য। সুতরাং তাকে জেরা করে গ্রেফতার করে এমন ক্ষমতা পুলিশের কেন, কারোরই নেই। দেশ তো এখন ওরাই চালায়, ওদের পছন্দের সরকার চালায়। সরকার তো ওদের ওপর অনেকটা নির্ভরশীল। ওদের অপরাধের বিচার হলেই তো হিন্দু নির্যাতনের সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগ আসবে। দিল্লীতে নালিশ হবে। আরএসএস ক্ষেপে যাবে। এমনকি গণেশ উল্টে যাবে। সুতরাং ওদের সাতখুন মাফ।
প্রভুসম্প্রদায়ের সুনাম দেবনাথকে পুলিশ আসামীভুক্ত না করার কাহিনী প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনৈক ছাত্রী তার ক্ষোভ উগড়ে লিখেছেন: “শুধু সুনামের ক্ষেত্রেই নয়, আমরা দেখেছি ইয়াবা ব্যবসায়ী বদির ক্ষেত্রেও। অনেক সময়ই ক্ষমতাসীনেরা বিচারের আওতায় আসেন না। আর এই কারণেই ক্ষমতাহীনেরা ন্যায়বিচার পান না। এই ধরনের ক্ষমতা তোয়াজের সংস্কৃতি অন্য ক্ষমতাবানদেরও অপরাধে আগ্রহ ও উসকানি তৈরি করতে পারে। কারণ তাঁরা জেনে গেছেন, এই রাষ্ট্রে, এই সমাজে তাঁরা নানা ধরনের অপরাধ, খুন ও সন্ত্রাস করেও পার পেয়ে যাবেন।” (প্রথম আলো, ৯ সেপ্টেম্বর)
আর বাংলাদেশে যারা নির্যাতিত অপমানিত তারাই অপরাধী। ফ্রান্সে মোরগের স্বাধীনতা থাকলেও বাংলাদেশের সরকারী দলের বাইরে কারোরই স্বাধীনতা নেই। ভারতীয় ‘র’ শেখ হাসিনাকে দিয়ে ২০০৯ সন থেকেই বাংলাদেশীদের অধিকার হরণের মহড়া পরীক্ষামূকভাবে শুরু করে। আরএসএস পরিচালিত ‘র’ এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর নীল-নকশায় মোদি ক্ষমতাসীন হবার পর বাংলাদেশের অস্তিত্ববিরোধী ভারতীয় আগ্রাসন আরো জোরদার হয়েছে। এর সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে স্বাধীনতাপন্থী দেশপ্রেমিকদের নির্মূল-দলনের অভিযান। এই অভিযানের নাম দেয়া হয়েছে, আরএসএস চেলা মোদির ভাষায় ‘জঙ্গীবিরোধী লড়াই’। গণতন্ত্রের জন্য, সংবাদপত্রের স্বাধীনতার জন্য, বাংলাদেশের স্বার্থ ও অস্তিত্ব রক্ষার জন্য যারাই কথা বলেন কিংবা লেখেন তারাই জঙ্গী, এমনকি দেশদ্রোহী। তারা হন নির্যাতন-গুম-খুনের শিকার। এর দুটি লক্ষ্য রয়েছে: ভারতের শোষণ ও আগ্রাসনবিরোধী স্বাধীনতাপন্থীদের সরাসরি নির্মূল করা, কমপক্ষে আপাতত বোবা করা। চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো: বাংলাদেশকে ভারতের গোলাম দেশে পরিণত করে এক সময় গ্রাস করা।
এর বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ-প্রতিরোধ যেন না হয়, সেজন্য মানুষকে কোণঠাসা করে অত্যাচার করে তাদের প্রতিবাদী চেতনা ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার দেশরক্ষার জন্য রুখে দাঁড়াবার মানুষের যে সহজাত শক্তি ও সাহস তা মুছে ফেলার উদ্দেশ্যেই এমন নিপীড়ন, প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য খুন, গুম, হারিয়ে ফেলা, সম্পূর্ণ মিথ্যা ও সাজানো মামলায় গ্রেফতার, রিমান্ডের নামে নির্যাতন। ফলেই বাংলাদেশের মানুষ দিন দিন মূলত বোবা হয়ে যাচ্ছেন। তারা যেসব অন্যায় দেখেন, তার বিরোধিতা না করে চুপ থাকার আশ্রয় নিয়েছেন। তারা কতো ধরনের অপরাধ, অপমান, নির্যাতন শিকার তা তারাই জানেন। তারাই হজম করেন। হজম করতে করতে তারা বোধহীন অনুভূতিহীন প্রতিবাদহীন বোবায় পরিণত হয়েছেন।
মানুষের অধিকার ক্ষন্ন হলে মানুষ আদালতের শরণাপন্ন হন এই আশায় যে, আদালত তার পক্ষে দাঁড়াবে। তার ন্যায় অধিকার সুনিশ্চত করবে। রক্ষা করবে। আদালত সেই আশাও পূরণ করতে পারে না, সরকারী প্রভাবে।
আবার আদালতের বিচারক হয়তো ক্ষমতাসীন দলের সাবেক ক্যাডার, তা না হলে ক্ষমতাসীনদের ঘনিষ্ঠজন কিংবা তাদের প্রতি একান্তভাবেই অনুগত। এজন্যই বাংলাদেশে ন্যায়-বিচার ‘নীরবে নিভৃত কাঁদে’।
আদালত দুঃখজনকভাবে সরকারী নীতির প্রতিফলন ঘটায়। আদালতে নির্যাতনের বিভৎস কাহিনী বর্ণনা করেও খ্যাতিমান সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান বিচারকদের কাছে ন্যায় বিচার পান নি অভিযোগ করেছেন। তিনি তার ওপর নির্যাতনের প্রমাণ হিসেবে আদালতে তার রক্তাক্ত আন্ডারওয়্যার দেখালেন। বিচারক তাকিয়ে থাকলেন। মন্তব্যহীন থাকলেন। সরকারের অপকর্মের বিপক্ষে লিখে তাকে কারাদ- ভুগতে হয়েছে । তিনি এখন দেশছাড়া।
বোবা হয়ে গেছেন ফরহাদ মাজহার । লেখালেখির এক পর্যায়ে এক সকালে হাঁটতে বের হয়ে তিনি উধাও হয়ে যান। তার স্বজনরা জানেন না তিনি কোথায়, কেন ঘরে ফিরেন নি। সরকারের সুবিধাপ্রাপ্তরা বলে দিলেন – এটা নাটক। মাস দুয়েক পরে তাকে রাস্তায় ফেলে রাখা হয়। ঘরে ফিরে তিনি আর কলম ধরেন নি। কোন সংবাদমাধ্যমে কিংবা অন্য কারো কাছে তার হারিয়ে যাবার কাহিনীও বলেন নি। অনেকেরই বিশ্বাস তিনি বোবা হয়ে থাকার শর্তেই জীবন নামক সম্পদ নিয়ে অজানা সন্ত্রাসী আগ্রাসী শক্তির হায়েনাদের হাত থেকে ছাড়া পেয়েছেন। তিনি এখন মুক্তবন্দী, বোবা জীবন্মৃত।
বিশ্বখ্যাত সাংবাদিক শফিক রেহমান। সরকারের মৃদু সমালোচক। তার বিরুদ্ধে কোন মামলা নেই। তাকে ঘর থেকে ধরে নেয়া হয়। তাকে গুম কর যায় নি, তবে চেষ্টা হয়েছে। উধাও করতে না পেরে দেরিতে নেয়া হয় গোয়েন্দা অফিসে । সেখান থেকে কারাগারে। বেশ পরে তিনি মুক্তি পেয়েছেন। কিন্তু একেবারেই নির্বাক। লেখালেখির নামগন্ধও নেই। জনসমক্ষেও দেখা যায় না। পত্রপত্রিকায়ও তার বা তাদের নাম দেখি না। তিনিও বোবা, জীবন্মৃত। দেশে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে সরকার যেন বলতে চাচ্ছে: প্রাণে বাঁচতে চাও, তবে বোবা হয়ে যাও । আর কথা বলতে চাও তো কবরে যাও। কবরেই তোমাদের ঠিকানা, বাংলাদেশ নয়।
স্বদেশত্যাগী মাহমুদ রহমানের মতো শত শত সাংবাদিক আজ দেশের বাইরে আশ্রয় নিয়েছেন। সাগর-রুনিসহ অজানা সংখ্যক সাংবাদিক খুন হয়েছেন। আর হারিয়ে গেছেন ইলিয়াস আলী, নবী চৌধুরি, গোলাম আজমের ছেলে বিগ্রেডিয়ার আব্দুলাহিল আজমী, ফাঁসির রসিতে লটকানো মীর কাশেম আলীর ছেলে ব্যারিস্টার আহমেদ বিন আরমান। এরা সরাসরি রাজনীতি করেন না, তবে এদের পিতারা জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। রাজনীতি করেন না, তবে ভারতের পছন্দকৃত বর্তমান সরকারের দেশবিরোধী গণবিরোধী কর্মকান্ডের সমালোক এমন বহুপ্রাণ হারিয়ে গেছেন চিরতরে। আরো কতো হারিয়ে যাবেন। এদের রোদন, এদের স্বজনদের আহাজারি কেউ শোনে না। এদের জন্য কেউ নেই।
বলা হয়: যার কেউ নেই তার জন্য আদালত রয়েছে। আদালত হলো নিপীড়িতদের শেষ ভরসা। আদালতও তো সেখানে নীরব। আদালত ক্ষমতাসীনদের দখলে। আদালত ক্ষমতাসীনদের আশা-আকাঙ্খার প্রতিধ্বনি করে। আমাদের হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কতো রুলিং জারী করেন, অথচ দেশের মানুষের সব অধিকার হরণজনিত দুর্বিসহ জীবনের ইতি টেনে তাদের জন্মগত অধিকার নিশ্চিত করার ব্যাপারে আদালত একেবারেই নীরব, যেনো দেশে কিছুই হচ্ছে না।
অথচ ফ্রান্সের আদালত একটি মোরগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে। আল্লা প্রদত্ত মোরগের ডাকার স্বাধীনতা ও অধিকার সুরক্ষায় আদালত বাদির মামলার রায় বাদির বিপক্ষেই দিয়েছেন। বাদিকে অর্থদন্ডে দন্তিত করেছেন। মোরগকে স্বাধীনভাবে ডাকার অধিকার নিশ্চিত করেছেন। মোরগের ডাকার স্বাধীনতাকে কীভাবে আদালত রক্ষা করেছে, সেই কাহিনী আমার মতো অনেক বাংলাদেশীকেই অবাক করেছে। বিচারক কতো বিচক্ষণ, কতো নিরপেক্ষ, কতো তথ্যানুসন্ধ্যানী তা ওই মোরগ-সম্পৃক্ত মামলার রায় । সঠিক বিচার ও রায় নিশ্চিত করার জন্য তথ্য সংগ্রহে আদালতের কৌশলের খবর পড়ে তা আন্দাজ করা যায়।
ভাগ্যিস মোরগটি বাংলাদেশে জন্মায় নি। তা’হলে তো প্রতিবেশীর প্রতিবাদের প্রথম দিনই তার জান কবজ হয়ে যেতো। আরো ভাগ্যের কথা ফ্রান্সে আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামী ক্যাডারও নেই।
প্রতিবাদী প্রতিবেশীর এটা ছিল দুর্ভাগ্য। তেমন কেউ থাকলেও মোরগের ডাকের প্রতিবাদী প্রতিবেশি আওয়ামী ক্যাডার ভাড়া করতেন। মোরগের মালিক পালাবার সুযোগও পেতেন না, ঘরে মোরগ পোষা তো দূরের কথা।
বাংলাদেশীরা মোরগের চেয়ে অধম। মোরগের ডাকাডাকির অধিকার আছে। মোরগ পালিত হয়েও স্বভাবগত-সহজাত প্রবৃত্তি প্রদর্শনের অধিকার আছে । কিন্তু বাংলাদেশীদের সেই অধিকারও নেই। তাই তাদের মতপ্রকাশের প্রতিবাদের স্বাধীনতা নেই। রাস্তায় দাঁড়ালেই মামলা। পুলিশ আর ক্যাডারদের হামলা। কারণ তারা গণতন্ত্র চান। দুর্নীতি-ডাকাতির অবসান চান। দেশ আর জীবনের সম্পদের, মান-ইজ্জতের নিরাপত্তা চন। কারণ দেশপ্রেমিক। তাই তাদের কোন অধিকার নেই স্বাধীনতা নেই।*
রানার নিউজ’, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯