শুদ্ধি অভিযান: ভুয়া না ভয়ঙ্কর >>মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন
শেখ হাসিনার স্ব-নির্বাচিত সরকারের সহশিল্পীদের কেউ কেউ নতুন চমক নিয়ে মাঠে নেমেছেন। এই চমকের নাম তথাকথিত ‘শুদ্ধি অভিযান’, যা বাস্তব অর্থে ভুয়া, লোক-দেখানো, না কী ভয়ঙ্কর কিছুর ইঙ্গিত। একাধারে দশ বছর অবাধ চুরি-ডাকাতি, খুনাখুনি, শেয়ারবাজার-ব্যাংক লুট, ঘুষ, কমিশন, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজির মতো অপরাধ করার কিংবা দেশের অজানা পরিমাণ সম্পদ বিদেশে পাচারের সুযোগ দিয়ে এখন শেখ হাসিনা এবং তার কোন কোন সহশিল্পীরা দুর্নীতিমুক্ত পবিত্র (?) ধোয়া তুলসী পাতা সাজতে চান। আর দু’চারজন চোর-ডাকাত ধরার প্রক্রিয়ার নাম দিয়েছেন ‘শুদ্ধি অভিযান’।
সহশিল্পী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘চলমান শুদ্ধি অভিযান লোক দেখানো নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে রয়েছেন। অনেক এমপি, নেতা ও প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারী নজরদারিতে রয়েছেন। অপরাধ করে কেউ পার পাবে না। সময়মতো তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ (দৈনিক নয়া দিগন্ত, ২৮ অক্টোবর, ২০১৯)
আরেক সহশিল্পী মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতিকে কখনো প্রশ্রয় দেননি এবং ভবিষ্যতেও দেবেন না (এমন কথা সত্যি হলে অর্থাৎ প্রশ্রয় না দিলে দেশে অজানা সংখ্যক চোর-ডাকাত-লুটেররা কীভাবে স্বদেশে-বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়েছে?)। সে জন্য চলমান শুদ্ধি অভিযানের ব্যাপারে তিনি অত্যন্ত কঠোর। অনেকে আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে, দলীয় পদ-পদবি ব্যবহার করে নানা অপকর্ম করছেন। এতে দলের ইমেজ নষ্ট হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে। এক্ষত্রে যত প্রভাবশালীই হোকনা কেন, কেউ পার পাবে না। আর অভিযুক্তরা আতঙ্কিত হবেন এটাই স্বাভাবিক।’
আওয়ামী সহশিল্পীদের ‘শুদ্ধি অভিযান’ বাংলাদেশের জন্য কোন নতুন দুর্যোগের বার্তা কী না তা নিয়ে পর্যবেক্ষকমহল আতঙ্কিত। কারণ ‘শুদ্ধি অভিযান’এর যে বিভীষিকাময় বিপর্যয়কর উদাহরণ ও বৈশিষ্ট্য আমাদের সামনে রয়েছে, যা এক কথায় ভয়ঙ্কর যুগের কথাই মনে করিয়ে দেয় ।
পৃথিবীতে কেবল চীনেই এই ধরনের শুদ্ধি অভিযান চালানো হয় । চীনা কমিউনিস্ট পার্টি প্রধান মাও সে-তুং ১৯৬৬ সালে তার প্রতিপক্ষকে নির্মূল করার অভিযানের নাম দিয়েছিলেন ‘গ্রেট প্রৌলিটরিয়ান কালচারাল রেভ্যুলেশন’। বাংলায় একে ‘মহান সর্বহারার সাংস্কৃতিক বিপ্লব’ না বলে বলা হয় ‘শুদ্ধি অভিযান’। এটা ছিল নেতৃত্ব আর ব্যক্তিত্বের সংঘাত। ক্ষমতার লড়াই।
শুদ্ধি অভিযান শুরু হবার প্রারম্ভে এক নির্দেশে বলা হয়, “পুঁজিবাদী সড়কে হাঁটছেন ক্ষমতায় রয়েছেন এমন ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো এবং তাদেরকে নির্মূল করাই আমাদের লক্ষ্য।” (দ্য গার্ডিয়ান, ১০ মে, ২০১৬)
মাও’এর কর্মসুচি এবং কর্তৃত্ববিরোধী কমরেড/সহযোদ্ধাদেরকে প্রতিবিল্পবী কিংবা সংশোধনবাদী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এটা ছিল মূলত কমিউনিস্ট পার্টির ভিতরে নেতৃত্বের দ্বন্ধের পরিণতি, সোজা কথায় মাওবিরোধীদের নির্মূল করার জন্যই শুরু এই অভিযান। ‘শুদ্ধি অভিযান’ সম্পর্কে চীন বিষয়ক বেলজীয় বিশেষজ্ঞ পেয়েরে রেকম্যান্স মন্তব্য ছিল: “কল্পিত পাতানো গণআন্দোলনের ধু¤্রজালের আড়ালে এটা ছিল ক্ষমতার লড়াই।”
নেতৃত্ব ও ব্যক্তিত্বের সংঘাত থেকে সৃষ্ট বিরোধকে কেন্দ্র করে মাও সে-তুং চীনা কমিউনিস্ট পার্টি, কল-কারখানা, সরকারী প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ দেশের সর্বত্র থাকা তার প্রতিপক্ষকে সংশোধনবাদী, পুঁজিবাদী বুর্জোয়াদের চর-ধারক-বাহক হিসেবে ধিকৃত করে এককালের কমরেড/সহযোদ্ধা এবং তাদের সন্দেহভাজন সমর্থক কিংবা অনুসারীদের বিরুদ্ধে এই অভিযান চালান ।
কমিউনিস্ট পার্টির পলিটব্যুরো এবং কেন্দ্রীয় কমিটির অর্ধেক সচিব পদচ্যুত হন।
সারা চীনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রত্যেক শ্রেণীতে রেডগার্ডের শাখা খোলা হয় । ১৯ বছরের কম এমন কিশোরা তাদের বাহুতে লালফিতা লাগিয়ে শহরের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতো। রেডগার্ডকে সনাতন ধারণা, রীতিনীতি, অভ্যাস ও সংস্কৃতির সমর্থক, অনুসারীদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয়া হয়। আর সনাতন পোশাক পরিহিত, এমনকি আগের মতো চুল কেটেছে এমন মানুষকে বুর্জোয়া ধ্যান-ধারণার অনুসারী হিসেবে অভিযুক্ত করে তাদের ওপর ঝাপিয়ে পড়তো। একই অভিযোগের শিকার কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবীদের প্রকাশ্যে অপমানিত, পিটানো যে কারণে অনেকেই মৃত্যুবরণ করেন। রেডগার্ডের কোন দুষ্কর্মে হস্তক্ষেপ না করার জন্য মাও সে-তুং স্বয়ং নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই কারণে ১৯৬৬ সনের আগস্ট-সেপ্টেম্বরে কেবল পিকিং (বেজিং)’এ ১,৮০০ মানুষ প্রাণ হারান।
শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে পরিচালিত লাল-সন্ত্রাস প্রতিবাদে চীনের সবশ্রেণীর মানুষ ক্ষুব্দ হন। সারা দেশের শহরাঞ্চলের বাসিন্দারা মূলত দুইভাগে ভাগ হয়ে যান। এমনকি রেডগার্ডের ভিতর অন্তর্দ্বন্ধে তাদের উপদলকেন্দ্রিক রক্তাক্ত লড়াই হয়। শহুরে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবার পর বিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করা হয়। গীর্জা, মন্দির, লাইব্রেরী, দোকানপাট, ব্যক্তিগত ঘরবাড়ি, তছনছ কিংবা ভেঙ্গে ফেলা হয়। মাও লাখ শহুরে যুবকের মখজ-ধোলাই করে মাওবাদী ধ্যান-ধারণা গ্রহণে বাধ্য করার জন্য গ্রামীণ এলাকায় তথাকথিত ‘পুনঃশিক্ষণ’ কেন্দ্র নামক টর্চারসেলে জোরপূর্বক পাঠিয়ে দেন। তিনি সেনাবাহিনীকে শান্তি স্থাপনের নামে পুরো দেশকে সামরিক একনায়কতন্ত্রে পরিণত করেন। ঐতিহাসিকরা এমন অবস্থাকে গৃহযুদ্ধ হিসেবে অভিহিত করেছেন। ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত চীনে শুদ্ধি অভিযান অব্যাহত থাকে।
শুদ্ধি অভিযানের দুই বছরের মধ্যে চীনের শিল্পখাতের উৎপাদন ১২ শতাংশ কমে যায়। বহু কলকারখানা বন্ধ হয়ে যায়। চীনে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেয়। এর অন্যান্য ক্ষতিকর প্রতিফলের বিবরণ দেয়া এই নিবন্ধের লক্ষশ্য নয়। সংক্ষেপে বলা যায়: এর ফলে চীনের একটি প্রজন্ম সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যায়। মাও সে-তুং দলীয় তথা রাষ্ট্রীয় শক্তিকে ব্যবহার করে ১০ বছর ধরে চলা এই অভিযানে কমপক্ষে ১৫ লাখ বিরুদ্ধবাদীদেরকে নির্মূল করেন। আবার কোন কোন সূত্রমতে দুইকোটি বিরুদ্ধবাদীকে হত্যা করা হয়। প্রতিপক্ষকে নির্মূল করে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্যই মাও সে-তুং শুদ্ধি অভিযান চালান।
আজ শেখ হাসিনা নিজের তার বংশধরদের শাসন অব্যাহত রাখার জন্যই দুর্নীতিবিরোধী শুদ্ধি অভিযানে নেমেছেন। কিন্তু দুর্নীতির মূলশক্তি কে? কেন দুর্নীতি সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। তথ্যাভিজ্ঞমহলের মতে এই দুর্নীতি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকেই ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। সর্বত্র দলীয় ক্যাডাররা নিজেদেরকে বঙ্গবন্ধুর লড়াকু সৈনিক হিসেবে দাবি করেই দুর্নীতিসহ নানা অপরাধ করেও শাস্তিহীন গ্রেফতারহীন থাকছেন। তারা নিজেদেরকে আইনের উর্দ্ধে মনে করেন?। দায়বদ্ধহীন প্রশাসনের সর্বত্র ছোট-বড় সবাই গণহারে বিভিন্নভাবে বিভিন্ন কায়দায় অবৈধ সম্পদ বানাচ্ছেন। ছোটরা দেখেন তাদের বস কীভাবে চুরি করেন, টাকা চুরির ভাগ মন্ত্রীকে দেন। এই ধরনের বস্ তো তার অধঃস্তনদের কাছে জিম্মি হয়ে যান। ফলে অধঃস্তনরা যার যার পর্যায়ে চুরি করাকে যোগ্যতা ও অধিকার বলে মনে করেন।
সরকারী কর্মচারীদের বেতন দ্বিগুণ করার নামে ঘুষ দেয়া হয়েছে, যেন তারা অনুগত এবং কৃতজ্ঞ থাকে। পরোক্ষভাবে তাদেরকে বলে দেয়া হচ্ছে: তোমাদের যতো টাকা দরকার সুযোগ-সুবিধা দরকার লুটে নাও, শুধু আমার অবৈধ সরকারের দেশবিরোধী কাজে চুপ থাক। দশ বছর ধরে এই লুট এই দুর্নীতি চালিয়ে এখন দুর্নীতিবাজদের ধরার নামে মতলবী ‘শুদ্ধি অভিযান’এর জনগণের সাথে প্রতারণা করা হচ্ছে।
‘অপরাধজগতের সঙ্গে যারা জড়িত, সে যে-ই হোক, তাকে ধরেছি’ শেখ হাসিনার এমন দাবি সঠিক হলে চোর-ডাকাত-লুটেরা-খুনিদের তালিকা তৈরি করার দরকার নেই। তালিকার ভাওতাবাজি কেন? তার দলের কিংবা অনুসারীদের কে অবৈধ উপায়ে সম্পদের পাহাড় গড়েন নি – এমন আওয়ামী অনুসারীদের তালিকা তৈরি হোক। অতদূর না গিয়ে কেবল মন্ত্রী-এমপিদের মধ্যে কারা কারা কোন অপরাধ করেন নি তা বলা হোক। দেশবাসী দেখুক এদের মধ্যে কেউ আসলেই সৎ কী না? ২০১৪ সালের ভোটারবিহীন নির্বাচনের আগে দৈনিক ‘প্রথম আলো’ আওয়ামী এমপিদের আমললামা প্রকাশ করা শুরু করলে আওয়ামী সম্পাদক মরহুম আশ্রাফুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন: ‘সম্মানিত’ ব্যক্তিদেরকে অপমানিত করা হচ্ছে। ‘প্রথম আলো’ ওই সিরিজ বন্ধ করেন। সালমান এফ রহমান, মোহাম্মদ নাসিম, মাহবুবউল আলম হানিফ, ইনু, মেনন, দিলীপ বড়–য়া, শাহাজাহান খানদের থেকে শুরু করে একেবারে গ্রাম পর্যায়ে হাজার হাজার নয় লাখ লাখ ‘সম্মানিত’ ব্যক্তিদের খবর আপনারা না বললেও দেশবাসী জানেন । এরা কতোখানি অপরাধমুক্ত? শেখ হাসিনা নিজের ঘর থেকে শুদ্ধি অভিযান শুরু করলে তার মন্ত্রী, এমপি, আমলা, পুলিশরা কীভাবে তার পাশে থাকে? এদের সবাই কী তুলসীপাতা? ‘আপন-পর’ নির্বিশেষে ধরলে এদেরকে ধরা হচ্ছে না কেন?
‘শুদ্ধি অভিযান’কে আমি সব সময়ই উদ্দেশ্য-প্রনোদিত প্রতিপক্ষের ওপর চূড়ান্ত আঘাত হানার দুরভিসন্ধি বলে মনে করি। শেখ হাসিনা এখন নিজেই তা স্বীকার করছেন। শুদ্ধি অভিযান কোনদিকে যাবে ২৯ অক্টোবর মঙ্গলবার গণভবনে অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সম্মেলনে শেখ হাসিনা নিজেই তার ইঙ্গিত দিয়েছেন। শুদ্ধি অভিযানকে বিএনপি ‘অভিযোগ আইওয়াশ’ হিসেবে অভিহিত করেছে, এমন মন্তব্যের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আইওয়াশ করতে যাব কিসের জন্য? আমি তো আমার আপন-পর কোনো কিছু দেখিনি। অপরাধজগতের সঙ্গে যারা জড়িত, সে যে-ই হোক, তাকে ধরেছি। আইওয়াশের ব্যবসাটা বিএনপি ভালো জানে।’ তিনি আরও বলেন, ‘অপেক্ষা করেন, আইওয়াশ নাকি, দেখা যাবে।’
হাসিনার এমন মন্তব্যই দেশপ্রেমিক শক্তিকে উপড়ে ফেলার ইঙ্গিত দেয়। দেখিয়ে দেয় এই শুদ্ধি অভিযানের তীর কোন দিকে যাবে। এই অভিযান সরাসরি স্বাধীনতাকামী মানুষের বিরুদ্ধে যারা বাংলাদেশে ভারতীয় কর্তৃত্বে বিশ্বাসী নন, দখলদারিত্ব তো দূরের কথা। বিএনপি’কে শেষ করতে না পারলে ‘হাসিনা রাজবংশ’ প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। সম্ভব নয় বাংলাদেশে ভারতীয় কর্তৃত্ব ও দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে প্রভুদেশ ভারতই উদ্দেশ্যমূলকভাবে ভুয়া শুদ্ধি অভিযানের পিছনের শক্তি। বাংলাদেশকে অকার্যকর প্রতিবন্দী দেউলিয়া রাষ্ট্রে পরিণতি করার জঘন্য নীল-নকশা বাস্তবায়নে ২০০৯ সাল থেকে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’শেখ হাসিনার মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালানো হচ্ছে। বিডিআর সদর দফতরে ৫৮জন সেনাকর্মকর্তাকে ঘায়েল করার মাধ্যমে বাংলাদেশে ভারত-প্রযোজিত শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়। এরপর আসে শাপলাচত্বরের গণহত্যা। দেশপ্রেমিক শক্তিকে নির্র্র্মূল করার জন্য বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের দেশব্যাপী প্রকাশ্য কিংবা গুপ্তহত্যা, গুম, উদাও করা, ক্রসফারায়, জঙ্গী গুম হওয়াদের কোন ভবনে আটক রেখে জঙ্গী আস্তানায় হামলার নামে দেশপ্রেমিক নিরাপরাধ মানুষ হত্যা, এমনকি মিথ্যা মামলা দিয়ে বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের বছরের পর বছর আটকে রাখা ইত্যাদি হলো যুগপৎভাবে শেখ হাসিনার এবং ভারতের অভিন্ন শত্রুগেদরকে নির্মূল করার অভিযান। ভারতের উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশ দখল করা আর শেখ হাসিনার লক্ষ্য হলো অন্তত পতাকা-সর্বস্ব হলেও বাংলাদেশ নামক এই ভূখন্ডে হাসিনার বংশানুক্রমিক শাসন অব্যাহত রাখা।
এই ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার শক্তি হলো ভারত। তার আদর্শ হলো উত্তর কোরিয়ার কীম একনায়কতান্ত্রিক রাজবংশ/শাসকবংশ। শেখ হাসিনার রেডগার্ড হলো ছাত্রলীগ-যুবলীগ- স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীসহ অজানা সংখ্যক বাহিনী এবং অনুপ্রবেশকারী ভারতীয় পেশাদার খুনি। পিপল্স লিবারেশন আর্মি হলো পুলিশ-র্যাব, এমনকি বিজিবি। কমিউনিস্ট পার্টির নাম হলো আওয়ামী লীগ। চেয়ারম্যান শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনাবিরোধী বিএনপি-জামায়াত হলে মাও’এর ভাষায় সংশোধনবাদী-শ্রেণীশত্রু। বেগম জিয়া আর তারেক রহমান হলেন শিয়াং কাইশেক। তাদের বাংলাদেশে থাকার অধিকার নেই। তাদেরকে হয়তো কারাগারে কিংবা বিদেশে থাকতে হবে এবং সেখানেই মরতে হবে। তাদের সমর্থক দেশপ্রেমিকদের ওপর চূড়ান্ত আঘাত হানা হবে ‘শুদ্ধি অভিযান’এর আবরণে।**
রচনাকাল: ২৯ অক্টোবর, ২০১৯