আন্দোলন: নৈরাজ্য ও জবাব >>মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদেরদের বিপক্ষে যায় এমন ন্যায্য কথা লেখা কিংবা বলাই নৈরাজ্য। রাস্তায় মিছিল এমনকি রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করাও নৈরাজ্য। অর্থাৎ ক্ষমতা দখলদার বাহিনীর বাইরে যারা আছেন তাদের সবাই নৈরাজ্যবাদী। এবং এদের কোন গণতান্ত্রিক কিংবা মানবিক অধিকার নেই। এরা শুধু ক্ষমতা দখলদারদের কথা শুনবে। কথা বলতে পারবে না। বোবাসম হয়ে থাকতে হবে।
২৯ নভেম্বর (২০১৯) ওবায়দুল কাদের বলেছেন আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টি হলে সমুচিত জবাব দেয়া হবে। ওয়াকিবহালমহলের মতে সাধারণ মানুষ, এমনকি কাদেররাও, জানেন আন্দোলনের নামে বিএনপিকে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে হয় না। প্রভুদেশের চররা তো চারদিকে কিলবিল করছে। আর আওয়ামী ক্যাডাররা তো আছেই । এইসব চর-ক্যাডারদেরকে নৈরাজ্য সৃষ্টির জন্য পালন করা হয়। এরাই বিএনপি’র মিছিলে ঢুকে পড়ে। এরা দু’চারটা গাড়িতে হামলা চালায় । ভাঙ্চুর করে। পুলিশকে ঢিল মারে। পুলিশ হামলাকারীদের তাৎক্ষণিক গ্রেফতার করে না। কারণ হামলাকারীরা তো কাদেরদেরই ক্যাডার কিংবা ভারতীয় চর। ভুলবশত কিংবা নির্দেশানুযায়ী কাউকে ধরা হলে তাদেরকে পরে ছেড়ে দেয়া হয়। এমনকি কারাগারে ঢুকানোর পরেও তাদেরকে বের করে আনা হয়। এটা সম্পূর্ণ পূর্ব-নির্ধারিত পাতানো নাটক।
সুতরাং আন্দোলনের নামে বিএনপি’কে নৈরাজ্য করতে হবে না। এইজন্য কাদেররাই যথেষ্ঠ। আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টি, এমনকি মানুষ খুন করার অভিজ্ঞতা-ইতিহাস-ঐতিহ্য কাদেরদেরই রয়েছে। বাংলাদেশের জনগণ কাদেরদের নৈরাজ্যের এবং খুনাখুনির স্বাক্ষী। ক্ষমতা হারিয়ে ‘বিরোধীদলে গেলেও আর কখনো হরতাল করবো না’ এমন ওয়াদা কিংবা ‘হরতাল দেশের জন্য ক্ষতিকর’ এমন ওয়াজ করেও শেখ হাসিনা-কাদেররা মাসের পর মাস হরতাল করেছেন। দোকানে-গাড়িতে আগুন লাগিয়েছেন। রাস্তার পাশের কিংবা সড়কদ্বীপের গাছ উপড়ে ফেলেছেন। সড়ক অবরোধ করে মানুষকে পণবন্দী করেছেন। লগি-বৈঠা তান্ডব দেখিয়েছেন। ভিন্নমতাবলম্বী নিরাপরাধ যুবককে লগি-বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছেন। ওয়ায়েদুল কাদের স্বয়ং বঙ্গভবনের বিদ্যুত-গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার হুমকি দিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মতো অপরাধ করেছেন।
এখন নৈরাজ্যের হোতা সেই কাদেরই শান্তিপূর্ণ মিছিল কিংবা আন্দোলনের মধ্যে নৈরাজ্য আবিষ্কার করেন। নৈরাজ্য হলে সমুচিত জবাব দেয়ার হুমকি দেন। মানুষের লজ্জা কোথায় গেল? এদের কতো মুখ? আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী খুনিরা কীভাবে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে নৈরাজ্য হিসেবে প্রচার করে? শান্তিপূর্ণ মিছিলেও অংশ নেয় নি এমন হাজার হাজার বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। এই ধরনের মিথ্যা আর সাজানো মামলাই তো নৈরাজ্যের প্রমাণ।
বিচারক নামক দলীয় ক্যাডারদেরকে ব্যবহার করে রিমান্ড নামক টর্চার সেলে পাঠিয়ে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের ওপর অমানবিক নির্যাতন করা হয়। ভোট চুরি করে মানুষকে ভোট দেয়ার অধিকার হতে বঞ্চিত করে বিনাভোটে ক্ষমতা দখল করে কোন লজ্জায় এরা নিজেদেরকে নির্বাচিত ও জয়প্রিয় বলে প্রচার করে তা ভাবতে অবাক লাগে। বিএনপি আন্দোলনের কথা বললেই কাদেররা এর মধ্যে তাদের জনবিচ্ছিন্ন ভোটবিহীন কথিত ‘জনপ্রিয়’ প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে চক্রান্ত আবিষ্কার করে। বিএনপি’র সর্বশেষ মিছিলের পর ‘নৈরাজ্য সৃষ্টির’ অভিযোগে ৫০০ জনের বিরুদ্ধে আওয়ামী দলীয় পুলিশ বাহিনী মামলা করেছেন। মিছিল করা, মানববন্ধন করা, পোস্টার টাঙানো সবই এখন নৈরাজ্য।
ওই মিছিল ছিল বেগম জিয়ার মুক্তির দাবিতে। ওবায়দুল কাদের বলেছেন, (সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি’র চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে) আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য হলে সমুচিত জবাব দেয়া হবে। তিনি বিএনপিকে ছবক দিয়েছেন: বেগম জিয়াকে আইনী লড়াইয়ের মাধ্যমে মুক্ত করতে হবে যেহেতু এতে সরকার বাধা দিবে না।
কাদেরের দু’টি আশ্বাসের কোনটাই বিশ্বাসযোগ্য নয়: ১. আইনি লড়াই করে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করুন এবং ২. এতে সরকারের কোন হস্তপে থাকবে না।
প্রথমত: আইনী লড়াইয়ের কোন সুযোগ বাংলাদেশে আছে কী? বিচারক কারা ? দলীয় ক্যাডার বিচারক হওয়ায় তারা তাদের দলীয় প্রভাবের ওপর উঠে আইন ও ন্যায়-নিষ্ঠতার আলোকে কোন রায় দিয়েছেন কিংবা দিতে পেরেছেন তেমন একটি নজিরও নেই। সব রায়ই দলীয় নির্দেশ ও ধ্যাণ-ধারণার আলোকে দেয়া হয়। কাদেররা তাদের সুবিধা মতো আইন তৈরি করেছেন বিচারপতি বানিয়েছেন যেন যেকোন রায় সরকারের পক্ষে থাকে। রায়ের নামে সরকারের চাওয়া-পাওয়াই বিচারকরা পড়ে শুনান। তাই বিচারের নামে বিচার নিছক প্রহসন নাটকে পরিণত হয়েছে। বিচার বিভাগের ওপর বিএনপি’র তো দূরের কথা সাধারণ মানুষের কোন আস্থা নেই। বিচারকরা একদিকে দলীয় ক্যাডার। অন্যদিকে বেতনের নামে সুযোগ-সুবিধার নামে ঘুষের প্রলোভন। সর্বোপরি, সরকারের ইচ্ছানুযায়ী উঠাবসা না করলে সিনহাদের মতো দুর্দশা আর অপমানের শিকার হবার খড়গ। সুতরাং বিচারকদের পক্ষে কাদেরদের অবৈধ সরকারের সিদ্ধান্তের বাইরে যাবার কোন সুযোগি নেই। বিচারকরা সামান্যতম স্বাধীন থাকলে প্রথম দিনেই বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে আনা সব মামলা খারিজ হয়ে যেতে এই যুক্তিতে একই ধরনের মামলা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও ছিল। সেই মামলাগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক মামলার আজুহাতে বাতিল করায় বেগম জিয়াসহ বিএনপি’র নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কোন মামলাই চলমান থাকতে পারে না। বিচারক তথা বিচার বিভাগ স্বাধীন নয় বলেই সেই ধরনের রায় কিংবা মন্তব্য বেগম জিয়ার মামলার ব্যাপারে প্রয়োগ করা যাচ্ছে না। পরাধীন বিচারক কিংবা বিচারব্যবস্থার কোন রায়ই গ্রহণযোগ্য বলে আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন না।
দ্বিতীয়ত: শেখ হাসিনার সরাসরি হস্তক্ষেপ আছে বলেই তার এবং তার দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সবগুলো মামলা তুলে নেয়া হয়েছে। আর বেগম জিয়াসহ বিএনপি’র নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে থাকা মামলা কেবল সচল রাখাই হয় নি, নতুন নতুন মামলা সাজিয়ে তাদেরকে কারারুদ্ধ ও কোণঠাসা করা হচ্ছে। সুতরাং আইনী লড়াইয়ে সরকার হস্তক্ষেপ করবে না, কাদেরের এমন আশ্বাসের কোন বিশ্বাস নেই। হস্তক্ষেপ আছে বলেই তো বেগম জিয়াসহ বিরোধীদলীয় অসংখ্য নেতাকর্মী কারাগারে আছেন। তাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার সংখ্যা ৩৫ লাখ। বর্বরতা কাকে বলে?
বেগম জিয়া ও বিএনপি দ্বিমুখী চক্রান্তের শিকার। আগ্রাসী ভারত এবং তার বাংলাদেশী সহযোগী শেখ হাসিনার অভিন্ন টার্গেট হলেন বেগম জিয়া। বেগম জিয়া জাতীয়তাবাদী শক্তি তথা বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার অভিভাবক ও প্রেরণাদাত্রী হবার কারণে আগ্রাসী ভারত তাকে কোনভাবে মুক্ত করতে চাইবে না। ভারতের ভয় হলো বেগম মুক্ত থাকলে বাংলাদেশকে ভারতীয় গোলামীর জিঞ্জিরে আটক রাখা যাবে না ।
আর শেখ হাসিনার ভয় হলো বেগম জিয়া মুক্ত থাকলে হাসিনার বংশানুক্রমিক তথাকথিত গণতন্ত্রের আড়ালে স্বৈরতান্ত্রিক রাজতন্ত্রের স্বপ্ন ধুলির সাথে মিশে যাবে। বেগম জিয়ার ব্যাপারে ভারত ও শেখ হাসিনার স্বার্থ একবিন্দুতে মিলিত হওয়ায় বেগম জিয়া উভয়ের অভিন্ন দুষমণ। উভয়েরই দৃঢ় সিদ্ধান্ত: বেগম জিয়াকে আমৃত্যু কারাগারে রাখতে হবে। তবেই জাতীয়তাবাদী শক্তি বিএনপি নেতৃত্বহীন হয়ে ভাগ হতে হতে এক সময় শেষ হয়ে যাবে। কেবল তখনই বাংলাদেশে ভারতের প্রকাশ্যে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা এবং পতাকাসর্বস্ব বাংলাদেশে শেখ হাসিনার বংশানুক্রমিক রাজতান্ত্রিক শাসন প্রতিরোধমুক্ত থাকবে। তাই তথাকথিত আইনী লড়াইয়ে বেগম জিয়ার মুক্তি কোন দিনই হবে না।
আসলে কাদেররা চান বিএনপি মাঠে নামুক। মাঠে নামলেই তাদের পালিত সন্ত্রাসীরা মিছিলে ঝাপিয়ে পড়বে। তারাই ভাঙ্চুর করবে। আর দায়ী করা হবে বিএনপি’র নিরাপরাধ নেতাকর্মীদের । নৈরাজ্য সৃষ্টির অপরাধে তাদেরকে গ্রেফতার করা হবে।
অথচ দেশের জনগণ এবং সারা দুনিয়ার ওয়াকিবহাল মহল জানেন কাদেরদের ‘জনপ্রিয়’ প্রধানমন্ত্রী মিথ্যাচারিতা আর নৈরাজ্যের ওপর ভর করে দেশবাসীকে ভয় দেখিয়ে বিনাভোটে ক্ষমতা দখল করেছে। শেখ হাসিনা এতো ‘জনপ্রিয়’ হলে জনগণকে অবাধে ভোট দেয়ার সুযোগ দেয়া হচ্ছে না কেন? এর জবাব জনগণ জানেন। এদের সমর্থন নেই কেবল শক্তি প্রয়োগ করে ভীতি প্রদর্শন করে অপহরণ, খুন, জখম আর নির্যাতন ও গ্রেফতার করে এরা ভারতের প্রত্যক্ষ মদদে বাংলাদেশ শাসন করছে।
সবচেয়ে ভীতিকর হলো কাদেরদেরকে বিশ্বাস করা যায় না। তারা সত্যকে মিথ্যা আর মিথ্যাকে সত্য বানান। নিজেরা চুরি-চামারি, ঘুষ, ডাকাতি, টাকা পাচার, মানুষ হত্যাসহ জঘন্য অপরাধ করে সেগুলোকে কখনোই শিকার করেন না। নিজেরা চুরি করে খুন করে এসে বলে বেড়ায় মানুষ সুখে আছে।
অন্যদিকে তারা তাদের কথা রাখেন না। ক্ষমতার জন্য তারা দ্রুত তাদের রং বদলে ফেলেন। যখন যেটা বললে এবং করলে তাদের সুবিধা হয়, তারা ন্যায়-অন্যায় না দেখে তা-ই করেন। আজ যা বলেন আগামীকাল ঠিক তার উল্টা মেরুতে চলে যান। তারা বলে বেড়ান তারা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। কিন্তু বাস্তবে তারা গণতন্ত্রকে কবর দিয়েছেন। তাদের দেশ শাসন প্রক্রিয়া এবং স্বৈরতান্ত্রিক একনায়কতন্ত্রের মধ্যে কোন পার্থক্য দেখা যায় না।
একনায়কতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় নির্বাহী বিভাগ, আইন বিভাগ এবং বিচার বিভাগ সবকিছ্ইু এক ও অভিন্ন ব্যক্তির অধীনে রাখা হয়। সবকিছু নির্বাহী শক্তি তথা একনায়ক দ্বারা পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়। ভুয়া গণতন্ত্রের লেবাসধারী শেখ হাসিনাই যে ভারতের পরামর্শ মোতাবেক বাংলাদেশের সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেন তা এখন সর্র্র্বজন স্বীকৃত । অনেকেই শেখ হাসিনা এবং কর্তৃত্ববাদী স্বৈরাচারী একনায়কদের মধ্যে কোন পার্থক্য খুঁজে পান না । দুনিয়ার কুখ্যাত স্বৈরাচারী একনায়ক হিটলারের শাসনের দিকে তাকালেই শেখ হাসিনার অবস্থান পরিষ্কারভাবে বুঝা যাবে তাকে কী হিসেবে অভিহিত করা যায়।
হিটলার অনির্বাচিত, তবে শাসনতান্ত্রিকভাবে মনোনীত গণতান্ত্রিক জার্মানীর চ্যাঞ্চেলর । তার সমসাময়িককালের অনেক জার্মান মনে করেন, মনোনীত হলেও তিনি সরাসরি ভোটে বিজয়ী হতেন। কিন্তু তিনি জার্মানীর গণতন্ত্রকে কবর দেন। গণতান্ত্রিক জার্মানকে একনায়কতান্ত্রিক নির্যাতন শিবিরে পরিণত করেন। ঘোষণা না দিয়েই তিনি অবদমনের মাধ্যমে বহুদলীয় জার্মানীকে একদলের একব্যক্তির শাসনে বন্দী করেন। হিটলার তার পূর্বসুরী সরকারসমূহের সমালোচনা করে জনপ্রিয়তা অর্জন করলেও ক্ষমতায় এসে নিজের সমালোচকদেরকে নির্মমভাবে নির্মূল করেন। দলীয় নেতাকর্মীদেরকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সবক্ষেত্রে নিয়োগ দেন। তাদের সমন্বয়ে প্যারামিলিশিয়া বাহিনী গঠন করেন। এদেরকে সন্দেহভাজন ভিন্নমতালম্বী ব্যক্তিকে মারধর, এমনকি খুন করার অধিকার দেয়া হয়। প্রতিটি ঘর এমনকি প্রত্যেক ব্যক্তির ওপর নজরদারির ব্যবস্থা করেন। নিন্দুক সমালোচক রাজনীতিক, সাংবাদিক, লেখকদেরকে নির্যাতন শিবিরে পাঠাতেন। হিটলার তার নিজদলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ভবিষ্যু প্রতিদ্বন্ধী খুঁজে বেড়ান এবং তাদেরকে নির্মূল করেন। হিটলার জনগণের মৌলিক অধিকার, ব্যক্তি-স্বাধীনতা, বাক-স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, সভা-সমাবেশ করার শাসনতান্ত্রিক অধিকার রহিত করেন। জার্মানদের ব্যক্তিগত জীবনেও হস্তক্ষেপ করেন। তাদের চিঠিপত্র খুলে দেখা, টেলিফোন সংলাপে আড়িপাতা, বিনা ওয়ারেন্টে ঘরবাড়ি তল্লাশী ছিল অতি সাধারণ ব্যাপার। নাজী বাহিনীসহ অন্যান্য বাহিনীকে যেকোন লোককে গ্রেফতার এবং কারারুদ্ধ করার অধিকার দেয়া হয়। নাজীবাহিনী ও গুপ্ত পুলিশ ঘরে ঘরে গিয়ে মানুষকে তুলে নিয়ে যেতো। খালি গুদামঘর, কলকারখানাসহ পাকা ঘরাবাড়ি বন্দী শিবিরে পরিণত করা হয়। বিরোধীদেরকে বিনা বিচারে হত্যা করা হয়। জার্মানী থেকে বিরোধীদল, ট্রেডইউনিয়ন প্রভৃতি উৎখাত হয়ে যায়। এককথায় জার্মানীতে গণতন্ত্রের কবর হয়।
(দেখুন: হলোকাস্ট এনসাইকোপেডিয়া > https://encyclopedia.ushmm.org/content/en/article/nazi-terror-begins)
হিটলারের জঘন্যতম দুষ্কর্মসমূহের অতি সংক্ষিপ্ত তথ্য এখানে বর্ণিত হলো। শেখ হাসিনা হিটলারের সমপঙক্তীয় কী না, পাঠকরাই সেই সিদ্ধান্ত নিবেন। *
* রচনাকাল: ৩ ডিসেম্বর, ২০১৯
সৌজন্যে: রানার নিউজ, নিউইয়র্ক