নিউইয়র্কে সৈয়দ আশরাফ স্মরণে সভা ও দোয়া মাহফিল : দল ও দেশের জন্য তাঁর অবদান অবিস্মরণীয়
সাখাওয়াত হোসেন সেলিম: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং বাংলাদেশ সরকারের সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে নিউইয়র্কে। সর্বজনীন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী নাগরিক নেতৃবৃন্দ’র ব্যানারে স্থানীয় সময় ৪ জানুয়ারী রোববার সন্ধ্যায় ব্রঙ্কসের আল আকসা পার্টি হলে এ স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
একই অনুষ্ঠানে সদ্য প্রয়াত আওয়ামীলীগ দলীয় সাবেক সাংসদ ফজিলাতুন নেসা বাপ্পি এবং ভাষা সৈনিক মরহুম এ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদের সদ্য প্রয়াত স্ত্রী সৈয়দা রহিমা বেগমের আতœার মাগফিরাত কামনায় দোয়া করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার ফরাসত আলী।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মুক্তিযোদ্ধা তোফায়েল চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রহিম বাদশা ও যুবলীগ নেতা রেজা আবদুল্লাহ স্বপনের যৌথ পরিচালনায় শোক সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন দেওয়ান, জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকা ইনকের সভাপতি বদরুল খান, সাপ্তাহিক ঠিকানার প্রধান সম্পাদক ফজলুর রহমান, নারী নেত্রী অধ্যাপিকা হুসনে আরা, কমিউনিটি এক্টিভিস্ট মোহাম্মদ এন মজুমদার, ওবায়েদ উল্লাহ মামুন, নিউইয়র্ক স্টেট আওয়ামীলীদের সাধারণ সম্পাদক শাহীন আজমল, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য আশফাক মাসুক, আওয়ামী লীগ নেতা সফিক উদ্দিন, কফিল চৌধুরী, আবদুল মুহিত, হুমায়ূন চৌধুরী, শেখ মকলু মিয়া, শামীম আরা বেবি, মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমান, কমিউনিটি এক্টিভিস্ট সিরাজ উদ্দিন আহমেদ সোহাগ, বাছির খান, খবির উদ্দিন, এস আর লিংকন, পল্লব সরকার, মাকসুদা আহমেদ, শারমিন তানিয়া, যুবলীগ নেতা জামাল হুসেন, নূরুল ইসলাম, শ্যামল কান্তি চন্দ, মোঃ মনিরুল আলম দিপু, জহিরুল ইসলাম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, জাতীয় চারনেতা সহ মুক্তিযুদ্ধের সকল শহিদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে দো’য়া মুনাজাত পরিচালনা করেন শ্রমিকলীগ নেতা মাওলানা বজলুর রহমান। প্রবাসী কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ সহ যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও সহযোগি সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী-সমর্থক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তবে ইঞ্জিনিয়ার ফরাসত আলী বলেন, প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ট সহচর সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ছিলেন একজন ফিলোসোপার। দল ও দেশের জন্য তার ছিল অবিস্মরণীয় অবদান। বিশেষ করে ওয়ান ইলাভেনে নেত্রীকে মুক্ত করে আনার পেছনে তার ছিলো মুখ্য ভূমিকা। সে সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি লন্ডন থেকে বাংলাদেশে গিয়ে প্রয়াত জিল্লুর রহমানের সাথে দলের হাল ধরেন। নেত্রীকে মুক্ত করে আনেন। ওয়ান ইলাভেন থেকে দেশ ও দল আজকের এ অবস্থানে আসার পেছনে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ছিল অনন্য ভূমিকা।
সভায় বক্তারা বলেন, সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে বাঙালী জাতি একজন সৎ, নির্ভীক, আদর্শবান রাজনীতিককে হারিয়েছে। তার শূন্যতা কখনো পূরণ হবার নয়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যোগ্য সাধারণ সম্পাদক হিসেবে যেমন তিনি দলকে পরিচালিত করেছেন তেমনী মন্ত্রী হিসেবেও যোগ্যতা ও সততার সাথে দায়িত্ব পালন করে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন।
উল্লেখ্য, বিগত ২০১৮ সালের ৩ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার থাইল্যান্ডে ব্যাংককের বামারুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্নাইলাহি রাজিউন)। ৬৮ বছর বয়সী সৈয়দ আশরাফ ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ওই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি একাদশ সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-১ আসনে নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের প্রবাসী সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের সন্তান সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।