ভোলায় শ্বশুর বাড়িতে কলেজ ছাত্রীর মৃত্যু, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি
এম শাহরিয়ার জিলন, ভোলা : ভোলার দৌলতখান মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী লাইজু আক্তারের শ্বশুর বাড়িতে নির্যাতন করে মৃত্যুর অভিযোগে দ্বিতীয় দিনের মত বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দৌলতখান সরকারি আবু আব্দুল্লাহ কলেজের সামনে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের আয়োজনে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে দৌলতখান সচেতন ছাত্র সমাজও অংশগ্রহন করে।
কর্মসূচিতে প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক স্বতস্ফুর্তভাবে অংশ নেয়। মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে দৌলতখান বাজার প্রদক্ষিণ করে। বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা লাইজু আক্তারের স্বামী তানজিলের ফাঁসি দাবি করে স্লোগান দিতে থাকে।
এসময় বক্তব্য রাখেন দৌলতখান সরকারি আবু আব্দুল্লাহ কলেজের অধ্যক্ষ শ ম ফারুক, কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী শোভন, জাহিদুল ইসলাম, সানজিদুল হাসান, মো. মিরাজ ও আবদুল করিম প্রমূখ।
এসময় বক্তারা বলেন, দৌলতখান মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির মেধাবী শিক্ষার্থী লাইজু আক্তারকে গত বৃহষ্পতিবার নির্যাতন করে হত্যা করে তার স্বামী তানজিল ও শ^শুর বাড়ির লোকজন। তারা তাকে হত্য করে লাশ একটি রুমে কম্বল পেচিয়ে রেখে সবাই পালিয়ে যায়। আমরা এ হত্যা কান্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সেই সাথে লাইজু আক্তারের হত্যার আজ পাঁচ দিন পেরিয়ে গেলেও হত্যার সাথে জড়িত কোনো আসামী গ্রেফতার না হওয়ায় আমরা এ বিচার নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছি। আমরা দ্রুত লাইজুর আক্তারের মাদকাসক্ত স্বামী তানজিলসহ মামলার সকল আসামীকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। তা না হলে আমাদের এ প্রতিবাদ কর্মসূচি চালিয়ে যাবো। দ্রুত সময়ের মধ্যে মামলার সকল আসামীদেও গ্রেফতার করা না হলে পরবর্তীতে আরো কঠোর আন্দোলনের হুসিয়ারি দেন বক্তারা।
প্রসঙ্গতঃ- দৌলতখান উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. মোসারেফ হোসেন ওরফে মসু সিকদারের মেয়ে ও দৌলতখান মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীর সাথে গত দুই বছর আগে প্রেম করে বিয়ে করে ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের তরিকুল ইসলামের ছেলে তানজিলের সাথে। বিয়ের কিছু দিন না যেতেই তানজিল মাদকাসক্ত হয়ে বিভিন্ন সময়ে লাইজুকে মারধর করতো।
এ নিয়ে লাইজুর পরিবার গত ছয়মাস আগে লাইজুকে তানজিলের কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসে। এর কয়েক মাস পরই তানজিল মোবইল ফোনে আবারও সম্পর্ক করে লাইজুকে পরিবারের অমতে বিয়ে করে নিয়ে যায়। সর্বশেষ গত বৃহষ্পতিবার দিবাগত রাতে পুলিশ তানজিলের বাড়ি থেকে লাইজুর লাশ উদ্ধার করে।
এঘটনায় শুক্রবার রাতে লাইজুর বড় ভাই ইসমাইল বাদি হয়ে তানজিলকে প্রধান আসামী করে মোট সাত জনের বিরুদ্ধে ভোলা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলার পাঁচ দিন অতিবাহিত হলেও কোনো আসামী গ্রেফতার হয়নি। পুলিশ বলছে আসামীরা ঘটনার পর থেকেই সবাই পলাতক থাকায় তাদের গ্রেফতার করা যায়নি। তবে তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনায়েত হোসেন।