দেশ কী হারিয়ে যাবে – ১
মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন:
চর ও দালালদের দেশদ্রোহিতা, নেতৃত্বের লোভ ও নতজানু পররাষ্ট্রনীতি, জনগণের মধ্যে অনৈক্য, সরকারের সাথে জনগণের দূরত্ব, সর্বোপরি আগ্রাসী শক্তির চক্রান্ত ও দৃশ্যমান-গোপন শক্তি প্রয়োগে মানব ইতিহাসে দুনিয়ার বহুদেশ বহুজাতি হারিয়ে গেছে। দূরবর্তী দেশসমূহের কথা বাদ দিলেও উপমহাদেশে এ ধরনের নজির ছড়াছড়ি। আমাদের প্রতিবেশী ভারত নামক উগ্র ও সন্ত্রাসী রাষ্ট্র উপমহাদেশের বহু জাতিকে বাহ্যত প্রলোভন, সুদিনের আশ্বাস,আর বাস্তবে গোপনে Ñ এমনকি প্রকাশ্যে Ñ শক্তি প্রয়োগে করে তাদের দেশকে দখল করে। (এই প্রসঙ্গে ইনশাল্লা ভিন্ন নিবন্ধ লেখার চেষ্টা করবো)
চলমান পরিস্থিতিতে জনমনে আশঙ্কাজাত প্রশ্ন: বাংলাদেশকেও কী হারিয়ে যাচ্ছে? হারিয়ে যাবে? আমাদের চোখের সামনেই কী বাংলাদেশ ভারতের অংশ হয়ে যাবে? এই ধরনের অসংখ্য আতঙ্কজনক প্রশ্ন-মন্তব্য, বিতর্ক চলছে। এমনকি ক্ষমতাসীন দলের একটি বড় অংশ মনে করেন: দেশকে যে অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে তা মোটেই সুখকর নয়। ভারতের খপ্পর থেকে বেরিয়ে আসার সব পথঘাট মোটামুটি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ক্ষমতার জন্য শেখ হাসিনার অন্ধলোভ, ভারতের হাতে বাংলাদেশের সবকিছু অকাতরে তুলে দেয়া, অন্যদিকে সরকারে দেশবিরোধী অপকর্মের প্রতিবাদকারীদেরকে ভারতের ইশারায় নির্মমভাবে দমন তথা নিমূর্ল করায় সরকার ও জনগণের মধ্যে বিদ্যমান বিভাজন বাংলাদেশকে ভারতভুক্ত করার বিভীষিকাময় ইঙ্গিত দেয়।
অথচ শাসকদল প্রকাশ্যে-গোপনে অসমচুক্তিসহ বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক স্বার্থ, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব-বিরোধী হাজারো ধরনের অপকর্ম করা সত্বেও ভারতকে ‘দুর্দিনের বন্ধ’ু, ‘পরীক্ষিত বন্ধু’ বলে সাক্ষ্য দেয়। কিন্ত বাস্তবটা কী তা সবার জানা। ভারতের বন্ধুত্ব কতো বড় ভাওতা ও নির্মম তেমন অসংখ্য নজির থাকা সত্বেও শেখ সরকার সেইগুলো তোয়াক্কা করে না। ভারতকে আর যা-ই হোক কমপক্ষে বন্ধু বলা যায় না। বিশ্বাস করা যায় না।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের পর লুটপাটের কথা বাদ দিলেও ৪৯ বছরে (১৯৭১-২০২০) বাংলাদেশের স্বার্থ ও কল্যাণের পক্ষে ভারত এমন একটি কাজও করে নি, যা বন্ধুত্বের নমুনা কিংবা উদাহরণ হিসেবে গণ্য করা যায়। বরং বন্ধুত্বের আড়ালে ভারতের প্রতিটি পদক্ষেপই ছিল আমাদের আর্থ-ভূকৌশলগত স্বার্থ, অস্তি¡ত্ব, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ববিরোধী। বন্ধুবেশী এই দুষমণ বাংলাদেশকে গ্রাস করার দুরভিসন্ধি নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। ভারতে এমন বহু লোক রয়েছে, যারা প্রকাশ্যে বাংলাদেশকে ভারতের অংশ হিসেবে দাবি করে। তারা বলে, ১৯৪৭ সালের আগে বাংলাদেশ ভারতের অংশই ছিল। তাই দুইবার স্বাধীন হবার পরেও বাংলাদেশকে নাকি ভারতের সাথে মিশে যেতে হবে। কেউ কেউ ইতোমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছে ২০ বছর পার নাকি বাংলাদেশ বলতে কিছুই থাকবে না। এইতো সেইদিন আরএসএস নেতা বলেছেন ২০২৫ সালের মধ্যে পাকিস্তান ভারতের হয়ে যাবে। আর একই নেতা বলেছেন বাংলাদেশ (শেখ হাসিনা) অখন্ড ভারত প্রতিষ্ঠায় ভারতের সাথে থাকার জন্য ভারতকে আশ্বাস দিয়েছে।
ভারত তার আগ্রাসী উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জনই শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ ও দুষ্প্রাপ্য সুযোগ হিসেবে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য করেছিল। এই সাহায্যের মৌখিক দাবি ছিল মানবিক, আর বাস্তব ও মূল গোপন উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশকে রাজনৈতিক, সামরিক, অর্থনৈতিকভাবে পর্য্যদুস্ত করে চূড়ান্ত পর্যায়ে দখল করা। অখন্ড ভারত প্রতিষ্ঠার আগ্রাসী স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য ভারত বাংলাদেশের সাথে দ্বিমুখী জঘন্য আগ্রাসীর মতো আচরণ করছে।
অথচ বাংলাদেশের বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেই বলেছেন ভারতের সাথে ভারতের সম্পর্ক ঠিক ‘স্বামী-স্ত্রী’র সম্পর্কের মতো। ভারত সরকারও বাংলাদেশ-ভারত সম্পকর্কে ‘সর্বোচ্চ পর্যায়’, ‘সোনালী যুগ’ ইত্যাদি বিশেষণে অভিহিত করে। ভারতীয়রাই বলে বেড়ায় ভারত-নির্ভর বর্তমান শেখ হাসিনা সরকার ‘ভারতের পছন্দসই’ এবং ‘ভারতই শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় এনেছে এবং ক্ষমতায় রেখেছে’। সুতরাং ভারত যা চায় শেখ হাসিনা তা-ই ভারতকে তার নিজস্ব সম্পতির মতো দিয়ে দেন। একবারও ভাবেন না এদেশ তার নিজস্ব সম্পপ্তি নয় যে তিনি ক্ষমতায় থাকার জন্য ভারতকে তা দিয়ে দিবেন। ভারত তার আচরণে বুঝিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশ তার স্বাধীনতা হারিয়ে ফেলেছে।
একটি দেশ কতোখানি স্বাধীন তা দেশটির সীমান্ত পরিস্থিতির দিকে তাকালেই বুঝা যায়। ভারতের আচরণে বুঝা যায় দেশটি আমাদের সীমান্তকে স্বীকারই করছে না। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত ৪,০৯৬,৭ কিলোমিটার লম্বা। বাংলাদেশ ভূখন্ডের অপরপাড়ে ভারতের চারটি রাজ্য: পশ্চিম বাংলা (২,২১৬.৭ কিলোমিটিার), আসাম (২৬৩ কিলোমিটিার), মেঘালয় (৪৪৩ কিলোমিটিার), ত্রিপুরা (৮৫৬ কিলোমিটার) এবং (মিজোরাম ৩১৮ বর্গকিলোমিটার)।
উভয় দেশের সীমান্তে কোন প্রাকৃতিক বাধা নেই Ñ প্রায় পুরোটাই সমতল ভূমি, নদীবিধৌত। আমাদের কোন সীমান্তই ভারতের হামলামুক্ত নয়। ভারতীয় হানাদাররা প্রতিদিন সীমান্তে কোন না কোনভাবে আমাদেরকে বিব্রত করে। মানুষ মারে। মাদকদ্রব্য অস্ত্র চোর-চর ঢুকিয়ে দেয়। কিন্তু শেখ হাসিনা সরকারের কোন ‘রা’ নেই। যেন কিছুই হচ্ছে না।
অথচ বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত বিশ্বের সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ হবার কথা । কারণ বাংলাদেশ ভারতের জন্য কোনভাবেই সামরিক দিক থেকেও বিপদজনক নয়, অর্থনৈতিকভাবেই নয়। তথাপি এই সীমান্ত বাংলাদেশীদের জন্য মরণফাঁদ। বিশ্বে এমন কোন আন্তর্জাতিক সীমান্ত নেই যা এমন বিপজ্জনক। এমনকি কাশ্মীর কিংবা ফিলিস্তীন সীমান্তও নয়। সেখানে মুক্তিযোদ্ধারা যথাক্রমে ভারত ও ইসরাইলের হামলার শিকার হন। তারা শহীদ হন। কিন্তু আমাদের সীমান্ত ভারতীয় হায়েনারা কোন কারণ ছাড়াই বাংলাদেশীদেরকে হত্যা করে। এমন হত্যাকান্ড আন্তর্জাতিক রীতি বিরুদ্ধ। মানবতাবিরোধী। প্রতি বছরই সীমান্তবাহিনীর প্রধানদের বৈঠক বসে। মন্ত্রী পর্যায়ে সচিব পর্যায়ে বৈঠক হয়। প্রত্যেক বৈঠকে ভারত আশ্বাস দেয় সীমান্তে হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা হবে। এমন ওয়াদা কখানোই কার্যকর করা হয় না। দিন দিন এমন খুন বেড়েই চলছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের জাতীয় সংসদে গত ১০ বছরে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফ হায়েনাদের গুলিতে নিহতদের বছরভিত্তিক ভয়ঙ্কর পরিসংখ্যান তুলে ধরেন: ২০০৯ সালে ৬৬ জন, ২০১০ সালে ৫৫ জন, ২০১১ ও ২০১২ সালে ২৪ জন করে ৪৮ জন, ২০১৩ সালে ১৮ জন, ২০১৪ সালে ২৪ জন, ২০১৫ সালে ৩৮ জন, ২০১৬ সালে ২৫ জন, ২০১৭ সালে ১৭ জন এবং ২০১৮ সালে মাত্র ৩ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। সরকার মনে হয় ভারতের নির্দেশে ২০১৮ সনে সীমান্তে খুনের ঘটনা লুকানোর চেষ্টা করছে।
বেসরকারি হিসেবে এই সংখ্যা আরো বেশি। মানবাধিকার সংগঠন ‘আইন ও সালিশ কেন্দ্র’(আসক)-এর হিসেবে ২০১৯ সালে সীমান্তে ৪৩ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে গুলিতে ৩৭ জন এবং নির্যাতনে ছয় জন। আহত হয়েছেন ৪৮ জন। অপহৃত হয়েছেন ৩৪ জন। আর ২০১৭ সালে ২৪ জন। ২০১৮ সালে নিহত হয়েছেন ১৪ জন। তা’হলে দেখুন স্বামী-স্ত্রী’র সম্পর্কের ঠেলায় ৪০ জন ৩ জন হয়ে যায়। এই দুটি সূত্রের পরিসংখ্যান দুই ধরনের । অর্থাৎ ‘ভারতের পছন্দসই’ শেখ হাসিনা সরকার ভারতকে আসামীর কাঠগড়ায় তুলতে চায় না। তা’ না হলে বহু আগেই জাতিসংঘ সনদ কিংবা জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন সনদ লঙ্ঘনের দায়ে ভারতকে বিচারের কাঠগড়ায় তোলার উদ্যোগ নেয়া হতো।
মানুষ হত্যা ছাড়াও বাংলাদেশের ভিতরে ঢুকে বিএসএফ হায়েনারা গরু-ছাগল, নদীর মাছ, মাঠের ফসল নিয়ে যায়। ভারতের পেশাদার খুনিদের বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দেয়। ঢুকিয়ে দেয় ফেনসিডিলসহ মাদকদ্রব্য, অস্ত্র গোলাবারুদ, নিষিদ্ধ পণ্য। এইসবের বিরুদ্ধেও শেখ হাসিনা সরকার নীরব। আর সীমান্ত বাহিনী যাদেরকে গার্ড তথা চৌকিদারের পর্যায়ে নামিয়ে আনা হয়েছে তার প্রধান ভারতে গিয়ে সার্টিফিকেট দিয়ে এসেছেন ‘এনআরসি’ ভারতের নিজস্ব ব্যাপার। এই সার্টিফিকেট তার দেয়ার কথা নয়। অথচ তার যে দায়িত্ব ভারতের সীমান্ত হামলা সীমান্তে খুন, কিংবা সীমান্তের ভিতরে ঢুকে পড়া রোধে তিনি কোন ভূমিকা রাখছেন বলে মনে হয় না। তিনি তার দায়িত্ব পালন না করে ভারতকে সার্টিফিকেট দিয়ে আসেন। অথচ করা হয়েছে সম্পূর্ণ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। অমিত শাহ তাদের লোকসভায় বাংলাদেশের নাম উল্লেখ করে বলেছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু বিরোধী নির্যাতন বন্ধ হচ্ছে না বলেই এনআরসি কিংবা সিএএ করা হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে সীমান্তে জাতিসংঘ পর্যবেক্ষক ও কিংবা শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করাই হবে একমাত্র বিকল্প। দেশ-বিদেশ থেকে এমন দাবি জোরদার হওয়া উচিত। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা, এমনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইট্স ওয়াচসহ মানবাধিকার সংস্থা, বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে ভারতকে অভিযুক্ত করে চিঠি, স্মারকলিপি পাঠানো জরুরী। ঢাকার বিভিন্ন দূতাবাসে প্রকৃত নাম-ঠিকানা না লিখে ভারতের অপকর্ম বন্ধের আহ্বান জানিয়ে চিঠি লিখুন। ফোন করুন। দেয়ালে দেয়ালে গাড়িতে পোস্টার লাগান, প্রচারপত্র বিলি করুন। দেশের ভিতরে গোপনে হলেও ভারতের বিরুদ্ধে প্রচারনা চালান। ভারতী টিভি চ্যানেল, মালপত্র বর্জন করার আহ্বান জানান। বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড নাম পরিবর্তন করে ‘বাংলাদেশ বর্ডার আর্মি’ নাম রাখার দাবি তুলুন। বর্ডার গার্ড নামটি অপমানজনক। এই নাম বদলাতে হবে। আপনারা ব্যাপক সাড়া পাবেন। বিদেশে আছেন এমন অনেক ভাই-বোন ইতোমধ্যেই এই প্রক্রিয়ায় নেমেছেন। আপনারাও এগিয়ে আসুন। আমরা সবাই বলি Ñ আমরা সীমান্তে জাতিসংঘ বাহিনী চাই। ভারতের বিচার চাই। আমরা স্বাধীন দেশ রক্ষা করতে চাই।
যেহেতু ভারত-বান্ধব শেখ হাসিনা সরকার আমাদের জানমালা রক্ষায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ। তার মূললক্ষ্য দেশপ্রেমিক শক্তিকে প্রতিহত ও নির্মূল করা। জনগণের জীবন রক্ষার কথা তিনি ভুলে গেছেন। সরকার জনগণের প্রতি কোন ধরনের দায়-দায়িত্ব পালন করছে না। সীমান্ত হামলা বন্ধে কোন ভূমিকা রাখছে না। দেশের জন্য শেখ হাসিনার দরদ শুধু মুখে অন্তরে নয়। কারণ মুক্তিযুদ্ধে তার কোন ভূমিকাই ছিল না। তিনি বেশ নিরাপদে পিতার বাসাতেই ছিলেন যখন গ্রামের পর গ্রাম পুড়ে যায়, বঙ্গবন্ধুর ভাষায় ত্রিশলাখ মানুষ শহীদ হয়। অথচ শেখ হাসিনাদের ওপর চিল-কাউয়াও উড়ে নি। একই দেশে এমন বিপরীত দৃশ্য এই দেশের সাধারণ মানুষকে দেখতে হয়েছে।
তাই জনগণকে আবার এগিয়ে আসতে হবে। মনে রাখতে সাধারণ মানুষের ছেলেরাই ১৯৭১ সনে প্রত্যক্ষ লড়াইয়ে ঝাপিয়ে পড়েন। জীবন দেন। আওয়ামী লীগ নেতারা ভারতে নিরাপদ আশ্রয় পেয়ে তাদের ছেলেমেয়েদেরকে প্রশিক্ষণ শিবিরে না পাঠিয়ে ভারতীয় স্কুল কলেজে ভর্তি করান। দেশ কখন স্বাধীন হবে, তা নিয়ে তারা দ্বিধাদ্বন্ধে ছিলেন। তারা সন্তানের ভবিষ্যত নষ্ট করতে চান নি। আমরা মতো বয়সীরা এই সব কাহিনী দেখেছেন। ওই সময়ে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের কিংবা পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যদের মধ্যে অনেকেই এখনো বেঁচে আছেন। আপনারাই বলুন আমার তথ্যে কোন অতি রঞ্জন আছে কী না। এই দৃশ্য আমার নিজের চোখের দেখা। ভারতে গিয়েছেন এমন প্রায় সবাই একই দৃশ্য দেখেছেন।
অনেক কারণে সত্য কথা চাপা পড়ে যাচ্ছে। দেশের কথা বলার পরিবেশ নেই। অনেকেই হয়তো বলার সুযোগ পাচ্ছেন না। সুযোগ পেলেও সুবিধা পাওয়া যাবে না, এই ভয়ে চুপ রয়েছেন। এতো মুক্তিযোদ্ধা বেঁচে থাকতে দেশরক্ষার আওয়াজ নেই। কেউ জীবন রক্ষার জন্য, কেউ ক্ষমতায় থাকার জন্য কিংবা পাবার জন্য, কেউ ভারতের নেক-নজরে থাকার জন্য, কেউ ঠিকাদারি পাবার জন্য, ব্যাংক ঋণ নিয়ে শোধ না করার জন্য, অবৈধ ব্যবসা চালানোর জন্য, চুপচাপ সম্পদ বানানোর জন্য, দেশের সম্পদ বিদেশে পাচারের জন্য নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন। দেশের কী হলো, দেশের কী হবে তা নিয়ে কারো কোন মাথাব্যথা নেই। এমন অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তা’ না হলে ভারতের আগ্রাসী খপ্পর থেকে দেশকে উদ্ধার করা যাবে না। আমাদের চোখের সামনেই আমাদের তৈরি করা দেশ হারিয়ে যাবে।*
রচনাকাল: ১৯ জানুয়ারী, ২০১৯
সৌজন্যে: রানার নিউজ