দেশ কী হারিয়ে যাবে — ২
মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন:
ঢাকা সিটি নির্বাচনে কথিত বিজয়ীরা ফুলের তোড়া নিয়ে স্বনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করেন। মোট ভোটারের মাত্র ১৬ শতাংশের ভোট পাওয়া (যার অর্ধেকের বেশিই ছিল জালভোট) বিজয়দেরকে বাংলাদেশের সবচেয়ে ও সচেতন সুশিক্ষিত ঢাকাবাসীর প্রতিনিধি হিসেবে গ্রহণ করলেন তা পর্যবেক্ষকদেরকে হতবাক করেছে। তাদের মতে এটা গণতন্ত্রের ভবিষ্যত এবং দেশের অস্তিত্বের জন্য অশনি সংকেত বিশেষ। শেখ হাসিনা যেন বুঝাতে চেয়েছেন: প্রহসনের নির্বাচনে কেউ অংশ নিক বা না নিক, জনগণ ভোট দিক বা না দিক তার দলই বিজয়ী হয়েছে এবং তাদেরকেই তিনি স্বাগত জানাচ্ছেন। তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন জনগণের ভোট দেয়ার দরকার নেই। কারণ ভোটের ফলাফল তিনি আগেই নির্ধারণ করে রেখেছেন।
আর ভোটাররা জানেন তাদের ভোট কেন্দ্রে যাওয়া, ভোট দেয়া একেবারেই অর্থহীন। ভোটাররাও বুঝেন নির্বাচনে তাদের মতামতের প্রতিফলন ঘটে না। জনগণ যে প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে চান, যে প্রার্থীকে গণহারে ভোট দেন ফলাফল ওই প্রার্থীর বিপরীতে অর্থাৎ সরকারী দলের প্রার্থীকে বিজয়ী দেখানো হবে । ২০০৮ সালের নির্বাচনে গোপনে ভারতীয় চরদের তত্ত্বাবধানে নির্বাচনী ফলাফলকে শেখ হাসিনার পক্ষে নেয়ার যে অপকর্ম শুরু হয় তা এখন প্রকাশ্যে হচ্ছে।
‘জনগণ’ একটি শব্দে পরিণত হয়েছেন। তাদের কোন ভূমিকা নেই। এদের ভূমিকা মুখে আছে, বাস্তবে নেই। তাদের কোন মূল্য নেই। কেবল প্রচারমাধ্যমে বলা হবে জনগণ আমাদেরকে ভোট দিয়েছে। যদিও বেশির জনগণ জানেন ও বুঝেন জনগণ ক্ষমতাসীনদের ভোট দেন নি।
তবে নির্বাচন কমিশন নামক যে সাদা হাতি পালন করা হচ্ছে তারাও এবার প্রকাশ্যে বলেছেন: ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে আসেন নি। একজন এমনও বলেছেন: আওয়ামী লীগের ভোটরাও ভোট দিলে প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা আরো বাড়তো।
সোজা কথায় বাস্তবে সিটি নির্বাচনে ১০ শতাংশ প্রকৃত ভোটারও ভোট দিয়েছেন কী না তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। নির্বাচন কমিশন প্রদত্ত ভোটের যে সংখ্যা দেখিয়েছে তার বেশির ভাগই ছিল দখলী ভোট। আওয়ামী ক্যাডার, পুলিশ, প্রিসাইডিং অফিসার তাদের মর্জিমতো ভোটের ব্যবস্থা করেছেন। এখানে তো ভোটারের দরকার নেই। নির্বাচন হচ্ছে এটাই যথেষ্ঠ। ভোটিং মেশিনে ভোট মানেই স্বচ্ছ নির্বাচন নয়। ভোটিং মেশিন এমন নয় যে, ভুয়া ভোটারকে ধরে ফেলবে। চূড়ান্ত বিবেচনায় ভোটিং মেশিন তো কোন মানুষ নিয়ন্ত্রণ করেন। সুতরাং ভোটারবিহীন নির্বাচনে কেউ যে নিজেরাই এই মেশিনের অপব্যবহার করেন নি, তা বলার কোন সুযোগ নেই। প্রকৃত ভোটার ছাড়ও মেশিনে ভোট দেয়া যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা তো বলেছেনই যে, আওয়ামী ক্যাডাররাই তাদের ইচ্ছামতো দলীয় প্রার্থীদেরকে ভোট দিয়েছেন। জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য বিরোধীদলীয় প্রার্থীদের প্রতীকেও কিছু ভোট দেয়ার সুযোগ দিয়েছে, যাতে দাবি করা যায় নির্বাচন সরকারী প্রভাব ও চাপমুক্ত ছিল।
কিন্তু মানুষ জানেন নির্বাচন অবাধ ও স্বাধীন নয়। এটা সম্পূরূপেই প্রতারণা ও পাতানো খেলা। বিএনপি দলীয় প্রার্থীদেরকে হয়তো কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়া হয় নি, দুই-চারজন কেন্দ্রে প্রবেশ করলেও তাদেরকে তাড়িয়ে দেয়া হয়। তাদের কাউকে কাউকে চড়্-থাপ্পড়, গলাধাক্কা দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে। ভোটার শূন্য ভোটকেন্দ্রে বিপুল সংখ্য ভোট কিভাবে পড়লো? কারা এইসব ভোট দিয়েছে? জনগণের কাছে এ ধরনের হাজারো প্রশ্নের জবাব রয়েছে।
সরকার জনগণকে ভয় করে। তাই ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য স্বচ্ছ ও অবাধ নির্বাচনের অধিকার হতে জনগণকে বঞ্চিত করে স্বউদ্যোগে স্ব-নির্বাচনের কৌশল নিয়েছে। শেখ হাসিনা এবং তার মুরুব্বী ভারত জানে স্বচ্ছ নির্বাচন দেশপ্রেমিক শক্তি ক্ষমতায় আসবে। তারা যেন কোনভাবেই ক্ষমতায় আসতে না পারে সেই উদ্দেশ্যে ভোটারবিহীন নির্বাচেনর মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখা হচ্ছে। ভারত জানে দেশপ্রেমিকরা ক্ষমতায় আসলে ভারতের আগ্রাসী নীল-নকশা বাধার মুখে পড়বে। তাই তাদেরকে ক্ষমতার বাইরে রাখতে হবে। শেখ হাসিনার ক্ষমতা আর ভারতের আগ্রাসী স্বার্থ রক্ষার অভিন্ন শিকার দেশ আর দেশপ্রেমিক শক্তি।
তাই স্বদেশী ও ভারতীয় প্রভুদের স্বার্থে দেশপ্রেমিক শক্তি সব ধরনের গণতান্ত্রিক, এমনকি গণতান্ত্রিক অধিকার হতে বঞ্চিত । তারা কথা বলার, সভা-সমাবেশ করার, লেখালেখি করার অধিকার হতে বঞ্চিত। কোন ধরনের প্রতিবাদ করাও সুযোগ নেই। তাদেরকে নিষ্ক্রীয় ও নির্মূল করার জন্য তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও সাজানো মামলা রুজু করা হয়। গ্রেফতার করে রিমান্ড নামক নির্যাতন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। কারারুদ্ধ করা। কারারুদ্ধ না হলেও অসংখ্য মামলা চালাতে আদালতে যেতে যেতে তাদের পরিবার পথে বসে গেছে। সর্বোচ্চ ডিগ্রীধারী এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়–য়ারা মামলার পয়সা যোগাতে রিক্সা চালায়, গাড়ি চালায়, গার্মেন্টেসে কাজ করেন। একটি দেশপ্রেমিক প্রজন্ম সম্পূর্ণ শেষ করে দেয়া হচ্ছে। তাদের কোন ভবিষ্যত নেই। এর পাশাপাাশি রয়েছে উধাও, গুম, খুন, ক্রসফায়ার । কেউ জানে না কাকে কখন ঘর থেকে বাজার থেকে অফিসে যাওয়া-আসার পথে কিংবা বাস-রেল থেকে তুলে নেয়া হবে। ক্রসফারায়ে দেয়া হবে। কিংবা সরাসরি খুন করে রাস্তার পাশে কিংবা খালে-বিলে-্নদীতে ফেলে রাখা হবে।
এই ধরনের ভীতিকর পরিবেশে মানুষ বোবা হয়ে গেছে। জনগণ জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত । তারা অসহায়ত্ববোধ করছেন। তাদের দেশপ্রেমের চেতনা ও দেশের প্রতি আগ্রহ দিন দিন ফিকে হচ্ছে। তারা চুপসে যাচ্ছেন। মানুষ একান্তভাবেই আত্মকেন্দ্রিক হয়ে গেছেন। আপন জীবন বাঁচানোই এখন তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। দেশকে নিয়ে নির্বাচনকে নিয়ে তারা এখন কমই ভাবেন। দেশকে নিয়ে ভাবার কিংবা অন্যায়ের প্রতিবাদ করার অধিকার দাবি করার পরিণতি কতো ভয়ঙ্কর তা জনগণ প্রতিনিয়ত প্রত্যক্ষ করেন। তারা সাহস হারিয়ে ফেলেছেন। নির্বাচন, এমনকি দেশকে নিয়ে ভাবাকে তারা অর্থহীন মনে করেন। যেদেশ তাদের স্বাধীনভাবে নিরাপদে চলার, কথা বলার, সর্বোপরি বেঁচে থাকার অধিকার দেয় না, তা নিয়ে মানুষ কেন ভাববে ? তাদের সোজা কথা Ñ আমি দেশের কেউ না। আমার কোন অধিকার নেই।
এই কারণেই দেশকে নিয়ে ভাবার মানসিকতা দিন দিন লোপ পাচ্ছে। রাষ্ট্রশক্তি জনগণকে অধিকারহারা করলে, তাদেরকে কোণঠাসা করলে, তাদের জীবনকে দুর্বিসহ ও আতঙ্কগ্রস্থ করলে তারা কেবল ভোটবিমুখই হচ্ছেন না, সরকারের প্রতি বিশ্বাস ও দেশকে ভালোবাসার চেতনাও হারিয়ে ফেলছেন।
ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় একনায়তান্ত্রিক শাসনে জর্জরিত সবদেশের জনগণই এমন হয়ে যান। তাদের চেতনাবোধ, চিন্তাশক্তিও হারিয়ে যায়। দেশের কী হলো, কী হবে তারা আর এইসব নিয়ে ভাবতে চান না। এই কারণেই একনায়করা যুগযুগ ধরে ক্ষমতায় থাকার সুযোগ নেন। জনগণের নামে গণতন্ত্রের মুখোশ পরেই অধিকাংশ একনায়করা আমৃত্যু ক্ষমতায় ছিলেন।
কিন্তু একনায়কতান্ত্রিক শাসনে পতনের পর অনেক দেশই অপূরণীয় অস্তিত্বের সংকটে পড়ে। কোন কোন দেশ চিরতরে হারিয়ে যায়। হিটলারের পতনের পর তার মাতৃভূমি জার্মানী পুঁজিবাদী ও পুঁজিবাদবিরোধী শক্তিগুলো ভাগাভাগি করে নেয়। পুঁজিবাদী দেশ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স এবং তথাকথিত কমিউনিস্টশাসিত সাবেক সোভিয়েট ইউনিয়ন জার্মানীকে চারভাগে ভাগ করে। পুঁজিবাদী তিনটি অংশ মিলে পশ্চিম জার্মানী এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের দখলীকৃত অঞ্চল নিয়ে পূর্ব জার্মানী নামে দুটি পৃথক রাষ্ট্র তৈরি হয়। দুটি অংশ মূলত দখলদারদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। তবে এই ক্ষেত্রে পূর্ব জার্মানী নামমাত্র স্বাধীন ছিল। সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং কমিউনিজমের পতনের পরই স্বাধীন হয় এবং দুই জার্মানী পুনরায় ঐক্যবদ্ধ এক জার্মানীতে ফিরে আসে। সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং কমিউনিজমের পতন না হলে জামার্নী হয়তো কখনোই ঐক্যবদ্ধ হতে পারতো না।
আবার কমিউজমের পতনের মাধ্যমে কমিউনিস্ট একনায়কতন্ত্রের পতন হয় এবং অজানা সংখ্যক পারমানিবক বোমা ও সর্বাধুনিক সমরাস্ত্রের অধিকারী বিশ্ব পরাশক্তি সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৫টুকরা হয়ে যায়।
ইরাকের একনায়ক ক্ষমতাচ্যূত হবার পর কেবল নিজেই মরেন নি দেশ এবং দেশবাসীকেও মেরে গেছেন। ইরাকের বর্তমান অবস্থা কারো অজানা নন। গাদ্দাফি’রও একই পরিণতি হয়েছে। তার দেশেও অশান্তি ঝেঁকে বসেছে। একই অবস্থা সিরিয়াতে। তিনটি দেশেই গৃহযুদ্ধ চলছে।
অনেকেই বলবেন এই সবই হয়েছে বাইরের হস্তক্ষেপে। অবশ্যই বাইরের হস্তক্ষেপ ছিল। কিন্তু বাইরের হস্তক্ষেপের সড়ক তৈরি করেছে ক্ষমতালোভী একনায়করা। জনগণের নির্বাচিত সরকার হলে, জনগণ ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনভাবেই এমন পরিস্থিতি হতো না। কারণ জনগণ একনায়কের পক্ষে না দাঁড়িয়ে তাদের পতন কামনা করেছে। একনায়কতন্ত্রের পতনকে সাধারণ মানুষ স্বাগত জানিয়েছে। তারা আনন্দ প্রকাশ করেছে। অর্থাৎ সব একনায়করাই ছিল জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন। একনায়কের দুর্দিনে সাধারণ মানুষ তাদেরকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসে নি। তবে ওই দেশ কমপক্ষে অস্তিত্ব হারায় নি। তাদের সৌভাগ্য যে, তাদের দেশের পাশে ভারত নামক কোন আগ্রাসী দেশ ছিল না।
অন্যদিকে কোন দেশের একনায়করাই প্রতিবেশি কোন আগ্রাসী দেশের সরাসরি সহযোগিতায় ক্ষমতায় আসেন নি। কোন একনায়কই ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য বিদেশ-নির্ভর ছিলেন না। তাদের অপরাধ যতোই থাকুক ক্ষমতায় থাকার বিনিময়ে কোন একনায়কই নিজদেশের স্বার্থ কখনোই কোন দেশের হাতে তুলে দেন নি। তারা স্বদেশের স্বার্থ, নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্বকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের স্বার্থ সম্পূর্ণ জলাঞ্জলি দিয়ে প্রভুদেশকে চাহিবামাত্র সবকিছু দিতে দ্বিধা করেন নি । তিনি যতো চুক্তি করেছেন, তার সবগুলোই চূড়ান্ত বিবেচনায় ভারতের পক্ষে গিয়েছে। এই কারণেই ভারতীয়রা প্রকাশ্যে বলছে: ঢাকায় আমাদের পছন্দের সরকার বসেছে। অর্থাৎ শেখ হাসিনা ভারতের প্রতিনিধি।
শেখ হাসিনা সরকার দেশপ্রেমিকদের নির্মূলে অপহরণ, ক্রসফায়ার, খুনে লিপ্ত মোদি হাসিনাকে অভয় দিয়ে বললেন: জঙ্গীবিরোধী এই লড়াইয়ে আপনি একা নন, ভারত আপনার সাথে রয়েছে। অত্যাচার ও খুনের শিকার এইসব দুর্ভাগারাই ছিলেন সত্যিকার দেশপ্রেমিক, যাদেরকে মোদিরা ভয় করে। তাদেরকে নির্মূল করাই হলো শেখ হাসিনার দায়িত্ব। তিনি যেন ভারতের হয়েই দেশপ্রেমিকদেরকে নির্মূল করছেন। বেগম খালেদা জিয়া তাদেরই একজন। ভারতের নির্মূল তালিকায় তার নামও রয়েছে।
অতি সম্প্রতি শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে বাংলাদেশের স্বার্থের পক্ষে ফেসবুকে মন্তব্য করার জন্য বুয়েটছাত্র আবরার ফাহাদকে জীবন দিতে হয়েছে। “দিল্লী না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা” এই ধরনের শ্লোগান দেয়া মিছিলে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য ঢাকসু’র ভিপি নুরের ওপর হামলা হয়েছে। হামলাকারীরা যা বলেছেন তার মূল কথা হলো: নুর কেন ভারতবিরোধী অবস্থানে গেলেন। স্বাধীন দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও স্বার্থরক্ষার জন্য কথা বলা মানেই ভারতের বিরুদ্ধে কথা বলা, যা বন্ধ করা শেখ হাসিনার দায়িত্ব। বাংলাদেশের জনগণ ভারতের চাপিয়ে দেয়া একনায়কতন্ত্রের শিকার।
ভারত চাইছে দেশপ্রেমিক শক্তি ভারত-প্রযোজিত অগণতান্ত্রিক একানয়কতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে নিক। বাংলাদেশীরা পরস্পরের কাটাকাটি করুক। দেশ গৃহযুদ্ধের মুখে পড়–ক। তাহলে ভারত বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশীকে ভারতে চলে যাবার জন্য প্ররোচিত করবে। আর ভারত তার নিজ দেশের স্বার্থ রক্ষার অজুহাতে বাংলাদেশে শান্তি-শৃঙ্খলার নামে ভারতীয় বাহিনী বাংলাদেশে ঢুকে পড়বে, যারা আর কখনোই বাংলাদেশ ত্যাগ করবে না। তারপর শুরু হবে পৃথিবীর জঘন্য গণহত্যা। বাংলাদেশে মুসলমানদেরকে তালেবান, আইএস, কিংবা অন্যকোন নতুন গোষ্ঠীর জঙ্গী হিসেবে চিত্রিত করে কচুকাটা করবে। এখানে আওয়ামী লীগ, জামায়াত বিএনপি বাছা হবে না । তারা পরিচয়ে মুসলমান, এটাই হবে তাদের অপরাধ। আমাদের অবস্থা বসনীয়-রোহিঙ্গা মুসলিমদের চেয়েও ভয়ঙ্কর হবে। জনগণ প্রতিরোধের চেতনা হারিয়ে ফেলবে। শেখ হাসিনা কিংবা তার কোন উত্তরাধিকার ভারতের খপ্পর থেকে দেশকে আর উদ্ধার করতে পারবে না। আর এইভাবেই বাংলাদেশ বিশ্বমানচিত্র হতে মুছে যাবে।
ভারতের এই মহাআগ্রাসী চক্রান্ত প্রতিহত করার সহজ উপায় হলো জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করা। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সবার অংশগ্রহণে একমাত্র অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র চর্চা হলেই জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হবে। দেশ কল্যাণমুখী ও জনজীবন নিরাপদ হলে দেশ, প্রচারে নয় বাস্তবে, সমৃদ্ধ হলে জনগণ দেশমুখী হবেন। দেশরক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন। অন্যথায় বাংলাদেশ হারিয়ে যাবে।*
১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২০/ রানার নিউজ