শাশুড়ির পর মা-কেও হারালেন কথা সাহিত্যিক ফেরদৌস সাজেদীন
শাশুড়ি মাকে হারানোর মৃত্যুশোক কাটতে না কাটতেই এক সপ্তাহের মধ্যে জন্মধাত্রী মা-কে হারালের নিউইয়র্কের বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক ও মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান কথাসাহিত্যিক ফেরদৌস সাজেদীন। তার মাতা বেগম জাহানারা রইস ৬ মে বুধবার (বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫-১০ মিনিট) ঢাকার মডার্ন হাসপাতালে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন)। তার বয়স হয়েছিলো ৮৫ বছর। তিনি নিমোনিয়া সহ নানা রোগে ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি পুত্র-কন্যা সহ বহু আত্মীয় -স্বজন রেখে গেছেন। উল্লেখ্য, ফেরদৌস সাজেদীনের শ্বাশুড়ি মা সুরাইয়া আহমেদ (৮৫) করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ১ মে সকাল ৮টায় নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
মুক্তধারা ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা গেছে, বেগম জাহানারা রইস বেশ কিছুদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। তিন সপ্তাহ আগে নিমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে তাকে রাজধানী ঢাকার শ্যামলীতে অবস্থিত একটি বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে করোনা চেকআপ করালে নেগেটিভ রেজাল্ট আসে। তারপরেও তার অবস্থা ক্রমান্বয়ে খারাপ হতে থাকে। পরবর্তীতে সেখান থেকে তাকে মডার্ন হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। মৃত্যুর সময় পর্যন্ত তিনি ইনটেনসিভ কেয়ারে ছিলেন।
মরহুমা বেগম জাহানারা রইস জন্ম কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়ায়। তার স্বামী ১৯৮৪ সালে ইন্তেকাল করেন। ২০০৯ সাল পর্যন্ত তিনি যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী তার পুত্র-কন্যাদের কাছে আসা-যাওয়া করতেন। সর্বশেষ দেশে ফেরার পর গত বছর থেকেই তার শরীরটা ক্রমান্বয়ে খারাপের দিকে যাচ্ছিল। পুত্র ফেরদৌস সাজেদীন গত বছর ৪বার মায়ের পাশে ছুটে যান। কিন্তু মায়ের চরম অসুস্থতার সময়ে করোনা পরিস্থিতির কারণে তিনি ঢাকা গিয়ে মায়ের পাশে উপস্থিত হতে পারেননি। মরহুমার বড় মেয়ে আদিবা ইসলাম মিলু নিউইয়র্কের রকল্যান্ডে বসবাস করেন। মায়ের মৃত্যুতে করোনার কারণে ভাই-বোনের সাক্ষাৎ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। ছোট মেয়ে মাহফুজা শীলু বাংলাদেশের থাকার পরও লক ডাউনের কারণে উপস্থিত থাকতে পারেননি মায়ের শেষ সময়ে।
ব্যক্তিগত জীবনে বেগম জাহানারা রইস স্বাবলম্বী মানুষ ছিলেন। জীবনের বেশিরভাগ সময় তিনি নিজের কাজ নিজে করতেই পছন্দ করতেন। বইপড়া ছিল তার অন্যতম আনন্দ ও শখের বিষয়।
কথা সাহিত্যিক ফেরদৌস সাজেদীনের শাশুড়ি ও মায়ের ইন্তেকালে নিউইয়র্কের কবি-সাহিত্যক, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বগণ গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। এদিকে বেগম জাহানারা রইস-এর মৃত্যুতে মুক্তধারা ফাউন্ডেশন-এর পক্ষ থেকে বিশ্বজিত সাহা গভীর শোক ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।