করোনা চিকিৎসায় ঢামেকে প্লাজমা থেরাপির জন্য নমুনা সংগ্রহ শুরু
দেশে শুরু হলো করোনা রোগীদের প্লাজমা থেরাপির জন্য নমুনা সংগ্রহের কাজ। প্রাথমিকভাবে করোনা জয়ীদের দেহ থেকে প্লাজমা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হবে। পরীক্ষিত নমুনায় যথেষ্ট পরিমাণ অ্যান্টিবডি পাওয়া গেলে তা আশঙ্কাজনক অবস্থায় থাকা করোনা রোগীর দেহে প্রয়োগ করা হবে। তবে, সেক্ষেত্রে প্রয়োজন হবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদনের। অবশ্য, এই প্রক্রিয়া নিয়ে দ্বিমত জানিয়েছেন কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। প্রাথমিকভাবে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৪৫ জন গুরুতর অসুস্থ করোনা রোগীর দেহে এই থেরাপি দেয়া হবে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের হেমাটোলজি বিভাগে প্লাজমা থেরাপির নমুনা সংগ্রহের প্রথম দিন শনিবার। এ দিন নমুনা দেন করোনা জয় করা দুই চিকিৎসক- শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলের ডা. দিলদার হোসেন বাদল এবং স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেলের ডা. পিয়াস। কোভিড-১৯ আক্রান্ত হওয়ার পর রোগীর শরীরে এ ভাইরাস মোকাবিলায় অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ওই রোগীর প্লাজমায় বৃদ্ধি পায় অ্যান্টিবডির পরিমাণ। ওই অ্যান্টিবডি দিয়েই সম্ভব, অসুস্থদের সারিয়ে তোলা।
মানুষের রক্তের তিন ধরনের কণিকা ছাড়া বাকি অংশ রক্তরস, যার পরিমাণ প্রায় ৫৫ শতাংশ। রক্তের এ তরল হলুদাভ অংশকেই বলা হয় প্লাজমা। করোনা থেকে সুস্থ হওয়া মানুষের শরীর থেকে সংগ্রহ করা সেই প্লাজমাই প্রয়োগ করা হবে গুরুতর করোনা রোগীর দেহে। পরীক্ষামূলক প্রয়োগ সফল হলে শিগগিরই তা রোগীর চিকিৎসায় ব্যবহার শুরু হবে বলে জানালেন ঢাকা মেডিকেলের হেমাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক এম এ খান।
সারা বিশ্বেই প্লাজমা থেরাপিতে সুস্থতার হার বেশি। চীন, আমেরিকাসহ অন্যান্য দেশে এরই মধ্যে করোনা চিকিৎসায় এ পদ্ধতির সফলতা প্রমাণিত হয়েছে। তাই, বাংলাদেশের চিকিৎসকরাও আশার আলো দেখছেন। স্বাস্থ্য অধিদফতর এর জন্য নীতিগত অনুমোদন দিলেও অবশ্য প্লাজমা থেরাপি নিয়ে রয়েছে দ্বিমত। এখনই প্লাজমা থেরাপির উপর নির্ভরশীল না হয়ে আরো গবেষণা প্রয়োজন বলে মনে করছেন হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক আহমেদুল কবির।
একজন সুস্থ মানুষ ৪০০ থেকে ৬০০ মিলিলিটার পর্যন্ত প্লাজমা দান করতে পারেন। আর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত একজন রোগীর সুস্থ হতে দরকার হয়, ২০০ মিলিলিটারের মতো প্লাজমা।