সুপার সাইক্লোন আম্পান শেষরাতে আঘাত হানতে পারে বাংলাদেশে
সুপার সাইক্লোন আম্পান আজ মঙ্গলবার (১৯ মে) শেষরাতে খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে আঘাত হানতে পারে। এছাড়া বুধবার (২০ মে) বিকেল/সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে ভয়ঙ্কর শক্তিশালী এই ঘূর্ণিঝড়। এ সময় ৫ থেকে ১০ ফুট অধিক উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। মঙ্গলবার (১৯ মে) সকাল ৯টা পর্যন্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বুলেটিনে জানানো হয়, আম্পান পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় (১৬.৮০ উওর অক্ষাংশ এবং ৮৬.৯০ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্হান করছে। এটি আজ দুপুর ১২ টায় (১৯.০৫.২০২০) চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮১০ কিঃমিঃ দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৬৫ কিঃমিঃ দক্ষিণপশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৯৫ কিঃমিঃ দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৯০ কিঃমিঃ দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমকালে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম জেলা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিসহ ঘণ্টায় ১৪০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এছাড়া ঘূর্ণিঝড় ও অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ থেকে ১০ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
বর্তমানে সুপার সাইক্লোন কেন্দ্রের ৯০ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২২৫ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২৪৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুপার সাইক্লোন কেন্দ্রের নিকটে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অতিসত্ত্বর নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর ও তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। সুপার সাইক্লোন আম্পান গত রাতের ১২ ঘণ্টায় বাংলাদেশের দিকে এগিয়েছে ১৬৫ কিলোমিটার। অর্থাৎ গড়ে ১৩ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার গতিতে বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে আসছে সুপার সাইক্লোন।
উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে উপকূলীয় অঞ্চল সাতক্ষীরার সাইক্লোনের প্রভাবে বৃষ্টির দেখা মিলেছে, পিরোজপুরেও ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাব শুরু হয়েছে।