মুক্তি মিলছে না ছাত্রদল নেতা ইসহাক সরকারের
পিবিসি নিউজ: আজ পর্যন্ত মুক্তি মিলেনি ছাত্রদল নেতা ইসহাক সরকারের, ২০১৮ সালের ১০ জুলাই রাজধানীর বনানী থেকে গ্রেপ্তার হলেও এখন পর্যন্ত মুক্তি পাননি তিনি।
দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আন্দোলনে অংশ নিয়ে বিএনপির যেসব নেতা আটক হয়েছিলেন তারা অনেক আগেই জামিনে মুক্ত হয়েছেন। একমাত্র ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার ২০১৮ সালের ১০ জুলাই রাজধানীর বনানী থেকে গ্রেপ্তার হলেও এখন পর্যন্ত মুক্তি পাননি। গত ১০ জুলাই তার কারাবন্দিত্বের মেয়াদ দুই বছর পার হয়েছে। এর মধ্যে কারাবন্দি খালেদা জিয়া সরকারের নির্বাহী আদেশে গত ২৫ মার্চ মুক্তি পেলেও মুক্তি মেলেনি ইসহাক সরকারের। কবে নাগাদ মুক্তি পাবেন তিনি তা বলতে পারছেন না তার পরিবার ও দলের আইনজীবীরা। মামলায় জামিনের সর্বশেষ অবস্থা জানতে চাইলে ইসহাকের ভাই ইয়াকুব সরকার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ইসহাকের বিরুদ্ধে তিন শতাধিক মামলা রয়েছে। এ কারণে জামিনে মুক্তি পেতে সময় লাগছে। এরই মধ্যে কেটে গেছে ২৭ মাস। দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, পরিবারের আইনজীবী ছাড়াও দলের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার আমার ভাইয়ের মামলার বিষয়গুলো দেখছেন। কবে নাগাদ আমার ভাই মুক্ত হবেন, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। পরিবারের সবাই তাকে নিয়ে উদ্বিগ্ন রয়েছেন।’
তিনি বলেন, ইসহাক সরকারের মুক্তির দাবিতে গত ২৬ আগস্ট নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে অংশ নিয়ে রিজভী আহমেদ তার ভাইয়ের মুক্তি দাবি করেছেন। এ ছাড়া বাসায় গিয়ে পরিবারের সদস্যদের খোঁজখবর নিয়েছেন। সমস্যা হলে জানাতে বলেছেন।
ইয়াকুব বলেন, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বকশীবাজারে স্থাপিত বিশেষ আদালত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদ- দেয় আদালত। ওই দিনই তাকে কারাগারে নেওয়া হয়। এরপর তার মুক্তির দাবিতে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করে দলটি। এসব কর্মসূচি থেকে প্রয়াত স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রদলের সভাপতি এস এম মিজানুর রহমান রাজসহ অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তারা জামিনে মুক্তি পান। কিন্তু ইসহাক সরকার আজও মুক্তি পাননি।
ইসহাক সরকারের ঘনিষ্ঠ একাধিক ছাত্রদল নেতা দেশ রূপান্তরকে বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি আমাদের অনুরোধ, তিনি যেন ইসহাকের মুক্তির জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেন। দলের জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের নির্দেশ দেন দ্রুত ইসহাকের মুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে।
ছাত্রদলের নেতারা জানান, ৯ জুলাই ২০১৮ নিকুঞ্জ থেকে বনানী আসার পথে একটি মাইক্রোবাস এসে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ইসহাক সরকারকে তুলে নিয়ে যায়। তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে কুড়িল ফ্লাইওভার দিয়ে পূর্বাচলের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে ওই দিন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ইসহাককে আটকের বিষয়টি অস্বীকার করে। এর ২৬ ঘণ্টা পর ১০ জুলাই তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ১১ জুলাই তাকে ১৬৯টি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কোর্টে হাজির করা হয়। এরপর কয়েক দফা রিমান্ডে নেওয়া হয় তাকে।
ইসহাক সরকারের জামিনের সর্বশেষ অবস্থা জানতে চাইলে অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ইসহাকের জামিনের চেষ্টা করে যাচ্ছি। তিন শতাধিক মামলা থাকায় সময় লাগছে। আগামী ৭ নভেম্বর ইসহাককে আদালতে আনা হবে। সে সময় তার জামিনের আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে।’