সৌদি আরবে স্পনসরশিপ বা “আকামা” পদ্ধতি বাতিল হতে যাচ্ছে!
পিবিসি নিউজ, রিয়াদ – এক যুগান্তকারী পদক্ষেপে, সৌদি আরব আগামী বছরের প্রথমার্ধ থেকে “স্পনসরশিপ সিস্টেম” বা “আকামা পদ্ধতি” বাতিল করতে যাচ্ছে। দৈনিক মালের অনলাইন ভার্সনের এক প্রতিবেদনে একথা বলা হয়েছে। এই পদক্ষেপের ফলে দশ মিলিয়নেরও বেশি প্রবাসী উপকৃত হবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
সৌদি মানব সম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয় আগামী সপ্তাহে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবে, আকামা বিলুপ্তির এই ঐতিহাসিক উদ্যোগটি প্রবাসী শ্রমিক এবং তাদের নিয়োগকর্তাদের মধ্যে চুক্তিভিত্তিক সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়।
প্রায় সাত দশক ধরে চলে আসা “স্পনসরশিপ সিস্টেম” বা ‘আকামা’ হলো কাজের চুক্তি যা নিয়োগকারী এবং বিদেশী কর্মীদের মধ্যে সম্পর্ককে নিয়ন্ত্রণ করে। “আকামা” নামক এই সিস্টেমটি বিদেশী কর্মচারীদের সাথে মালিক পক্ষের একটা চুক্তি, যার উপরে ভিত্তি করে মালিক পক্ষ বিদেশী কর্মচারীদের ইন্সুরেন্স, ভিসা নবায়ন ইত্যাদি বিষয়ে দায়বদ্ধ থাকে।
আকামা সিস্টেমটি বিলুপ্ত হলে বিদেশি শ্রমিকরা নির্দিষ্ট মালিকের নয় বরং কাজ ভিত্তিক সরকারি চুক্তিতে সৌদি আরবে আসতে পারবেন, নির্ধারিত আইন অনুযায়ী স্বাধীনভাবে চলাফেরা কিংবা কাজ করতে পারবেন।
সৌদি আরবে কয়েক দশক ধরে স্পনসরশিপ ব্যবস্থা চালু রয়েছে, এই আকামা সিস্টেমের অধীনে একজন শ্রমিক তার স্পনসরশিপ বাঁচিয়ে রাখার জন্য অনেক সময় খারাপ মানুষিকতার মালিকের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকেন। নির্দিষ্ট মালিকের নামে বা কোম্পানির নামে চাকুরীতে আসা বিদেশী কর্মজীবীদের আকামা বিলুপ্তি ঐতিহাসিক স্বাধীনতা দেবে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করেন।
বুধবার (২৮ অক্টোবর) মানব সম্পদ মন্ত্রণালয় কতৃক স্পনসরশিপ সিস্টেম বিলুপ্তির সাথে প্রবাসী শ্রমিক এবং তাদের নিয়োগকর্তাদের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনার ভিত্তিতে ঘোষণা করবে বলে আশা করা হয়েছিল, তবে এটি আগামী সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা হয়েছে, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকর্মীদের এই বিষয়ে একটি সংবাদ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানোর প্রস্তুতি চলছে।
২০২০ সালের প্রথম দিকে সৌদি আরব স্পনসরশিপ বিলুপ্তির ঘোষণা দেওয়ার কথা ছিল, তবে করোনভাইরাস মহামারী ছড়িয়ে পড়ার কারণে এটি বিলম্বিত হয়েছিল।
নতুন এই আইনে বিদেশী কর্মচারীরা নিজেদের নামে বাসা ভাড়া, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা থেকে শুরু করে এমনকি আবাসন প্রকল্পে জমি কেনা বেচা সহ অনেকটা সৌদি নাগরিকদের মতোই সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। সৌদি আরবের আইন মেনে বিদেশী কর্মচারীরা নিজেদের মতো করে কোন স্পনসরশিপ ছাড়া জীবন পরিচালনা করতে পারবেন।