অধ্যাপক জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার চেয়ে কয়েকজন ‘সুশীল’ নাগরিকের বিবৃতি!
পিবিসি নিউজ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. জিয়া রহমানের বিরুদ্ধে করা মামলাকে ‘হয়রানিমূলক’ আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন ২২ জন “সো কল্ড” বিশিষ্ট নাগরিক।
বুধবার দেওয়া যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, বহুদিন আগে দেওয়া অধ্যাপক ড. জিয়া রহমানের একটি টেলিভিশন টকশোর বক্তব্যের জন্য সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ নানাভাবে নানা রকম মিথ্যা অপপ্রচার শুরু হয়েছে এই প্রগতিশীল অধ্যাপকের বিরুদ্ধে।
অথচ যে বিষয়টি নিয়ে এ অপপ্রচার তা কোনো অবস্থাতেই ধর্মবিরোধী বক্তব্য নয়। ‘খোদা হাফেজ’ বাক্যটি পারস্যসহ সমগ্র ভারত উপমহাদেশের সমাজে যুগ যুগ ধরে পারস্পরিক বিদায় সম্ভাষণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এটা কোরআন, হাদিস, সুন্নাহ প্রবর্তিত কোনো বিষয় নয়। এর ব্যবহারও যেমন কোনো ধর্মীয় বিষয় নয়, আবার এর পরিবর্তনও ধর্মসম্মত কোনো বিষয় নয়।
মামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতিদাতারা বলেন, আসলে একটি চিহ্নিত মহল এ দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক প্রগতিশীল মানুষের বিরুদ্ধে নানা কৌশলে ধর্মকে ব্যবহার করে আসছে। ধর্মের অপব্যাখ্যার মাধ্যমে তারা সব সময় দেশের সংস্কৃতি ও আধুনিক জীবনবোধকে প্রতিহত করার অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
একই কায়দায় ১৯৭১ সালে বিকৃত ব্যাখ্যাসহ ধর্মীয় উসকানি দিয়ে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। অতীতে বেগম সুফিয়া কামাল, হুমায়ুন আজাদ, জাহানারা ইমাম, শামসুর রাহমান, শওকত ওসমান, আহমদ শরীফসহ বাঙালির শীর্ষস্থানীয় বুদ্ধিজীবীদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অপপ্রচার ও তাদের ওপর আক্রমণ করা হয়েছে। পয়লা বৈশাখ, মঙ্গল শোভাযাত্রা, শহীদ মিনারে ফুল দেওয়াসহ আমাদের সব অর্জনের বিরুদ্ধে এ মহল নানা রকম ফতোয়া দিয়ে এগুলোকে প্রতিহত করার পাঁয়তারায় লিপ্ত রয়েছে।
তারা ড. জিয়া রহমানের বিরুদ্ধে করা মামলা অতিসত্বর প্রত্যাহার এবং মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তির এ চক্রান্তের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ অবস্থান গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরদাতারা হলেন-আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী, আবেদ খান, বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, শাহরিয়ার কবির, অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, শিল্পী হাশেম খান, লে. জে. (অব) হারুনুর রশিদ, মে. জে. (অব.) মোহাম্মাদ আলী শিকদার, মে. জে. (অব.) আবদুর রশিদ, অধ্যাপক ডা. এম অহিদুজ্জামান, শফিকুর রহমান এমপি, শিল্পী অধ্যাপক জামাল আহমেদ, কাজী মুকুল, ড. আমজাদ, শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. মাহতাব আল মামুন স্বপ্নীল, মাহমুদ সেলিম, কামাল পাশা চৌধুরী, মানযার চৌধুরী সুইট, ডা. নুজহাত চৌধুরী শম্পা, শিক্ষাবিদ মমতাজ লতিফ প্রমুখ।