বাংলাদেশী কমিউনিটির ‘বেলেল্লাপনা’ প্রোগ্রামগুলি বন্ধ করুন!
মতিউর রহমান লিটু, পিবিসি নিউজ: কমিউনিটির কিছু দায়িত্বজ্ঞানহীন প্রবাসীদের অহেতুক বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান আয়োজনের কারণে নিউইয়র্ক বাংলাদেশ কমিউনিটিতে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে কবিড -১৯ সংক্রমণ। সচতন নেতৃবৃন্দদের উচিত এই সকল অসামাজিক বিনোদন অনুষ্ঠানগুলি বন্ধ করে দেয়া। মহামারীর এই ক্রান্তিলগ্নেও অমুখ’শো’ তমুখ’শো’ এর নামে যেসকল বেলেল্লাপনার আয়োজন করা হয় তা আসলেই গ্রহণযোগ্য নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় সকল অঙ্গরাজ্য করোনা মহামারীতে লন্ডভন্ড হয়ে আছে, তিন লক্ষের কাছাকাছি মানুষের জীবন বিপন্ন হয়েছে। ঘরে, বাসায় কিংবা হাসপাতালে অসুস্থ হয়ে পরে আছেন প্রায় দশ লক্ষ মানুষ। কবিড-১৯ সংক্রমণে হাসপাতালে মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসে সুস্থতা পেয়েছেন অনেকে তবে যেই পরিমান শারীরিক ও মানুষিক কষ্ট পেয়েছেন তারা, তাদের সেই সকল কষ্টের কথা চিন্তা করে কমিউনিটির অপ্রোজনীয় বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানগুলি প্রত্যাহার করা উচিত।
একান্ত প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া মানুষ যেখানে বাইরে বেরুতে পারেনা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, ফেইসমাস্ক পরে বাইরে যাওয়া আইনি বাধ্যবাধকতা থাকা সত্বেও নৌবিহারের নামে পেট দেখানো ‘শো’, গানের অনুষ্ঠানের নামে লাইট নিভিয়ে গ্রূপ ডান্স করা ‘শো’ কি রকম দায়িত্বজ্ঞানের মধ্যে পরে আমার বিবেকে আসেনা! যারা এসকল শুড়শুড়ি দেয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কবিড -১৯ সংক্রমণের হার বাড়িয়ে দিচ্ছেন তাদেরকে পরিত্যাগ করুন, প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে আইনি সহায়তা নিন তারপরেও কমিউনিটির ভবিষ্যৎ চিন্তা করে আয়োজকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন।
মহামারীর শুরুতেই ছোট্ট একটি বাংলাদেশী কমিউনিটি থেকে প্রায় তিনশ’র মতো লোক হারিয়েছি, অনেকে কাজ হারিয়েছেন, ব্যবসা হারিয়েছেন, সন্তান হারিয়েছেন, অনেকে বাবা-মা হারিয়েছেন। খাবার টেবিলে হয়ত বাবা – মাকে কোনদিন আর দেখতে পাবেননা, দেখতে পাবেননা মহামারীতে কেড়ে নেয়া সন্তানের মুখ।
তখন ছিলো অজানা, অচেনা ছোট কিন্তু রাক্ষুসে ভাইরাসের হত্যাকান্ড। এখন আমরা সব কিছু জানি, মহামারীর এই ভাইরাস থেকে কিভাবে পরিত্রান পেতে পারি কিছুটা হলেও বুঝতে পারি। ওষুধ বাজারে না এলেও ইতোমধ্যে ওষুধ আবিষ্কারের আশার আলো এসেছে, হয়তোবা কয়েক মাসের মধ্যেই পেয়ে যাবো প্রতিষেধক। মাত্র সামাণ্য একটু অপেক্ষা – অনায়াসেই আবার ফিরে পাবো আমাদের দৈনন্দিন জীবন। তাহলে কেন এই দায়ীত্বজ্ঞানহীনতা?
মহামারীর ভয়ে মসজিদ বন্ধ, স্কুলে চলছে অনলাইন ক্লাস অথচ কয়েকজন বিপথগামী বিনোদন বিলাসীদের চলছে “বিনোদন ব্যবসা”!
নিউইয়র্ক তথা বিশ্বের যেকোন দেশে অবস্থানরত বাংলাদেশী কমিউনিটির সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সচেতন হতে হবে। দায়িত্বজ্ঞানহীন মানুষের কর্মকান্ড থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে, সম্ভব হলে তাদের কান্ডজ্ঞানহীনতা চোখে আঙ্গুল দিয়ে বুঝিয়ে দিতে হবে। অন্যায় যে করে আর অন্য যে সহে- সকলেই সমান অপরাধী।