বড়দিন-নববর্ষ ঘিরে থাকবে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা: ডিএমপি কমিশনার
খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসব ‘বড়দিন’ ও ইংরেজি নববর্ষ ‘থার্টি ফার্স্ট নাইট’ কে ঘিরে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।
সোমবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সে বড়দিন ও থার্টি ফার্স্ট নাইট ২০২০ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত এক সমন্বয় সভায় এ কথা জানান তিনি।
সবাইকে বড়দিন ও থার্টি ফার্স্ট নাইটের অগ্রিম শুভেচ্ছা জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে বিভিন্ন দেশে অনুষ্ঠানসমূহ সীমিত আকারে উদযাপন করা হচ্ছে। প্রচুর সংখ্যক লোক কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ায় লন্ডনে গ্রেড-৪ লকডাউন চলছে। তাই বাংলাদেশেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে উদযাপিত হচ্ছে সব প্রকার অনুষ্ঠান।
শফিকুল ইসলাম বলেন, খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বড়দিন উপলক্ষে চার্চে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়া হবে। পাশাপাশি খ্রিস্টান অধ্যুষিত এলাকা ও প্রতিষ্ঠানে অতিরিক্ত নজরদারি ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে। চার্চগুলোতে এলাকাভিত্তিক বিভিন্ন সময়ে একাধিক প্রার্থনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করলে ভালো হবে বলেও জানান তিনি।
‘থার্টি ফার্স্ট নাইট’র নিরাপত্তা উপলক্ষে ডিএমপি কমিশনার বলেন, উন্মুক্ত স্থানে লোক সমাগম ও কোনো পার্টি করতে দেওয়া হবে না। হোটেলে ডিজে পার্টির নামে কোনো স্পেস বা কক্ষ ভাড়া দেওয়া যাবে না। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সীমিত আকারে হোটেলগুলোতে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠান করতে পারবে। তবে কোনোভাবেই ডিজে পার্টি করতে দেওয়া হবে না। হোটেলগুলোতে অনুষ্ঠানের কারণে রাস্তায় যেন অতিরিক্ত যানজটের সৃষ্টি না হয়, সেদিকে সবাইকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্য কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে থার্টি ফার্স্ট নাইটে অনুষ্ঠান করা যাবে না বলেও জানান তিনি।
কমিশনার আরও বলেন, থার্টি ফার্স্ট নাইটে সন্ধ্যা থেকে বারগুলো বন্ধ থাকবে। সামাজিক দূরত্ব ও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান-পাট খোলা রাখা যাবে। তবে যথারীতি রাত ৮টার পর সব ফাস্টফুড দোকানসহ মার্কেট বন্ধ থাকবে।
বড়দিন ও থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন উপলক্ষে সমন্বয় সভায় গৃহীত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে, প্রত্যেকটি চার্চে পোশাকে ও সাদা পোশাকে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য নিয়োজিত থাকবে। প্রতিটি চার্চে আর্চওয়ে দিয়ে দর্শনার্থীকে ঢুকতে দেওয়া হবে। মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে ও ম্যানুয়ালি করা হবে তল্লাশি। অনুষ্ঠানস্থল ডগ স্কোয়াড দিয়ে সুইপিং করা হবে। নিরাপত্তায় থাকবে ফায়ার টেন্ডার ও অ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থা। থাকবে চার্চ এলাকায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। চার্চ এলাকায় কোনো ভাসমান দোকান বা হকার বসতে দেওয়া হবে না। কোনো প্রকার ব্যাগ, পোটলা, বাক্স, কার্টন ইত্যাদি নিয়ে চার্চে আসা যাবে না।
এছাড়াও, প্রতিটি অনুষ্ঠানস্থলের প্রবেশ পথে সাবান-পানি দিয়ে হাত ধোয়া এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা, থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে তাপমাত্রা পরিমাপের ব্যবস্থা, জীবাণুনাশক অটো স্প্রে মেশিন অথবা টানেল বসানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
চার্চের ফাদার ও দায়িত্বরত ব্যক্তিবর্গসহ ভক্ত-দর্শনার্থীদের মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক। সর্বক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করাসহ অসুস্থ, বয়স্ক ও শিশু দর্শনার্থীদের অনুষ্ঠানে আসতে নিরুৎসাহিত করার পাশাপাশি অনুষ্ঠানস্থলে একমুখী চলাচল নিশ্চিত করতে হবে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ডিএমপি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি, সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন সেবাদানকারী সংস্থার প্রতিনিধিরা।