সিটি কাউন্সিল নির্বাচনে মুজিব রহমানের প্রার্থিতা ঘোষণা
নিউইয়র্কে বাংলাদেশি জনসমাজে অভিজ্ঞ ও মূলধারার রাজনীতিতে দীর্ঘদিনের সক্রিয় সংগঠক মুজিব রহমান নিউইয়র্কের ডিস্ট্রিক্ট ২৪ থেকে সিটি কাউন্সিলের বিশেষ নির্বাচনে নিজের প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন। সম্প্রতি তিনি এ প্রার্থিতা ঘোষণা করেন।
নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলের বিশেষ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে ২০২১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি। রোরি ল্যান্সমেনের পদত্যাগের পর এই পদটি খালি হয়। মুজিব রহমান ২০১৩ সালের নির্বাচনে রোরির সঙ্গে নির্বাচনে লড়েছিলেন। এখন যারা এই পদে প্রার্থী হয়েছেন, তাঁদের কেউই তখন তাঁকে সমর্থন করেননি বলে জানান তিনি। সেবারের পরাজয়ের জন্য স্বদেশিদের একাংশের অসহযোগিতাকে দায়ী করলেন এই অভিজ্ঞ রাজনীতিক।
সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্ক থেকে স্নাতক সম্পন্ন করা মুজিব রহমান ইউএস সেনসাস ব্যুরো, ইউএসবিএ ও আইআরএসে কর্মরত ছিলেন। বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক এই সভাপতি মার্কিন মূলধারার রাজনীতিতে একজন নিবন্ধিত ডেমোক্র্যাট হিসেবে সক্রিয়।
মুজিব রহমান কুমিল্লা কোটবাড়ীর রেসিডেনসিয়াল স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। স্নাতক করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়েই ছাত্র রাজনীতি করতেন, ছিলেন ছাত্র সংসদের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক। ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানে ছিলেন সক্রিয় কর্মী। স্নাতক শেষে উচ্চশিক্ষার্থে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। এখানে এসে ছাত্রাবস্থাতেই জাতিসংঘের স্ট্যাটিক ডিপার্টমেন্টে কাজে যোগ দেন। ছাত্র অবস্থাতেই জাতিসংঘে চাকরির পরীক্ষা দিয়ে প্রথম হন। পড়াশোনা শেষে লাগার্ডিয়া কলেজে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। একসময় নির্মাণ খাতে ব্যবসা শুরু করেন। ১৯৮০ সাল থেকে ক্রমে মার্কিন রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।
মার্কিন রাজনীতিতে নিজের সম্পৃক্ততার শুরুর অধ্যায় সম্পর্কে মুজিব রহমান বলেন, ‘আমি জানতাম শুধু জ্যাকসন হাইটস কিংবা হিলসাইডভিত্তিক কথা বলাই এ দেশের মূলধারার রাজনীতি নয়। তখন এ দেশে এইডস নিয়ে, সমকামীদের অধিকার নিয়ে আন্দোলনের শুরুর পর্যায়। তখন প্রতিদিনই মিছিলে যেতাম। সে সময়ে রুডি জুলিয়ানি নামকরা আইনজীবী। তিনি প্রথমবার নির্বাচনে হেরে যান। সেই প্রথম জুলিয়ানির মিছিল করেছি।’
কমিউনিটির আরেক নেতা মোর্শেদ আলমের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মুজিব রহমান বলেন, ‘তাঁর কাছ থেকে অনেক শিখেছি।’ এক বন্ধুসহ মুজিব রহমান নানা প্রয়াস চালিয়ে রোববার নগরে বিনা মূল্যে গাড়ি পার্কিংয়ের বিল পাস করান। সানিসাইডে থাকাকালে জোসেফ ক্রাউলির সঙ্গে কাজ করেছেন। দক্ষিণ এশীয় কমিউনিটি নিয়ে তিনি দীর্ঘ দিন ধরে কাজ করছেন। এই কাজকেই আরও বিস্তৃত করতে এবার প্রার্থী হয়েছেন বলে জানান তিনি।
মুজিব রহমান বলেন, নির্বাচনে জয়ী হলে যেকোনো প্রস্তাব কংগ্রেসম্যানের কাছে সহজে পৌঁছাতে পারবেন তিনি। প্রাইভেট স্কুল গড়ার কথা বলবেন। কিছু এলাকার সরকারি স্কুলের অবস্থা ভালো নয়। সেসব স্কুলের উন্নতি করবেন। আবাসনসহ নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিশেষ মনোযোগ দেবেন বলেও জানালেন। চীন, হিস্পানিক, এশীয়, রিপাবলিকান ও সমাজতন্ত্রীরা তাঁকে ভোট দেবেন বলে আশাবাদী তিনি। তিনি জানান, এবার একজন লোক পাঁচটি করে ভোট দিতে পারবেন। আর নির্বাচনে জয় পেতে একজন প্রার্থীকে ৫১ শতাংশ ভোট পেতে হবে। প্রার্থিতা ঘোষণার দুই দিনেই তাঁর সমর্থনে ১৬০০ স্বাক্ষর জমা হয়েছে, যার বেশির ভাগই অন্য কমিউনিটির। বাংলাদেশি কমিউনিটিও একইভাবে এগিয়ে এলে তিনি নির্বাচনে জয় পাবেন বলে আশাবাদী।