ব্রিটেনে লকডাউন বিরোধীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ: গ্রেফতার ১২
ব্রিটেনে কোভিড আক্রান্ত হয়ে ৮০ হাজারের অধিক মানুষের প্রাণহানির পরও এটাকে অবিশ্বাস করছে একদল বিক্ষোভকারী। কোভিডের সবচেয়ে মারাত্মক সময়ে একদিনে ১৩২৫ জনের প্রাণহানির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লকডাউন বিরোধীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। মারাত্মক ভাইরাস সংক্রমণ রোধে ঘরে বসে থাকার জন্য বিশেষজ্ঞ ও কর্তৃপক্ষের অনুরোধ সত্ত্বেও লকডাউন বিরোধীরা গতকাল লন্ডনে জড়ো হয়েছিল।
লন্ডনের ক্লাফাম এলাকায় এই বিক্ষোভকারী জনতা ‘আপনার স্বাধীনতা ফিরিয়ে নিন’ (take your freedom back) স্লোগান দিতে শুরু করলে পুলিশ তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে সাড়াশি অভিযান চালায়। এতে ব্যাপক বিশৃঙ্খল দৃশ্য উদ্ভূত হয়। স্ট্যান্ড আপ এক্স (Stand Up X) আয়োজিত এই বিক্ষোভটি অনলাইনে ঘোষণা করা হয়েছিল। এতে বলা হয়, ‘যদি আপনি লকডাউন, নতুন আইন, ৯৭ শতাংশ মিথ্যা ইতিবাচক আরটিসিপিআর পরীক্ষায় বিরক্ত হয়ে থাকেন, অতিরঞ্জিত মৃত্যুর পরিসংখ্যান অস্বীকার করেন, আপনার ব্যবসা ও হাসপাতালের অ্যাপয়েন্টমেন্ট হারিয়ে থাকেন, তবে আগামীকাল আমাদের সঙ্গে মিছিল করুন।’
মেট পুলিশের উপ-সহকারী কমিশনার ম্যাট টুইস্ট বিক্ষোভকারীদের ‘স্বার্থপর’ বলে অভিহিত করে বলেছেন, তারা গোটা সমাজকে ‘বিশাল ঝুঁকিতে’ ফেলেছে। তিনি টুইটারে লিখেছেন, অত্যন্ত উদ্বেগজনক, লন্ডন এসসিজি কর্তৃক করোনা সংক্রমনকে ‘বড় ঘটনা’ ঘোষণার পরদিন দৈনিক কোভিডের সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড দেখেও তারা অবৈধভাবে জমায়েত হয়েছে। এরা আমাদের সমাজ এবং আমাদের অফিসারদেরকে বিশাল ঝুঁকিতে ফেলে রাখার অভিপ্রায়ে এই অবৈধ কাজটি করেছে।
স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড নিশ্চিত করেছে, ক্লাফাম কমন-এ করোনা ভাইরাস নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনের দায়ে ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ডরসেট শহরে একটি বিক্ষোভের অয়োজনকে পুলিশ ছত্রভঙ্গ করে দেয়। কিন্তু বর্ণমাউথ এবং গ্লাসগোতে আজ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আরও কঠোরতা অবলম্বন করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ।
পুলিশ অফিসাররা বলছেন, প্রথমবারের মতো মুখোশ ছাড়া ধরা পড়লে বা যুক্তিসঙ্গত অজুহাত ছাড়া বাসা থেকে বেরুলে জরিমানা হবে। নিয়ম ভঙ্গকারীদের প্রথম অপরাধের জন্য ২০০ পাউন্ড জরিমানা করা হবে। যা পরে এক সেকেন্ডের জন্য দ্বিগুণ হয়ে ৪০০ পাউন্ড হবে। তবে সরকারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বেশিরভাগ ব্রিটেশরা ঘরে বসে আছেন। ভ্যাকসিনটি চালু হওয়ার সাথে সাথে ভাইরাসের বিস্তার বন্ধ করতে সামাজিকভাবে দূরত্ব বজায় রেখে চলেছেন।
লন্ডন মেয়র সাদিক খান বলেছেন, গড়ে ৩০ জন লন্ডনবাসীর মধ্যে ১ জন ভাইরাসে আক্রান্ত। এমনকি রাজধানীর কয়েকটি অঞ্চলে এটি ২০ জনে একজন। মেয়র বলেছেন, ক্রিসমাসের দিন থেকে ভেন্টিলেটরে লোকের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। ৪৭ শতাংশ ইনটেনসিভ কেয়ারে রয়েছেন।