ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি ডেমোক্র্যাটদের
ইউএস ক্যাপিটলে তাণ্ডবে অংশগ্রহণকারীদের উসকানির দায়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে অভিশংসন প্রস্তাব এনেছিলেন কংগ্রেসম্যান জেমি রাসকিন। নিম্নকক্ষে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিশংসনে সফলতার পর এবার তিনি সিনেটে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলার নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
মামলায় অভিযোগ আনা হয়েছে, কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটলে হামলাকারীদের উসকানি দেওয়ার মধ্য দিয়ে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ইতিহাসের ‘সবচেয়ে বিপজ্জনক অপরাধ’ করেছেন। সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) একথা জানিয়েছে।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এই সপ্তাহে সিনেটে বিচার শুরু হতে পারে। ডেমোক্র্যাট নেতা জো বাইডেনও এ সপ্তাহেই প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন।
তবে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা অভিশংসন প্রস্তাবটি হাউসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি কখন সিনেটে পাঠাবেন তা জানাননি রাসকিন। শুধু বলেছেন, ‘শিগগিরই এটা আসা উচিত। যদিও পেলোসি আনুষ্ঠানিক ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় যুক্ত রয়েছেন।’ সেখানে ব্যস্ততা রয়েছে তাঁর।
তবে এটা পরিস্কার যে, ডেমোক্র্যাটরা ট্রাম্পের সিনেট বিচারের চেয়ে বাইডেনের ক্ষমতাগ্রহণ এবং শুরুর দিকের কাজগুলোর প্রতি বেশি মনোযোগ দিতে চাইছেন। বাইডেনের এক দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন ডলারের কোভিড সহায়তা ও অর্থনীতি পুনরুদ্ধার প্যাকেজ নিয়ে জরুরিভিত্তিতে কাজ করতে চান তাঁরা।
গত বুধবার নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেরন্টেটিভসের ভোটে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাব পাস হয়। ক্যাপিটলে হামলাকারীদের উসকানি দেওয়ায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে হাউসে ‘রাষ্ট্রদ্রোহিতায় উসকানি’র অভিযোগ আনা হয়।
গত বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের গণনা এবং জো বাইডেনের বিজয় প্রত্যয়নের জন্য কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশন চলাকালে ওয়াশিংটনের ক্যাপিটলে হামলা চালায় সশস্ত্র বিক্ষোভকারী ট্রাম্প সমর্থকরা। এ ঘটনায় এক পুলিশ সদস্যসহ পাঁচজন নিহত হন।
জেমি রাসকিন বলেছেন, ‘আমরা আমেরিকার ওপর এমন হামলা এবং যা এসব হামলার ঘটনা ঘটাতে সাহায্য করেছে সেসবের বর্ণনা দিতে যাচ্ছি। এই প্রেসিডেন্ট ২০২০ সালের নির্বাচনের ফল ঘুরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। সব জেনেবুঝেই তিনি এটি করেছেন।’
সিনেটে অভিশংসন বিচারে সর্বসম্মতি মিলবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন আসন্ন বাইডেন প্রশাসনের হোয়াইট হাউস চিফ অব স্টাফ রন ক্লেইন।
তবে সিনেটের রিপাবলিকানদের ঠিক কতজন, বা আদৌ কেউ ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করে ভোট দেবেন কি না, তা নিশ্চিত নয়। বেশ কয়েকজন সিনেটর জানিয়েছেন তাঁরা অভিশংসনের পক্ষে ভোট দেবেন। আবার কতিপয় সিনেটর জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করতে রাজি নন।
সিনেটে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট অর্থাৎ ১০০ জনের মধ্যে অন্তত ৬৭ জনের ভোট পেলে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসন পাস হবে। এর মধ্যে ট্রাম্পের প্রেসিডেন্টে মেয়াদও শেষ হয়ে যাবে। তবে পরেও সিনেটে বিচারের সুযোগ রয়েছে। সেক্ষেত্রে ট্রাম্প দোষী সাব্যস্ত হলে পরবর্তী সময়ে আর কখনো প্রেসিডেন্ট পদের জন্য লড়তে পারবেন না তিনি। আর সেইসঙ্গে ইতিহাসের পাতায় অভিশংসিত প্রেসিডেন্টের তকমা তো থাকছেই।