নওগাঁয় পুলিশের লাঠিপেটায় আইনজীবি আহতের জেরে আলটিমেটাম
কিউ, এম,সাঈদ টিটো, নওগাঁ : সোমবার (১ ফেব্রুয়ারী) বেলা ১১টায় নওগাঁ কোর্ট চত্ত্বরে রিক্সা নিয়ে প্রবেশ করাকে কেন্দ্র করে পুলিশের মারপিটে তিন আইনজীবি মারাত্মক আহত হওয়ার জের ধরে আইনজীবিরা বিক্ষোভ প্রদর্শন ও সমাবেশের আয়োজন করেন। সমাবেশ থেকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে দোষী পুলিশ সদস্যদের বরখাস্তসহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আলটিমেটাম দেয়া হয়েছে। অন্যথায় বার এসোসিয়েশন আরও কঠোর কর্মসূচি দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
আইনজীবিরা অভিযোগ করেছেন যে, জেলা এ্যাডভোকেট বার এ্যাসোসিয়েশনের সদস্য এ্যাডভোকেট আবু সাঈদ মুরাদ প্রতিদিনের মত পেশাগত দায়িত্ব পালনের উদ্দেশ্যে রিক্সাযোগে কোর্ট চত্ত্বরে প্রবেশ করার সময় প্রধান গেইটে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা তাঁকে বাধা দেয়। নিজেকে আইনজীবি পরিচয় দেয়ার পরও তাকে ঢুকতে দেয়া না দিয়ে তাকে অশালীনভাবে গালিগালাজ করতে থাকে। এর প্রতিবাদ করতে সেখানে এ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক ও এ্যাডভোকেট শাহ আলম সেখানে এলে তাদের সাথেও পুলিশ বচসায় লিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে সেখানে কর্তব্যরত ট্রাফিক ইন্সপেক্টর রাজিব, পুলিশ সদস্য মুক্তার হোসেনসহ ১০/১৫ জন পুলিশ তাদেরকে লাঠি দিয়ে মারপিট শুরু করে।
পুলিশের এলোপাতারী মারপিটের এই ঘটনা দেখে সেখানে উপস্থিত আইনজীবিসহ সাধারন মানুষ তাদেরকে উদ্ধার করতে এগিয়ে এলে পুলিশ তাদেরও তাড়া করে। খবর পেয়ে জেলা বার এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ্যাডভোকেট খোদাদাদ খান পিটুসহ আইনজীবিরা এগিয়ে এলে পুলিশ তাদের উদ্দেশ্যে রাইফেল তাক করে গুলি করার উপক্রম হয়। এ সময় কোর্ট চত্ত্বরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আইনজীবিসহ কোর্টে আসা সেবা গ্রহিতারা দিকবিদিক ছুটোছুটি করতে থাকেন। মারাত্মক আহত আইনজীবি মুরাদকে উদ্ধার করে এ্যাম্বুলেন্সে করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়।
এই ঘটনায় আইনজীবিরা কোর্ট বর্জণ করে কোর্ট চত্ত্বরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। দুপুরে বার এ্যসোসিয়েশন মিলনায়তনে তাৎক্ষনিক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়। জেলা বারের সভাপতি এ্যাডভোকেট খোদাদাদ খান পিটুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভঅয় আইনজীবিরা বক্তব্য রাখেন। বক্তারা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে কোর্টের সকল কার্যক্রম বন্ধসহ আগামী মঙ্গলবার বিকেল ৫টার মধ্যে দোষী পুলিশদের বিরুদ্ধে সাময়িক বরখাস্ত ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়। অন্যথায় পরবর্তীতে আরও কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করা হয়। পরে আইনজীবিরা বার থেকে একটি মৌন মিছিল করে আদালত চত্ত্বরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন করে।
নওগাঁ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন, জেলা ছাত্রলীগের পক্ষে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি স্মারকলিপি দেয়ার কথা ছিল। আদালত চত্ত্বরের গেটে যেন যানজট না হয় এজন্য আগে থেকে নির্দেশনা ছিল। আদালত চত্ত্বরে এক আইনজীবী রিক্সা নিয়ে প্রবেশের সময় তর্ক হয়। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।