কারাবাখ যুদ্ধে তুরস্কের ড্রোন ই আমাদের হারিয়ে দিয়েছে : আর্মেনিয়া
প্রযুক্তিতে তুরস্ক অনেক এগিয়ে প্রশংসা করে কারাবাখে পরাজয়ের জেরে নিজস্ব ড্রোন তৈরি করছে আর্মেনিয়া। নাগরনো-কারাবাখে আজারবাইজানের সেনাবাহিনীর সাথে সংঘর্ষে পরাজয়ের জেরে নিজস্ব মনুষ্যবিহীন আকাশযান (ড্রোন) তৈরির চিন্তা করছে আর্মেনিয়া। দুইদেশের মধ্যে সাম্প্রতিক এই সংঘর্ষের ফলাফলে তুর্কি ড্রোনের ভূমিকার কথা চিন্তা করে এই প্রকল্প নিচ্ছে দেশটি।
গত বছরের শেষে দুই দেশের মধ্যে ৪৪ দিনের যুদ্ধের পর আজারবাইজান বিতর্কিত নাগরনো-কারাবাখসহ দেশটির দখল ভূখণ্ড আর্মেনিয়ার কাছ থেকে মুক্ত করতে সক্ষম হয়। এই যুদ্ধে আজারবাইজানের জয়ে তুরস্কের উদ্ভাবিত ড্রোন প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করে।
আর্মেনিয়ার ইউনিয়ন অব অ্যাডভান্স টেকনোলজি এন্টারপ্রাইজের (ই্উআইটিই) অধীন নতুন ড্রোন প্রকল্পের প্রধান সেডরাক ভারডানিয়ান জানান, ড্রোন তৈরির জন্য বিশেষজ্ঞদের অধীনে আর্মেনিয়া প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছে। এই লক্ষ্যে মোট ৬৫ কর্মশালা খোলা হবে যাতে বিভিন্ন বয়সের ও পেশার লোকেরা অংশ নেবেন।
স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের জন্যও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে জানান তিনি।
ভারডানিয়ান বলেন, ‘এই যুদ্ধ প্রকাশ করেছে, আমরা প্রযুক্তিগত অবস্থানে পিছিয়ে আছি।’
এর আগে সাম্প্রতিক এক সাক্ষাতকারে আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আর্টসরুন ওভানিসিয়ান বলেন, তার দেশের সেনাবাহিনীর তুরস্কের উন্নত ড্রোনের কোনো মোকাবেলাতেই যেতে পারে না।
তিনি বলেন, ‘আর্মেনিয়ার যুদ্ধে পরাজয়ের অন্যতম কারণ তুরস্কের হস্তক্ষেপ।’
সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র দুইটির মধ্যে ১৯৯১ সাল থেকে স্বাধীনতার পর থেকেই সম্পর্কের উত্তেজনা চলে আসছে। ১৯৯৪ সালে আর্মেনিয়ার সেনাবাহিনী আজারবাইজানের অঞ্চল হিসেবে স্বীকৃত নাগরনো-কারাবাখসহ কাছাকাছি সাতটি অঞ্চল দখল করে নিলে এই উত্তেজনা নতুন দিকে মোড় নেয়
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ আর্মেনিয়ার সেনাবাহিনী আজারবাইজানের ভূখণ্ডে বেসামরিক জনগণ ও সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে হামলা চালালে নতুন করে দুই দেশ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে।
প্রায় ছয় সপ্তাহ ধরে চলা এই যুদ্ধে আর্মেনিয়ার কাছ থেকে বেশ কয়েকটি কৌশলগত শহর, প্রায় ৩০০ জনবসতি ও গ্রাম দখলমুক্ত করে আজারবাইজান।
যুদ্ধ বন্ধ করতে ও দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের উদ্দেশে দেশ দু’টি রাশিয়ার মধ্যস্থতায় ১০ নভেম্বর একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে।
যুদ্ধবিরতি তদারক করতে ইতোমধ্যে রাশিয়া ও তুরস্কের যৌথ পরিচালনায় একটি আজারবাইজানের মুক্ত ভূখণ্ড আগদামে একটি মনিটরিং সেন্টার চালু করা হয়েছে।
রাশিয়ার মধ্যস্থতায় সম্পাদিত যুদ্ধবিরতি চুক্তিটি আজারবাইজানের জয় ও আর্মেনিয়ার পরাজয় হিসেবে মনে করা হয়। চুক্তিটির ফলে আর্মেনিয়াকে নাগরনো-কারাবাখ থেকে তাদের সশস্ত্র বাহিনীকে সরিয়ে ফেলতে হচ্ছে।