মার্কিন নিষেধাজ্ঞা চুরমার করে রেকর্ড সংখ্যক ট্রাক্টর রফতানি করেছে ইরান
ইরানি ট্রাক্টর চুরমার করে দিয়েছে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা। ২০১৮ সালে ইরানের ট্রাক্টর উৎপাদনকারী কোম্পানির উপর যখন মার্কিন সরকার নিষেধাজ্ঞা আরোপ তখন এই কোম্পানি প্রতিজ্ঞা করেছিল যে, রপ্তানি বাড়িয়ে মার্কিন ওই অবৈধ পদক্ষেপের শক্ত জবাব দেবে। ইরানি কোম্পানির প্রতিজ্ঞা আজ বাস্তবায়িত হয়েছে।
কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল ফাতহ্ ইবরাহিমি ইরানের ফার্স নিউজ এজেন্সিকে জানিয়েছেন, তাদের সেই লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে। তিনি জানান, চলতি বছরের গত নয় মাসে ইরান থেকে ১৮,০০০ ট্রাক্টর রপ্তানি করা হয়েছে যা থেকে ১১ কোটি ৮০ লাখ ডলার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়। ইরান ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি বা আইটিএমসি হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার মধ্যে সবচেয়ে বড় ট্রাক্টর উৎপাদনকারী কোম্পানি।
আইটিএমসি ১৯৬৮ সালে ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় তাবরিজ শহরে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং রোমানিয়া ও ব্রিটিশ ট্রাক্টর অ্যাসেম্বল করার মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম শুরু করে। ১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লব সফল হওয়ার পর কোম্পানির কর্মতৎপরতা বাড়ে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা আরোপের মাধ্যমে বারবার মার্কিন সরকার ইরানের সমস্ত অর্জন ব্যর্থ করে দেয়ার চেষ্টা করেছে।
ইরানেরট্রাক্টর তৈরির কারখানা
মার্কিন সরকারগুলোর পক্ষ থেকে আরোপ করা নিষেধাজ্ঞার বাইরে ছিল না ইরানের ট্রাক্টর উৎপাদনকারী কোম্পানি আইটিএমসি। তবে প্রতিষ্ঠানটি থেমে থাকে নি। ২০০৯ সালে কোম্পানিটি তার প্রয়োজনের শতকরা ৪০ ভাগ যন্ত্রাংশ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়। অবশ্য, ইঞ্জিনের মতো গুরুত্বপূর্ণ অংশ জার্মানি, ইতালি, তুরস্ক ও চীন থেকে আমদানি অব্যাহত থাকে।
এরপর আসে বড় পরিবর্তন এবং এখন শতকরা ৯০ ভাগ ইঞ্জিন ও গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ দেশেই তৈরি হচ্ছে। বাকি যে ১০ ভাগ যন্ত্রাংশ বিদেশ থেকে আমদানি করা হয় তার মধ্যে রয়েছে বড় টায়ার ও ইনজেক্টর। এ দুটি অংশ তৈরির কারখানা ইরানে নেই। ইবরাহিমি জানান, এ ধরনের কারখানা প্রতিষ্ঠা ইরানের জন্য অর্থনৈতিক দিক দিয়ে লাভজনক হবে না। তিনি বলেন, চীর ও ভারতে তৈরি ট্রাক্টরের চেয়ে ইরানের ট্রাক্টরের মান অবশ্যই ভালো।
ইরানি কোম্পানি আগামী মাসে তাদের চলতি বছরের কার্যক্রম শেষ করবে এবং এ বছর মোট ২২ হাজার ট্রাক্টর উৎপাদন হবে। এক বছর আগে ইরানে ট্রাক্টর উৎপাদন হয়েছিল ১৮,৫০০। আগামী নতুন বছরে ইরান ২৫ হাজার ট্রাক্টর উৎপাদন করবে বলে পরিকল্পনা নিয়েছে