মহড়ার প্রথম দিনে মধ্যপ্রাচ্যে জাহাজ চলাচলে নিরাপত্তার প্রত্যয় ইরান-রাশিয়ার
শুরু হল ইরান ও রাশিয়ার প্রতীক্ষিত নৌ মহড়া। এই মহড়ার প্রথম দিন অতিবাহিত হয়ে গেল আজ। আজ ভোরে ভারত মহাসাগরের উত্তরাঞ্চলে এবং ওমান সাগরের ১৭ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে শুরু হয়েছে ইরান ও রাশিয়ার যৌথ নৌ-মহড়া।
দুই দিনের এই যৌথ নৌ-মহড়ার কয়েকটি উদ্দেশ্য হল দু-দেশের নৌবাহিনীর দক্ষতা বৃদ্ধি, অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং উদ্ধার অভিযানের প্রশিক্ষণ।
এ অঞ্চলে জাহাজ চলাচলে পরিপূর্ণ নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা এবং বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে নৌ-শক্তিতে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষাও এই যৌথ মহড়ার অন্যতম উদ্দেশ্য। ইরানি নৌ-বাহিনীর দক্ষতা ও অন্য শক্তিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার বিষয়টি ফুটিয়ে তোলাও এ মহড়ার অন্যতম লক্ষ্য।
এই নৌ- মহড়ায় ভারতও যোগ দেবে বলে খবর এসেছে।
এ অঞ্চলে শান্তি ও কৌশলগত নিরাপত্তা জোরদারের বার্তা তুলে ধরাও এই মহড়ার অন্যতম প্রধান দিক।
ইরানের নৌ-বাহিনী এর আগেও এ অঞ্চলে বহুজাতিক মহড়ায় অংশ নিয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রাশিয়া ও ইরানের এই যৌথ নৌ-মহড়া মস্কো ও তেহরানের মধ্যে সামরিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারের পথ প্রশস্ত করবে। ফলে এ অঞ্চলে ওয়াশিংটনের অবৈধ ও অসৎ উদ্দেশ্যগুলো অর্জনের চেষ্টা সফল হবে না।
আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ক্ষেত্রে মার্কিন সরকারের সম্প্রসারণকামী ও কর্তৃত্বকামী আচরণের লাগাম টেনে ধরার পথও প্রশস্ত করতে পারে এ ধরনের যৌথ-সামরিক মহড়া।
ইরান আঞ্চলিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কোনো একটি দেশের একাধিপত্য বা মোড়লীপনার বিরোধী। বরং ইরান আঞ্চলিক দেশগুলোর ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা ও পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে স্থানীয় নিরাপত্তার বলয় গড়ে তুলতে চায়। আর এ জন্যই ইরান এ অঞ্চলের নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ‘হরমুজ শান্তি পরিকল্পনা’র প্রস্তাব তুলে ধরেছে আঞ্চলিক দেশগুলোর কাছে।
বিশ্বের কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ নৌ-পথগুলো উন্নয়ন ও নিরাপত্তা এবং বিশ্ব-বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত জরুরি ও অপরিহার্য এক মাধ্যম। তাই সাগর-পথের নিরাপত্তা রক্ষায় ইরান তার নৌ-শক্তিকে উন্নত করার প্রস্তুতি ও অনুশীলন অব্যাহত রাখতে চায়। গত ডিসেম্বর মাসেও ইরান চ’বাহার অঞ্চলে রাশিয়া ও চীনকে সঙ্গে নিয়ে নৌ-মহড়া চালিয়েছে।
কৌশলগত ও আক্রমণাত্মক নৌ-অভিযান চালানোর দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এ ধরনের নৌ-মহড়া খুবই কার্যকর প্রভাব রাখবে। মোটকথা এই যৌথ মহড়া একইসঙ্গে শান্তি, বন্ধুত্ব ও নিরাপত্তা জোরদারের বার্তা তুলে ধরছে