কাশ্মিরে অত্যাচারের কারণে ভারতে আর অস্ত্র সরবরাহ করবে না জার্মানি
পিবিসি নিউজ : কাশ্মিরে মুসলিমদের উপর নির্যাতন এবং গণহত্যায় ব্যবহার করা হতে পারে এই শঙ্কায় ভারতে অস্ত্র আমদানি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জার্মানি। কাশ্মিরে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণ দেখিয়ে জার্মান সরকার ওই দেশের দুটি অস্ত্র বিক্রি প্রতিষ্ঠানকে ভারতের কাছে ছোট অস্ত্র বিক্রির ছাড়পত্র দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। ভারতের টেলিগ্রাফসহ কয়েকটি পত্রিকায় এ খবর দেয়া হয়েছে।
জার্মানি ইউরোপে ভারতের এক নম্বর এবং বিশ্বে ছয় নম্বর বৃহৎ বাণিজ্যিক অংশীদার হয়েও আশঙ্কা করছে, এ সব ছোট অস্ত্র কাশ্মিরের জনগণের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হবে। এর আগেও ভারতের গুজরাট, জম্মু-কাশ্মির, অন্ধ্র প্রদেশ ও মহারাষ্ট্রে মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণ দেখিয়ে ভারতকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ রাখে জার্মানি।
সম্প্রতি বেলজিয়ামের একটি অস্ত্র বিক্রেতাপ্রতিষ্ঠান একই কারণ দেখিয়ে ভারতের স্পেশাল ফ্রন্টিয়ার ফোর্সের (এস এফ এফ ) জন্য ২০ কোটি রুপির ছোট অস্ত্র ও এসল্ট রাইফেলের সরবরাহ বাতিল করে দিয়েছে।
নরেন্দ্র মোদির কাশ্মির সফরের প্রতিবাদে পোস্টার
এদিকে, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন কাশ্মির সফরের প্রতিবাদ জানিয়ে শ্রীনগর ও আশেপাশের এলাকা রাস্তায় গলিতে দেয়াল ও লাইট পোস্টে পোস্টার সাটিয়ে দিয়েছে কাশ্মিরের লোকজন।
আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারির পর যেকোনো দিন নরেন্দ্র মোদির কাশ্মির সফরে যাবার কথা রয়েছে। রোববার কাশ্মির মিডিয়া সার্ভিসেস এক রিপোর্টে জানিয়েছে, কাশ্মিরের পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক এটা দেখানোর জন্য এ সফরের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
কিন্তু দেয়ালে দেয়ালে সাঁটানো ছাপা পোস্টারে উর্দুতে লেখা হয়েছে ‘কাশ্মির নরেন্দ্র মোদির সফরকে প্রত্যাখ্যান করছে। মোদির হাতে কাশ্মিরি জনগণের রক্ত। কাশ্মিরে বিজেপি’র হিন্দুত্ববাদ রোপণ করতে চাইছেন মোদি। জনসংখ্যার অনুপাত বদলে দিয়ে কাশ্মিরের মুসলিম ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির বিলোপ ঘটাত চান নরেন্দ্র মোদি।’
এদিকে, ভারত অধিকৃত জম্মু কাশ্মিরে বিভিন্ন এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে, রাস্তায় ব্যারিকেড ও নিরাপত্তা চৌকি বসিয়ে নিরাপত্তা কঠোর করা হয়েছে। একইসাথে শ্রীনগরের রাস্তায় টহল দিচ্ছে মিলিটারি কনভয়। শুক্রবার বাদ্গাম জেলায় কাশ্মিরি গেরিলাদের সাথে সংঘর্ষে দুজন পুলিশ নিহত হবার প্রেক্ষাপটে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
এরই মধ্যে, বান্দিপোরা জেলায় স্থানীয় দুজন যুবকে আটক করেছে পুলিশ। এলাকায় বিচ্ছিন্নতাকামী যোদ্ধাদের সহায়তা করার অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
এ ছাড়া, সরকারি বাহিনীর উচ্ছেদ তৎপরতা নিয়ে খবর প্রকাশের জন্য বান্দিপোরা এলাকায় সাযাদ গুল নামের একজন সাংবাদিকে আটক করা হয়েছে। সাযাদ গুল কাশ্মির প্রেসক্লাবের কাছে চিঠি পাঠিয়ে জানিয়েছে,
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হচ্ছে যে, সে নাকি পুলিশের উদ্দেশে পাথর ছুঁড়ে মেরেছে।
গতবছর জুনে কাশ্মিরে একটি নিবর্তণমূলক মিডিয়া আইন চালু করে সাংবাদিকদের হয়রানি করা হচ্ছে। এ আইনের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন কাশ্মিরের সাংবাদিকরা।