ম্যারীল্যান্ডে শহীদ জিয়াউর রহমান ওয়ে: অনন্য উদ্যোগ কাজল দম্পতির
কেউ ভাবতে পারেন নি, একদিন আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারীল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের ঐতিহাসিক বাল্টিমোর সিটিতে বাংলাদেশী অধ্যুষিত বাণিজ্যিক এলাকার ব্যস্ত সড়ক ‘স্যারাটোগা স্ট্রীট’এর নাম বদলে যাবে। আর ওই সড়কের নাম হবে ‘জিয়াউর রহমান ওয়ে’ – স্বাধীন বাংলাদেশের স্বাধীনতার অকুতোভয় ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নামে । এমন গৌরবময় অনন্য ইতিহাস গড়ার উদ্যোগ নিলেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী স্থানীয় বিএনপি নেতা মোহাম্মদ কাজল ও তার স্ত্রী ফারহানা লীনা । নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মানিকপুর গ্রামে মোহাম্মদ কাজলের জন্ম।
বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি মরহুম শহীদ জিয়াউর রহমানের নামে ম্যারীল্যান্ডের বাল্টিমোর সিটির ‘স্যারাটোগা স্ট্রীট’এর নাম পরিবর্তন করে ‘জিয়াউর রহমান ওয়ে’ নামকরণের একক উদ্যোক্ততা মোহাম্মদ কাজল নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত দ্বিভাষিক সাপ্তাহিকী ‘রানার নিউজ’এর সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে তার উদ্যোগের পূর্বাপর পটভূমি তুলে ধরেন।
শহীদ জিয়ার প্রতি এমন গভীর ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাবোধের মূল উৎস প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি তার শৈশবে ফিরে যান। স্মরণ করেন ১৯৮১ সনের ৩০ মে’ তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রতিক্রিয়ার কাহিনী।
তিনি বলেন, ওই সময় আমি পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র। হঠাৎ একদিন সঠিক সময় হবার আগেই আমাদের স্কুল ছুটি হয়ে যায়। বলা হয় রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান খুন হবার কারণেই ওই দিন আর কোন ক্লাশ হবে না। ওই বয়সে রাষ্ট্রপতি জিয়া জিয়াউর রহমান সম্পর্কে আমার কোন ধারণা থাকার কথা নয়। তাই তার মৃত্যু আমার মনে তাৎক্ষণিক কোন দাগ কাটে নি।
তবে আমাদের বাড়িতে ঢোকার আগেই অবিরত কান্নার আওয়াজ শুনে আমি ভীষণভাবে ভয় পেয়ে যাই। আমাদের বাড়িতে কেউ কী মরে গেছেন, কিংবা কোন মারাত্মক বিপড়ে পড়েছেন? বাড়িতে গিয়ে দেখি আমার মা-বাবা, পাঁচ চাচা-চাচি, দাদা-দাদি জিয়াউর রহমানের নাম নিয়ে ডুকরে ডুকরে কাঁদছেন। একান্ত আপন লোক মারা গেলে মানুষ যেভাবে কাঁদে। আমাদের বড় পরিবারের সবার সম্মিলিত কান্না আমাকে নির্বাক করেছে। আমি সবার এমন আচরণের তথা শোক প্রকাশের কারণ মোটেই বুঝতে পারি নি।
পরের দিনই বিষয়টি একেবারেই স্পষ্ট হয়ে যায়। সুঠামদেহি আমার দাদার সাথে আমি বাজারে যাচ্ছিলাম। আমাদের স্কুলের মাঠ দিয়ে বাজারে যেতে হতো। মাঠে বসে আমাদের গণিত শিক্ষক জয়নাল আবদিন স্যার ওপরের শ্রেণীর কিছু ছাত্রের কাছে শহীদ জিয়া সম্পর্কে বাজে কথা বলে তাদেরকে বিভ্রান্ত করছিলেন।
আমার দাদা জয়নাল স্যারকে বললেন, খুন হওয়া একজন সৎ ও দেশপ্রেমিক রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে আপনি কেন বাজে মন্তব্য করছেন। দাদার কথা শুনে ওই শিক্ষক আমার দাদাকেও কটূক্তি করলেন। ছয়পুত্রের পিতা দীর্ঘদেহী আমার দাদা ওই শিক্ষকের গালে এতো জোরে চড় মারলেন যে, সাথে সাথে তিনি মাঠে পড়ে যান।
জয়নাল স্যার আমার দাদার চড়ের প্রতিশোধ আমার এবং আমার চাচাতো ভাই-বোন ওপর নিয়েছিলেন। গণিত তথা অংকে আমি এবং আমরা কখনোই পাশ করতে পারি নি। যেনতেন কারণে, এমনকি কোন কারণ ছাড়াই তিনি আমাদেরকে মারধর করতেন। আমি বুঝতে শুরু করেছি আমাদের পরিবারের সদস্যদের শহীদ জিয়ার প্রতি ভালোবাসাই এ ধরনের আচরণের মূল কারণ। স্যারের এমন আচরণ আমাদের বিশাল পরিবারের সবাই, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবাসীদেরকেও জিয়া-প্রেমিক হতে বিশেষভাবে ভূমিকা রাখে। আমাদের ওপর অত্যাচার যতো বাড়ে, শহীদ জিয়াউর রহমানের প্রতি আমার অনুরাগ ও ভালোবাসা ততোধিক বেগে বাড়তে থাকে।
স্কুল জীবনে শহীদ জিয়ার প্রতি আমার ও আমার মুরুব্বিদের সেই গভীর ভালোবাসা আমি আজো লালন করি। যতো বয়স বাড়তে থাকে মহান নেতার প্রতি আমার শ্রদ্ধাবোধ ও মমত্ববোধ তথা দায়িত্ববোধ অন্তর থেকে ততো বেশি অনুভব করি।
সেই কারণেই আমেরিকায় এসে আমি বিএনপি’র সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পড়ি । এরই মধ্যে দ্বিতীয় মেয়াদে শেখ হাসিনা সরকার গঠনের পর প্রকাশ্যে জিয়াবিরোধী অভিযানে নামেন যা, এখনো অব্যাহত রয়েছে। ক্ষমতায় আসার পর থেকে শহীদ জিয়াউর রহমানের নাম রয়েছে এমন সব প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা থেকে তার নাম মুছে ফেলার হিড়িক পড়ে। যদিও শহীদ জিয়া তার সময়ে স্থাপিত কোন স্থাপনার সাথে তার নাম যোগ করেন নি।
অন্যদিকে তার সব কালজয়ী কর্মসুচি, বিশেষত তার ‘স্বনির্ভর বাংলাদেশ’ গঠনের লক্ষ্যে তার ইতিবাচক কর্মসুচি, অধিক ফসল উৎপাদনের লক্ষে খাল খনন কর্মসুচি; গরু-ছাগলের খামার ও পল্ট্রি ফার্ম এবং মৎস্য উৎপাদনে সরকারী সহযোগিতা; শিক্ষা-স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়; সব দেশের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে শত্রুতা নয়’ এমন বহুমুখি বিদেশনীতি; বাংলাদেশকে সবক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তনের সাফল্যসহ তার সব অবদান ইতিহাস থেকে তুলে দিয়ে সম্পূর্ণ বিকৃত ও বানোয়াট তথ্য সম্বলিত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা হয়।
কাজল বলেন, এই ধরনের হিংসা ও বিদ্বেষমূলক দুষ্কর্ম অনেকের মতো আমাকেও চরমভাবে ব্যথিত করে। বিশেষতঃ জিয়া আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের নাম পরিবর্তন আমার কাছে কাটা ঘা’য়ে নুনের ছিটা বলে মনে হয়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে জিয়াবিরোধী এমন অন্যায় অপকর্ম আমার বিবেকে ভীষণভাবে নাড়া দেয়। আমি ভাবতে থাকি জিয়াবিরোধী এমন হিংসাত্মক আচরণের উত্তম জবাব হবে বিদেশের মাটিতে শহীদ জিয়াকে প্রতিষ্ঠিত করার উদ্যোগ নেয়া। তাই আমি আমি মনে মনে ইরাদা করি, আমেরিকাতে মহান নেতা শহীদ জিয়াউর রহমানকে দুনিয়ার অন্যান্য খ্যাতিমান নেতৃবৃন্দের কাতারে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। আর আমেরিকাতে এমন রীতি প্রচলিত আছে।
কাজল জানান, আমি এই সুযোগ গ্রহণে উদ্যোগী হই। আর আমি আমার সর্র্বশক্তি দিয়ে এই কাজে নেমে পড়ি। ম্যারীলান্ডের সিটি মেয়র থেকে শুরু করে সিনেটর, কংগ্রেসম্যান, প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাদের সাথে অবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ গড়ে তুলি। তাদের কেউই শহীদ জিয়ার নামে একটি সড়কের নামকরণের প্রস্তাব প্রত্যাখান করেন নি। কারণ তারা অবশ্যই জানেন শহীদ জিয়াউর রহমান কে, বাংলাদেশের জন্য তার অবদান কী, বিশ্ব রাজনীতিতে তার অবস্থান কোথায়? তার উদার রাজনীতি, উদার গণতান্ত্রিক চেতনা, বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, ওআইসি কর্তৃক শহীদ জিয়াউর রহমানকে ইরাক-ইরান যুদ্ধ বন্ধে মধ্যস্থতার দায়িত্ব প্রদান ইত্যাদি অন্তত আমেরিকানদের কাছে অজানা নয়। স্বদেশের উন্নয়নে তার নানামুখী পদক্ষেপ, বাংলাদেশের জনগণের কাছে তার জনপ্রিয়তা, সর্বোপরি বিশ্বজুড়ে তার গ্রহণযোগ্যতা শহীদ জিয়াউর রহমানকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যায়। জিয়াউর রহমান যে, অনন্য কৃতিমান ব্যক্তিত্ব তা অস্বীকার করার কোন সুযোগ নেই। সব দিক বিবেচনা করলে শহীদ জিয়াউর রহমান বিশ্ববিখ্যাত নেতৃবৃন্দের সমপংক্তীয় বক্তিত্ব স্বীকৃতি পাবার দাবিদার । তাই ব্যাল্টিমোর সিটি কর্তৃপক্ষ সিটির ‘স্যারাটোগা স্ট্রীট’এর নাম বদলে ‘জিয়াউর রহমান ওয়ে’ নামকরণ করাকে একান্তভাবেই সামঞ্জস্যপূর্ণ।
অনেকটাই দুঃস্বাধ্য এ কাজে আপনি কার সহযোগিতা পেয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছে আমি কোন ধরনের সাহায্য চাই নি। এমন কি আমি যে এমন কঠিন কাজে হাত দিয়েছি তা আমার পরিবারের সদস্যরা ছাড়া অন্য কেউই জানতেন না। বিশেষ কারণে ইচ্ছা করেই আমি গোপনীয়তা অবলম্বন করি।
তবে তিনি বলেন, আমার স্ত্রী ফারহানা লীনা ও ছেলে রায়হান আহমেদ সার্বক্ষণিক এই কাজে আমাকে সাহায্য করেন। তাদের সহযোগিতা না পেলে হয়তো আমার উদ্যোগ ব্যর্থ হয়ে যেত।
তিনি জানান ২০১৯ সালে আমার প্রথম উদ্যোগ বিশেষ কারণে সফল হয় নি। এমন ব্যর্থতার পরেও আমি বিষয়টি কাউকেই বলি নি। এমনকি বিএনপি’র কোন পর্যায়ের কোন নেতা-কর্মীকেও আমি কিছুই জানাই নি। ওই ব্যর্থতা আমাকে দমিয়ে রাখতে পারে নি। আমি আমার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখি। ২০২০ সনে সরকারীভাবে সবকিছু নিশ্চিত হবার পরেও কাউকেই জানানো হয় নি। উদ্বোধনের দিন-ক্ষণ (২০ জুন, ২০২১) নির্ধারিত হবার পরেই বিষয়টি সঙ্গত কারণেই সামনে আসে।
‘জিয়াউর রহমান ওয়ে’ ব্যাল্টিমোর সিটি তথা পুরো আমেরিকাতে কী ধরনের প্রভাব ফেলবে বলে আপনি মনে করেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অবশ্যই ‘জিয়াউর রহমান ওয়ে’র সুদূরপ্রসারী প্রভাব থাকবে। আমি এখনই তা অনুভব করছি। আমেরিকা প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটি ছাড়াও বহির্বিশ্বে থাকা জিয়া-প্রেমিকরা এই ধরনের উদ্যোগের সাফল্য দেখে বিশেষভাবে উজ্জীবিত হয়েছেন।
আমেরিকাসহ দুনিয়ার অন্যান্য বহুদেশে অবস্থানকারী বিএনপি নেতাকর্মীরা আমাকে ফোন করে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন তারাও এমন উদ্যোগ নেয়ার সক্রিয় আশা রাখেন। বিশেষ কারণে আমি ওইসব দেশের নাম কিংবা শহরের নাম উল্লেখ করতে চাই না।
এমন সাফল্যে তার অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। মহান আল্লাহ’র কাছে শুকরিয়া তিনি আমার স্বপ্ন পূরণ করেছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নামে একটি সড়কের নাম রাখার অভিযান সফল করার সুযোগ করে দিয়েছেন। এই সাফল্য আমাকে অমর রাষ্ট্রপতির জন্য আরো বড় কিছু করার প্রেরণা যুগিয়েছে। আমার দায়িত্ব শেষ হয় নি, বরং আল্লাহর রহমতে শুরু হয়েছে।
আমার এই সামান্য সাফল্যের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সুযোগ্য উত্তরসুরি আগামীদিনের প্রধানমন্ত্রী বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে জুমের মাধ্যমে যোগদান করে আমাকে ধন্য করেছেন। তিনি আমার স্ত্রীর নাম ধরে তাকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি আমার কাজের স্বীকৃতি দিয়ে আমাকে কেবল কৃতার্থই করেন নি, বরং তার স্বীকৃতি আমাকে আরো বেশি কাজ করতে অনুপ্রাণিত ও উজ্জীবিত করেছে।
কাজল বলেন, কর্মীদের কোন ভালো কাজের স্বীকৃতি দেয়া একজন যোগ্য ও সত্যিকারের নেতার বৈশিষ্ট্য। চেয়ারম্যান তারেক রহমানের তেমন গুণাবলী রয়েছে। আমি মনে করি আমাকে যে আরো অনেক দূর এগিয়ে যেতে হবে, তিনি যেন আমাকে তা-ই বলছেন। ইনশ্লালাহ আমি সেদিকেই এগিয়ে যাব।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শহীদ জিয়াউর রহমানের সুযোগ্য পুত্র তারেক রহমান লন্ডন থেকে জুম’এর মাধ্যমে ছিলেন, যাকে অনেকই বাংলাদেশের ভাবী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিবেচনা করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তারেক রহমানের যোগদান অনুষ্ঠানকে আরো গুরুত্ববহ ও তাৎপর্যমন্ডিত করে।
তিনি তার বক্তব্যের শুরুতে উপস্থিত ম্যারীল্যান্ডস্থ বাংলাদেশী অভিবাসীসহ আমেরিকার রাজনীতিক স্টেট এ্যাসেম্বলীম্যান হ্যারি ভান্ডারী, এ্যাসেম্বলীওম্যান রবিবন টি. লুইস, মেরীল্যান্ড গভর্নর দপ্তরের কমিশনার ড. স্যাম কারকি, বাল্টিমোর সিটি মেয়র দপ্তরের প্রতিনিধি ড. রবার্ট জ্যাকসন তথা হাউস ডেলিগেটসহ উপস্থিত সবাইকে সালাম ও ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমার মরহুম পিতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নামে ‘জিয়াউর রহমান ওয়ে’ নামে সড়কের নামকরণে ম্যারীল্যান্ড প্রবাসী বাংলাদেশীদের অনন্য উদ্যোগে আমি গভীরভাবে আনন্দিত। আমি ও আমার পুরো পরিবারের পক্ষ থেকে এই মহতী উদ্যোগের সাথে জড়িত সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।
বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমার বাবা পশ্চিম পাকিস্তানের স্বৈরতান্ত্রিক শোষণ ও অত্যাচারের ইতি টানার উদ্দেশ্যে জনগণের রাজিৈতক, অর্থনেতিক ও নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার স্বপ্প বাস্তবায়নের জন্য স্বাধীনতার ঘোষণা তিনি একদলীয় শাসনের অবসান ঘটিয়ে বহুদলীয় পূর্ণাঙ্গ বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ধারা প্রতিষ্ঠিত করেন, যাতে জনগণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় তাদের নির্বাহী নেতৃত্ব নির্বাচিত করতে পারেন।
তারেক রহমান তার পিতার কৃতিত্ব স্মরণ করে বলেন, শহীদ জিয়া রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে আমেরিকার সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের আমন্ত্রণে তিনি সরকারীভাবে আমেরিকা সফর করেন। শহীদ জিয়া মুক্ত দুনিয়ার অনুরাগী ছিলেন এবং তিনি বৈশ্বিক অথবা বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন জাতিসমূহের সাথে শান্তিপূর্ণ যোগাযোগ সমর্থন করতেন ।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশী তৈরি পোশাকের বিশাল বাজার সৃষ্টির পিছনে শহীদ জিয়ার অবদানের প্রতি ইঙ্গিত করে তারেক রহমান বলেন, তিনিই বাংলাদেশে বয়নশিল্পের (টেকস্টাইল ইন্ডাস্ট্রী) সুষ্পষ্ট কাঠামো তথা ভিত্তি তৈরি করেন , যা আমাদের দেশের তৈরি পোশাককে বিশ্ববাজারে প্রবেশের পথ খুলে দেয়।
তিনি বলেন দুঃখজনক হলো ১৯৮১ সনে জিয়াউর রহমান আততায়ীর হাতে শহীদ হন। আমাদের কাছে রেখে যান তার অমর মূল্যবোধ, স্বপ্ন ও আদর্শ । সারা দুনিয়াব্যাপী যারা ওই অনুষ্ঠান দেখেছেন তাদেরকে জিয়াউর রহমানের মূল্যবোধ, স্বপ্ন ও আদর্শ উর্দ্ধে তুলে ধরার জন্য আহ্বান জানান। আরা যারা এখানে আছি এবং বিশ্বের যেকোন জায়গাতেই বসবাস করি, আসুন আমরা সবাই তার অমূল্য আদর্শ, মূল্যবোধ, স্বপ্ন, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের ঝান্ডা উর্দ্ধে তুলে ধরি।
তিনি পুনরায় বলেন, ম্যারীল্যান্ডে আমার পিতার নামে ‘জিয়াউর রহমান হয়ে’ সড়কের নামকরণে আমি গভীরভাবে সম্মানিতবোধ করছি।
পরিশেষে তিনি ম্যারল্যান্ডে সড়কের নাম ‘জিয়াউর রহমান ওয়ে’ নামকরণে অনন্য উদ্যোগের জন্য মোহাম্মদ কাজল ও তার স্ত্রী ফারহানা লীনাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান। তিনি ম্যারীল্যান্ডপ্রবাসী বাংলাদেশী, এ্যাস্মেবলীম্যান, এ্যাস্মেবলী ওম্যান, হাউজ ডেলিগেটসহ উপস্থিত সবাইকে এই মহতি অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আপনাদের সাথে যোগ দিতে পেরে আমি নিজেকে সম্মানিত মনে করছি।
উল্লেখ্য, এই অনুষ্ঠানে ম্যারীল্যান্ড ছাড়াও ওয়াশিংটন ডি.সি., ভার্জিনিয়া, পেনসালভানিয়া, নিউইয়র্ক প্রভৃতি অঙ্গরাজ্য থেকে বিপুল সংখ্যক বিএনপি নেতাকর্মী, এবং সাংবাদিকরা যোগ দেন । *
৩০ জুলাই, ২০২১
[সাক্ষাৎকার গ্রহণে মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, সম্পাদক, রানার নিউজ, নিউইয়র্ক]
**************