ভরা পদ্মায় বালির ব্যাগ ফেলছে পানি উন্নয়ন বোর্ড
পিবিসি নিউজঃ উজান থেকে বয়ে আসা পানির তোড়ে পদ্মার দু’কূল যখন ফুঁসে উঠেছে, তখন ভেসে যাওয়ার ঝুঁকিতে বালির ব্যাগ ফেলা শুরু হয়েছে রাজশাহী মহানগরীর জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র টি-গ্রোয়েনে (বাঁধ)। গত বৃহস্পতিবার থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এসব বালির ব্যাগ ফেলা শুরু করে।
এছাড়াও বৃহস্পতিবার থেকে জনগণের নিরাপত্তার জন্য সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে পাউবো কর্তৃপক্ষ বন্ধ করে দিয়েছে ওই বাঁধের প্রবেশের সব পথ। এরপর সেখানে জিও বালির ব্যাগ ফেলতে শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, কর্তৃপক্ষ শুষ্ক মৌসুমে আলসেমি করে। পরে বর্ষায় পানি বাড়ার পর তারা ভাঙনরোধে বালির ব্যাগ ফেলা শুরু করে। এটা একপ্রকারের অর্থহীন কাজ।
আমজাদ হোসেন নামে স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘এ সময় ঠিকাদার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন মিলে অল্প কিছু বালির ব্যাগ ফেলে। পরে খাতা-কলমে দেখায় যে প্রচুর ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। এতে দুর্নীতি করা সহজ হয়।’
তবে স্থানীয়দের এমন অভিযোগ অস্বীকার করেন রাজশাহী অঞ্চলে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম শেখ। যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, স্থানীয়দের অভিযোগ সত্য নয়। আমরা শুষ্ক মৌসুমেও কাজ করেছি। গত জুন থেকে কংক্রিট ব্লক ও বালির ব্যাগ ফেলা শুরু করেছি। যথাযথ মূল্যায়ন ও জরিপের পর আমরা এখন বালির বস্তা ফেলছি। বর্তমানে নদীতে প্রবল স্রোত থাকার কারণে টি-বাঁধটি অরক্ষিত হয়ে পড়েছে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, চলতি বর্ষা মৌসুমে ওই বাঁধে কমপক্ষে ১৬ হাজার বালির বস্তা ফেলার পরিকল্পনা ছিল। ইতোমধ্যে সেখানে প্রায় ১৪ হাজার ব্যাগ ফেলা হয়েছে। এখানে অন্যায় বা দুর্নীতির করার কোন সুযোগ নেই।
নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, এখানে একটি টাস্কফোর্স আছে। টাস্কফোর্সে স্থানীয় সংসদ সদস্যের প্রতিনিধি, জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধিরা থাকেন। তাদের উপস্থিতিতে বালির ব্যাগ গুনে গুনে নদীতে ফেলা হয়। প্রতিটি বালির ব্যাগে ৪৫০ টাকা খরচ হয় বলেও জানান তিনি।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, টি-বাঁধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের একজন সার্ভেয়ার ও কর্মরত শ্রমিকরা ছাড়া বালির ব্যাগ গুনতে অন্য কাউকে দেখা যায়নি। সেখানে মাত্র ২০ জন শ্রমিককে একটি নৌকায় করে বালির ব্যাগ ফেলতে দেখা গেছে। শ্রমিকরা নদীর বাম তীর থেকে জিওটেক্সটাইল ব্যাগে বালু ভর্তি করে নৌকায় বহন করে বাঁধ পয়েন্টে নিয়ে ফেলছে।
প্রসঙ্গত, ব্রিটিশ আমলে নির্মিত হয় টি-বাঁধ। এরপর ৯০ এর দশকের শেষের দিকে এটা মেরামত করা হয়েছিল। পাউবো টি-বাঁধের সংস্কারের প্রস্তাব দিলেও প্রকল্পটি এখনও অনুমোদিত হয়নি।