ফ্যাসিবাদ ও মুক্ত গণমাধ্যম কখনো একসাথে যায় না : ফখরুল
পিবিসি নিউজঃ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ফ্যাসিবাদের সাথে মুক্ত গণতন্ত্র ও মুক্ত গণমাধ্যম কখনো একসাথে যায় না। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ গুম, খুন ও নির্যাতনের মাধ্যমে অস্ত্রের মুখে টিকে থাকার কৌশল নিয়েছে।
শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) বার্ষিক সাধারণ সভায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ফ্যাসিবাদের সাথে মুক্ত গণতন্ত্র ও মুক্ত গণমাধ্যম কখনো একসাথে যায় না। ফ্যাসিবাদ মানেই হলো ভয়ভীতি, ত্রাস সৃষ্টি করে মানুষের অধিকারগুলোকে কেড়ে নেয়া। গুম, খুন ও নির্যাতনের মাধ্যমে অস্ত্রের মুখে টিকে থাকা। যে কৌশল আজকে আওয়ামী লীগ সেটাই বেছে নিয়েছে।
তিনি বলেন, একটি মুক্ত সমাজ, দেশ ও গণতন্ত্রের জন্য আমরা ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করেছিলাম। আওয়ামী লীগ আমাদের সেই আশা-আকাঙ্ক্ষাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা এর আগেও বাকশাল গঠন করেছিল এবং এখনো গণতন্ত্রের মুখোশ পরে বিভিন্ন আঙ্গিকে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে আমাদের সমস্ত অধিকারগুলোকে কেড়ে নিয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ২০১২ সালে বিচারপতি খায়রুল হক তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বাতিল করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছিলেন। আওয়ামী লীগ সেটাকে লুফে নিয়ে বাস্তবায়ন করেছে। যার ফলে আজকে নির্বাচন ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে।
দেশ এখন রাজনীতিবিদরা পরিচালনা করছে না মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, একজন রাজনীতিবিদকে সিকিউরিটি হিসেবে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। তাকে দিয়ে গণতন্ত্র বিরোধী সব কাজগুলো করিয়ে নিচ্ছে। তারা রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুপরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে সংসদে জনগণের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৫৪ জনকে নির্বাচিত করেছে। ২০১৮ সালে তারা আগের রাতেই ভোট ডাকাতি করেছে। এই আওয়ামী লীগই ’৭২-৭৫-এ চারটি সংবাদমাধ্যম ছাড়া সব সংবাদমাধ্যম নিষিদ্ধ করেছিল। সংবাদমাধ্যমকে পুরোপুরি দলীয়করণ করা হয়েছিলেন। আমি ধন্যবাদ জানাই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে, যিনি স্বৈরাচার এরশাদের হাত থেকে একটি গণতন্ত্র ব্যবস্থা ফিরিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিলেন। আমাদের বাক ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা উন্মুক্ত করে দিয়েছিলেন।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমরা একটি ভয়াবহ দুঃসময় অতিক্রম করছি। আজকে একটি সরকার জবরদখল করে বসে আছে। যারা আমাদের ৫০ বছরের সকল অর্জনকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এই দুঃসময় শুধু সংবাদমাধ্যমের নয়, এই দুঃসময় শুধু বিএনপির নয়। এই দুঃসময় পুরো জাতির জন্য।
নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানটি সম্পূর্ণভাবে একটি আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। আবার শোনা যাচ্ছে নতুন করে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। কেউ বলছে এটার জন্য একটি আইন করা দরকার। কিন্তু আইনটা করবে কে? সংসদে তো আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্যকিছু নেই। যারা এদেশে গণতন্ত্রকে হরণ করে এদেশের মানুষের অধিকারগুলো কেড়ে নিয়েছে তারাই আজকে এই আইনটি করবে।
ডিইউজে সভাপতি কাদের গনি চৌধুরীর সভাপতিত্বে এসময় জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, বিএফইউজের সভাপতি এম আব্দুল্লাহ, মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, বিএফইউজের সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, ডিইউজের সাবেক সভাপতি কবি আব্দুল হাই শিকদার, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন সবুজ, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ডিইউজের সাবেক সভাপতি বাকের হোসেন, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, ডিআরইউ সভাপতি মুরসালিন নোমানী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।