ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর
পিবিসি নিউজঃ দুই নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।
সোমবার রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে ওই দু’জনকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়।
তারা হলেন, মিন্টু ওরফে কালু (৩৬) ও আজিজ ওরফে আজিজুল (৩৬)।
রাত ১১টা ৫৮ মিনিটে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার তুহিন কান্তি খান উপস্থিত সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
ফাঁসি কার্যকরের আগে কারাগারে প্রবেশ করেন ডিআইজি (প্রিজন) ছগির মিয়া,
জেলা যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আসিফ ইকবাল, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী সায়েমুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম, সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীনসহ সরকারি কর্মকর্তারা।
ব্রিফিংয়ে জেলার বলেন, মরদেহ তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
এদিকে, রাতেই মরদেহ নিতে আজিজের বড় ভাই সভা মিয়া ও ভাইপো মিজানুর রহমান এবং মিন্টুর চাচাতো ভাই ইকরামুল ও এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান কারাগারে এসেছেন।
গত শনিবার (০২ অক্টোবর) মিন্টু ও আজিজুলের সঙ্গে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে শেষবারের মতো দেখা করে তার পরিবার। ওই সময় স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
চুয়াডাঙ্গা আদালত সূত্র ও মামলার বিবরণীতে জানা যায়, আলমডাঙ্গা থানার জোড়গাছা হাজিরপাড়া গ্রামের কমেলা খাতুন এবং তার বান্ধবী ফিঙ্গে বেগমকে ২০০৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রায়লক্ষ্মীপুর গ্রামের মাঠে হত্যা করা হয়। হত্যার আগে তাদের ধর্ষণ করা হয় বলে পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধের পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে গলা কাটা হয় ওই দুই নারীর।
নিহত কমেলা খাতুনের মেয়ে নারগিস বেগম হত্যার পর দিন ২৮ সেপ্টেম্বর চুয়াডাঙ্গা থানায় মামলা করেন। মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত ওই দু’জনসহ চার জনকে আসামি করা হয়।
অপর দু’জন হলেন- একই গ্রামের সুজন ও মহি। মামলা বিচারাধীন অবস্থায় মারা যান আসামি মহি।
২০০৭ সালের ২৬ জুলাই চুয়াডাঙ্গার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল সুজন, আজিজ ও মিন্টুর মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন। এরপর আসামিপক্ষ হাইকোর্টে আপিল করেন। পরে ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল শুনানি শেষে ২০১২ সালে ১১ নভেম্বর নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখার আদেশ দেন হাইকোর্ট।
চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ দুই আসামির রায় বহাল রাখেন এবং অপর আসামি সুজনকে খালাস দেন। গত ২০ জুলাই যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান সুজন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা পরে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা করলে তাও নামঞ্জুর হয়। ০৬ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে কারা অধিদফতরকে চিঠি দেওয়া হয়। যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার ০৮ সেপ্টেম্বর সেই চিঠি গ্রহণ করে।