মুদি দোকানি থেকে মানবপাচারকারীদের প্রধান
পিবিসি নিউজঃ সাইফুল ইসলাম ওরফে টুটুলের (৩৮) বাড়ি মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কামন্দী গ্রামে। এইচএসসি পাস টুটুল ছিলেন মুদি দোকানদার। ঢাকায় নিয়মিত আসা যাওয়া করতেন তিনি। এক পর্যায়ে অধিক অর্থ আয়ের লোভে জড়িয়ে পড়েন মানবপাচার চক্রে।
শুরুতে চক্রের দালাল হিসেবে বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে বিদেশে লোক পাঠানোর কাজ করতেন টুটুল। পরে নিজেই খোলেন তিনটি ওভারসিজ প্রতিষ্ঠান। তবে ওই তিন প্রতিষ্ঠানের বৈধতা না থাকায় অন্য বৈধ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বেকার ও শিক্ষিত অর্ধশতাধিক নারী-পুরুষকে বিদেশে পাচার করেন তিনি। হাতিয়ে নেন কোটি টাকা।
টুটুলের এ প্রতারণার কাজে অন্যতম সহযোগী মো. তৈয়ব আলী (৪৫)। চায়ের দোকানদার হলেও পরিচয় দেন স্বনামধন্য এয়ারলাইন্সের ম্যানেজার হিসেবে। এর আড়ালে টুটুলের মানবপাচার চক্রের সহায়তায় অসংখ্য মানুষকে প্রতারণার মাধ্যমে বিদেশে প্রেরণ এবং দেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেয়ার নামে প্রতারণা করে হাতিয়ে নেন লাখ লাখ টাকা।
মুদি দোকানদার থেকে তিন ওভারসিজ মালিক বনে যাওয়া মধ্যপ্রাচ্যে মানবপাচারকারী চক্রের অন্যতম হোতা টুটুল ও সহযোগী তৈয়বসহ ৮ জনকে গ্রেফতারের পর চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য জানিয়েছে র্যাব-৪।
গ্রেফতার হওয়া বাকিরা হলেন, গোপালগঞ্জের শাহ্ মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন লিমন (৩৮), মেহেরপুরের মো. মারুফ হাসান (৩৭), জাহাঙ্গীর আলম (৩৮) ও লালটু ইসলাম (২৮), শরীয়তপুরের আলামিন হোসাইন (৩০), কুষ্টিয়ার আব্দুল্লাহ আল মামুন (৫৪)।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৪ এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, সম্প্রতি কয়েকজন নারী ভিকটিমের অভিভাবকের মধ্যপ্রাচ্যে মানবপাচার সংক্রান্ত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে র্যাব-৪ ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত বাড্ডা থানার লিংক রোডে অবস্থিত টুটুল ওভারসিজ, লিমন ওভারসিজ ও লয়াল ওভারসিজে অভিযান চালায় র্যাব। অভিযানে দুই নারীসহ চারজন ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়। এছাড়া ১০টি পাসপোর্ট, ৭টি ফাইল, ৪টি সিল, ১৭টি মোবাইল, ৫টি রেজিস্টার, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই, ২টি কম্পিউটার, ৩টি লিফলেট ও নগদ ১০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। এ সময় মানবপাচারকারী চক্রের আট সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রতারক টুটুল ও তৈয়বের উত্থান
র্যাব কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক বলেন, এইচএসসি পাস টুটুল মেহেরপুরের গাংনী থানার কামন্দী গ্রামে মুদি দোকানদার ছিলেন। মাঝে-মধ্যে ঢাকায় আসতেন। লোভে পড়ে মানবপাচারকারী চক্রে জড়িয়ে পড়েন। শুরুতে চক্রের দালাল হিসেবে বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে বিদেশে লোক পাঠানো শুরু করেন। পরে নিজেই রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় খুলে বসেন টুটুল ওভারসিজ, লিমন ওভারসিজ ও লয়াল ওভারসিজ নামে তিন এজেন্সি