মেয়র পদও হারাচ্ছেন আব্বাস, যেকোন সময় গ্রেফতার
পিবিসি নিউজঃ রাজশাহীর কাটাখালি পৌরসভার মেয়র পদও হারাচ্ছেন আব্বাস আলী। ১২ কাউন্সিলরের অনাস্থায় মেয়র পদ থেকে তাকে বরখাস্তের প্রক্রিয়া চলছে জেলা প্রশাসনে। এছাড়াও যেকোন সময় গ্রেফতার হতে পারেন এই বিতর্কিত মেয়র।
রাজশাহী সিটি করর্পোরেশনের (রাসিক) ১৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল মোমিনের দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তাকে গ্রেফতারের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। মহানগরের বোয়ালিয়া মডেল থানায় এই মামলাটি দায়ের করা হয়। এছাড়াও মহানগরের রাজপাড়া ও চন্দ্রিমা থানায় আরও দুইটি মামলা দায়ের করা হয়েছে মেয়র আব্বাসের বিরুদ্ধে।
এদিকে রাজশাহী জেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকেও তার বিরুদ্ধে আরেকটি মামলার প্রস্তুতি চলছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটুক্তি ও অবমাননাকর বক্তব্য দিয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন বিতর্কিত মেয়র আব্বাস আলী।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-কমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, বিষয়টি অমাদের পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তা দেখছেন। তদন্ত ও প্রমাণ সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।
মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তঅ (ওসি) নিবারণ চন্দ্র বর্মণ বলেন, মেয়র আব্বাসের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার তদন্ত চলছে। অডিও ক্লিপটির সত্যতা যাচাইয়ে একজন এক্সপার্টিজের সাহায্য নেয়া হয়েছে। এছাড়াও ২৬ নভেম্বর বিকেলে মেয়র আব্বাস নিজেই ফেসবুক লাইভে এসে স্বীকারোক্তি দিয়ে ক্ষমা চাওয়ার মাধ্যমে তা প্রমাণ করেছে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটুক্তি ও বিতর্কিত বক্তব্য তার। এতে তার দোষ প্রমাণিত হয়েছে।
ওসি আরও বলেন, মেয়র আব্বাসের গ্রেফতারের জন্য দুটো আলামতই যথেষ্ট। একটা হচ্ছে অডিও ক্লিপ ও দ্বিতীয়টি তার ফেসবুকে এসে মাফ চাওয়া। এই দুটো জিনিসই যথেষ্ট। বর্তমানে তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন। তার অবস্থান খোঁজার জন্য আমাদের সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সহায়তা নিচ্ছি। আশা করছি, যেকোনো মুহূর্তে মেয়র আব্বাসকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হবো।
মেয়র আব্বাসকে গ্রেফতারের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কোনো অনুমতিপত্রের প্রয়োজন আছে কিনা? জানতে চাইলে ওসি নিবারণ বলেন, যদি সন্ত্রাস দমন আইনের মামলা হতো তাহলে স্থানীয় সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে তাকে গ্রেফতার করতে হতো। কিন্তু তার অপরাধটি সিআরপিসি জাতীয় মামলার। এ মামলায় ‘সেনশন অর্ডার বা পূর্বানুমতির’ প্রয়োজন নেই। তারপরও পুলিশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি চিঠি জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে দেয়া হয়েছে। তবে সেটির বাধ্যবাধকতা নেই, শুধুমাত্র জানিয়ে রাখা আরকি।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, পৌরসভার কাউন্সিলরদের প্রদান করা অনাস্থা পত্র ও পৌরসভার রেজুলেশনের কাগজাদি আমি গ্রহণ করেছি। এখন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আইন অনুযায়ী এ বিষয়ে পর্যালোচনা করে একটি প্রতিবেদন ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, মেয়র আব্বাসের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার কাগজটিও হাতে এসেছে। সেটির একটি প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেছি। এখন মন্ত্রণালয় থেকে পরবর্তী নির্দেশনা আশার পর সে অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আশা করছি, পজিটিভ রেজাল্ট আসবে।
রাজশাহী জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনিল কুমার সরকার বলেন, মেয়র আব্বাসকে জেলা ও পৌরসভা আওয়ামীলীগের পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। দলের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে আজীবনের জন্য বহিস্কারের সুপারিশ করে শনিবার সকালে ডাকযোগে কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে জেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে আরও একটি মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান এও নেতা।