সম্পাদকের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি, ব্যর্থ ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রলীগ
পিবিসি নিউজঃ নানা অনিয়মের অভিযোগে ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী তিন কার্য দিবসের মধ্যে সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন কেন্দ্রীয় দপ্তর সেলে জমা দেয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলো আব্দুল জব্বার রাজ ও মোঃ সামাদ আজাদ জুলফিকার।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারন সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
এদিকে এক বছরের জন্য ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হলেও চার বছর পার হয়ে গেছে। এই সময়ে তারা নিজেদের পুর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করতে পারলেও নিজেদের অধিনস্ত কোন কমিটির অনুমোদন দিতে পারেনি। এছাড়া মেয়াদ উত্তীর্ণ বিভিন্ন ইউনিট কমিটির নেতাকর্মীরা বিয়ে করে সংসার শুরুর পাশাপাশি অনেক নেতার বিরুদ্ধে রয়েছে হত্যাসহ বিভিন্ন মামলা।
ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রলীগের অধীনে উপজেলা, থানা ও সরকারি কলেজসহ ৮টি ইউনিট রয়েছে। কিন্তু সেগুলো এখন হয় মেয়াদউত্তীর্ণ না হয় বিলুপ্ত। স্বয়ং ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রলীগের কমিটি বর্তমানে মেয়াদোত্তীর্ণ। অনেকের ছাত্রলীগের বয়স পর্যন্ত নেই। এভাবেই মুখ থুবড়ে পড়ে আছে এসব কমিটির সাংগঠনিক কার্যক্রম।
সাভার সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি অমিত দত্ত বলেন, সর্বশেষ কমিটি ঘোষণা করা হয় ২০১৫ সালে। তখন থেকে আমিই সভাপতি। তবে বর্তমানে কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ। সেন্ট্রাল কমিটি থেকে কবে নতুন কমিটি দেয়া হবে আমার জানা নাই।
ধামরাই সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, কাগজে কলমে এখন ধামরাইয়ের কোন ছাত্রলীগের ইউনিটে কমিটি নাই। ধামরাইয়ে দুই সাবেক ও বর্তমান সাংসদের কোন্দলের কারণে কমিটিগুলো হয়না বলে দাবি করেন তিনি।
সাভার পৌর ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা এখন ছাত্র রাজনীতির বাইরে। বিয়ে করে পেতেছেন সংসারও। এই কমিটির সভাপতি আতাউর রহমান অভি বলেন, আমাদের কমিটি ২০১৫ সালে গঠন করা হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন হয় ২০১৬ সালে। এই কমিটির সভাপতি আমি। এর পর আর কোন কমিটি দেওয়া হয়নি। আমি গত ২ বছর হলো বিয়ে করেছি। কমিটির সাধারণ সম্পাদক রুবেল মন্ডলও বিবাহিত। উপজেলা ছাত্রলীগেরও একই অবস্থা। ২০১৫ সালে সাভার কলেজ, সাভার পৌর ও আশুলিয়া থানাসহ আমাদের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু সব গুলো এখন মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জব্বার রাজ বলেন, ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রলীগ নিজেদের কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা ছাড়া নিজেদের স্বাক্ষরে কোন কমিটি এখনও দিতে পারেননি। সেন্ট্রাল থেকে আশুলিয়া থানা ছাত্রলীগের কমিটি করতে বলা হলেও তা পারেন নি। এ পর্যন্ত কোন কমিটি না দিতে পারায় তাদের সফল বলা যায়না, তাদের ব্যর্থই বলা যায়।
অন্যদিকে ঢাকা জেলা উত্তরের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে হত্যা মামলার আসামি, মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে বিতর্কিতরাও স্থান পেয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তাদের নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমাদের কাছে অভিযোগ আসলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নিতাম। কিন্তু কোন অভিযোগ আসেনি।
ঢাকা জেলা উত্তরের সভাপতি সাইদুল ইসলাম বলেন, মেয়াদ উত্তীর্ণ বলে কোন কথা নাই। সারা বাংলাদেশে আওয়ামীলীগ-যুবলীগ-ছাত্রলীগ কোন কিছুর নির্দিষ্ট মেয়াদ আছে? সবই তো মেয়াদ শেষ। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নিয়ম অনুযায়ী কমিটি হইছে, কমিটি পূর্ণাঙ্গও হইছে। মেয়াদ উত্তীর্ণ তো সবই। মেয়াদ কোন ইস্যু না। সেন্ট্রাল মনে করলে কমিটি হবে।