আ’লীগের মনোনয়ন তালিকায় ফের বিএনপি নেতার নাম
পিবিসি নিউজঃ কেন্দ্রে পাঠানো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর ইউনিয়ন আ’লীগের মনোনয়ন তালিকায় ফের বিএনপি নেতার নাম রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আওয়ামী লীগের উপজেলা ও জেলা শাখার নেতাদের এমন ঘটনায় তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, গত ০১ ডিসেম্বর (বুধবার) আশুগঞ্জ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের জন্যে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা পাঠানো হয়। গত ৩০ নভেম্বর ওই উপজেলার ইউনিয়নগুলোয় দলীয় প্রার্থী ঠিক করার সভা ভোটের মাধ্যমে প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া ছাড়াই শেষ হয়।
পর দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে বসে ঢাকায় পাঠানোর জন্য ইউনিয়নভিত্তিক নামের তালিকা তৈরি করেন আশুগঞ্জ উপজেলা শাখা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক সফিউল্লাহ মিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আবু নাসের আহমেদ, হানিফ মুন্সী ও খোরশেদ আলম। সে সময় জেলা কমিটির কয়েকজন দায়িত্বশীল নেতাও উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র আরও জানায়, তালশহর ইউনিয়নের প্রার্থী হিসেবে যে তিন জনের নাম প্রস্তাব করা হয় তাতে ১ নম্বরে আছেন ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সুলেমান সেকান্দর ওরফে সুলেমান মিয়া।
স্থানীয় বিএনপি নেতারা সাংবাদিকদের বলেন, সুলেমান ও তার পরিবার বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তার বড় ভাই মো. হারুন অর রশিদ দলের দাতা সদস্য হিসেবে পরিচিত।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০৯ সালের ২৫ নভেম্বর তালশহর ইউনিয়ন বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ২৮ নম্বর সদস্য হিসেবে সুলেমান মিয়ার নাম রয়েছে। তার বড় ভাই হারুন অর রশিদের নাম রয়েছে ২৫ নম্বর সদস্য হিসেবে।পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে ২০১৭ সালের ০১ মে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটিতে সুলেমান মিয়াকে ১৫ নম্বর সদস্য হিসেবে রাখা হয়। এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হলে ইউনিয়ন শাখা আওয়ামী লীগের নেতারা তাকে বহিষ্কার করেন।
তালশহর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. হারুন অর রশিদ ও সাধারণ সম্পাদক মো. রাকিবুল হাফেজ স্বাক্ষরিত বহিষ্কারাদেশের চিঠিতে বিএনপির পদ-পদবির তথ্য গোপন করে সুলেমান মিয়া আওয়ামী লীগে যোগ দেন বলে উল্লেখ করা হয়। এমনকি, অনুপ্রবেশকারী হিসেবে তাকে সদস্য পদ থেকেও তাকে বহিষ্কারের কথা বলা হয়।
সুলেমান মিয়া নিজেকে তালশহর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বলে দাবি করেন।
তালশহর ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘সুলেমান মিয়া বিএনপির রাজনীতি করার কারণে আমরা তাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছিলাম। পরবর্তীতে তিনি একটি পকেট কমিটি করেছেন। সেই কমিটির বৈধতা নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের কমিটি ২০১৭ সালের সম্মেলনের মাধ্যমে হয়েছে এবং উপজেলা ও জেলা শাখা সেই কমিটি অনুমোদন দিয়েছে। সুলেমান নিজেকে যে কমিটির সভাপতি দাবি করেন সেটি বৈধ কমিটি নয়’।
আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আবু নাছের আহমেদ বলেন, ‘সুলেমান মিয়া বিএনপি করতো তা সঠিক। আওয়ামী লীগের কমিটি থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। তাকে কেন চেয়ারম্যান পদে সুপারিশ করা হয়েছে তা আমার জানা নেই।’
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার বলেন, ‘উপজেলা আওয়ামী লীগের মাধ্যমে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের তালিকা জমা দেওয়া হয়েছে। সুলেমানের বিষয়ে আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেননি।’
২০২২ সালের ০৫ জানুয়ারি পঞ্চম ধাপে আশুগঞ্জ উপজেলার আটটি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ করা হবে।