বাংলাদেশ ভারতের পক্ষে যাবে না
পিবিসি নিউজঃ ‘ফরেন পলিসি’, ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত এই আমেরিকান পত্রিকা; দীর্ঘ দিন ধরে এটি মূলত ডিপ্লোমেসি ও রাজনীতিক ইস্যু নিয়ে চর্চার এক ম্যাগাজিন। আর বলাবাহুল্য, এ কাজ তারা আমেরিকান স্বার্থের দিক থেকে দেখে করে থাকে। বাইডেন ক্ষমতায় আসার আগে এই ম্যাগাজিনের অনুসৃত লাইন যাই থাক, চলতি বছর থেকে এটি এখন বাইডেনের বড় সাপোর্টিং পত্রিকা; বিশেষ করে সাউথ এশিয়ার জন্য আর তা কাভার করার দিক থেকে। মাইকেল কুগেলম্যান ‘উড্রো উইলসন সেন্টার’ থিংকট্যাংকের ডেপুটি প্রোগাম ডিরেক্টর ও সিনিয়র ফেলো। তিনি এখন এই পত্রিকায় নিয়মিত এক সাপ্তাহিক ‘সাউথ এশিয়া ব্রিফ’ লেখা তত্ত্বাবধান ও প্রকাশ করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত যেটা আসলে বাইডেনের সাউথ এশিয়া নীতির ছাপে ও পক্ষে এ অঞ্চলের বার্নিং ইস্যুগুলোতে তুলে ধরা। আর তাতে এ অঞ্চলের খুঁটিনাটি ইস্যুতে বাইডেন প্রশাসনের মনোভাব সম্পর্কেও আঁচ পাওয়া যায়। এ ছাড়া অনেক সময় এ অঞ্চলের মিডিয়াগুলো কী লিখেছে তার ছোটখাটো রিভিউও দেখতে পাওয়া যায় এই ‘সাউথ এশিয়া ব্রিফে’। অর্থাৎ বাইডেনের পক্ষেরই যেন এটি একটা আলাদা ভার্সন কিন্তু যারা বাইডেন প্রশাসনের সাথে অ-সরকারিভাবে ও ইনফরমালি যুক্ত।
এ দিকে চলতি শতক থেকে প্রায়ই আমেরিকান প্রশাসনকে অনেকে ‘বুড়া সিংহ’ বলে থাকে। পঁচাত্তর বছর ধরে আমেরিকা দুনিয়াকে ভালো-মন্দ যাই হোক একভাবে দাবড়িয়ে নেতৃত্ব দিয়ে এসেছে। কিন্তু তার সেসব বহু সক্ষমতাই আজ আর নেই; বিগত যৌবন হয়ে গেছে। ফলে যেন এটি এখনো সিংহ তবে চামড়া ঢলে পড়া বুড়া সিংহ হয়ে গেছে।
গত ১৯৪৫ সালকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে একটা ভালো ‘জংশনের বছর’ বলা যায়। এই জংশন হলো, এক দিকে দুনিয়ায় বিশ্বযুদ্ধে ভেঙে পড়া পুরনো রাজনৈতিক অর্ডার মানে ওর অবশিষ্ট নিয়ম শৃঙ্খলাগুলো ক্রমেই সে ত্যাগ করছে আর অন্য দিকে নতুন এক অর্ডারে দুনিয়া নিজে চলতে শুরু করার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। গ্লোবাল ইন্টারন্যাশনাল অর্ডার বা এই নয়াবিধি ‘ব্যবস্থা’ শুরু হচ্ছে জাতিসঙ্ঘকে কেন্দ্রে রেখে মূলত এবং অন্তত তিনটা বহুরাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান গড়ে নিয়ে। এই বিগত অর্ডারটাকে যদি বলি কলোনি যুগ বা কলোনি ক্যাপিটালিজমের কাল তবে, নতুন যা গড়ে উঠছে তা আমেরিকান নেতৃত্বে এক গ্লোবাল ক্যাপিটালিজম যদিও কমিউনিজম এটি সরাসরি স্বীকার করতে চায়নি। কেবল জাতিসঙ্ঘ গঠনের সময়ে নিজের ভেটো সদস্যপদটা ঠিকঠাক বুঝে নিয়ে বাকি ব্যাপারে পরোক্ষে আমেরিকা যা করে করুক, মেনে নিয়েছিল। আর অন্য দিকে এক বিশাল গ্লোবাল বাণিজ্য বিনিময় ব্যবস্থা চালু করতে বহুরাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান আইএমএফ-বিশ্বব্যাংক এদের জন্ম হোক; তা আমেরিকা গড়ে তুলুক এটি ইউরোপ মনেপ্রাণে চেয়েছে।