নৌকা প্রতীকে সিল দেয়া ব্যালট ভাসছে পানিতে
পিবিসি নিউজঃ কুমিল্লার চান্দিনায় পঞ্চম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণের পরদিন নৌকা প্রতীকে সিল দেয়া ব্যালট পেপার মাছের প্রজেক্ট থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। ওই ঘটনায় নৌকা প্রতীক প্রার্থী সংশ্লিষ্ট প্রিজাইডিং অফিসার ও প্রশাসনকে দায়ী করছেন।
বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) সকালে উপজেলার ১ নম্বর শুহিলপুর ইউনিয়নের সুহিলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দলপাড়া হারুন মিয়াজী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের পাশ থেকে বেশ কয়েটি ব্যালট পেপার উদ্ধার করে পুলিশ। যার প্রতিটিতে নৌকা প্রতীকের উপর সিল দেয়া ছিল।
স্থানীয়রা জানায়, সকালে শুহিলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্র সংলগ্ন মাছের প্রজেক্টের এক শ্রমিক মরা মাছ তুলতে গিয়ে স্কুলের পেছনে বেশ কয়েটি ব্যালট পেপার ভাসতে দেখে স্থানীয়দের খবর দেন। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আশরাফুন নাহার ও অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আরিফুর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই ব্যালট পেপারগুলো উদ্ধার করেন। এ সময় প্রতিটি ব্যালটে নৌকা প্রতীকের উপর সিল দেয়া ছিল।
সকাল সাড়ে ১১টায় একই ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড হারুন মিয়াজী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্র সংলগ্ন মাছের প্রজেক্টে থেকে একইভাবে আরো ৪টি ব্যালট পেপার পাওয়া যায়। দুপুর দেড়টায় সুহিলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্র থেকে ১ শ’ গজ দূরত্বে একই প্রজেক্ট থেকে খাবারের প্যাকেটের ভেতরে আরো ১১টি ব্যালট পেপার পায় স্থানীয়রা। যার সবগুলোতেই নৌকা প্রতীকের উপর সিল দেয়া।
এ ঘটনায় ওই ইউনিয়নের নৌকা প্রতীক প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ইমাম হোসেন সরকার জানান, বুধবার (৫ জানুয়ারি) পঞ্চম ধাপে চান্দিনার ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে শুহিলপুর ইউনিয়নে পরিষদেও ভোট গ্রহণ হয়। ভোট গ্রহণের শুরু থেকে আমার লোকজনকে হয়রানি শুরু করে প্রশাসন। ভোট গণনার সময় ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সুহিলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৩ নম্বর ওয়ার্ড দলপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্র থেকে আমার এজেন্টদের বের করে দিয়ে অন্তত সাড়ে ৩ শ’ ভোট পানিতে ফেলে ও বিভিন্নভাবে নষ্ট করে প্রশাসন।
শুহিলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের নৌকা প্রতীকের এজেন্ট পল্লী চিকিৎসক ফারুক হোসেন জানান, শুহিলপুর ভোট কেন্দ্রের ঘেঁসেই বড় মাছের প্রজেক্ট। বুধবার ভোট গণনার সময় আমাদেরকে বের করে দিয়ে ব্যালট পেপারগুলো নিয়ে প্রিজাইডিং অফিসার পাশের একটি কক্ষে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। অন্তত ৩ ঘণ্টা পর রাত ৮টায় ফলাফল ঘোষণা করেন। পরদিন সকালে কেন্দ্রের পাশের প্রজেক্টে নৌকার সিল দেয়া ব্যালট ভাসছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, মূলত নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করতে ব্যালট পেপারগুলো পানিতে ফেলে দেয় প্রশাসন।
এ ব্যাপারে জানতে সুহিলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং ফারুকুল ইসলাম জানান, আমরা যখন ভোট গণনা করেছি তখন প্রার্থীদের একজন করে সাথে রেখেছি। সেখানে গোপনভাবে কিছুই করা হয়নি। আর পরদিন পানিতে কিভাবে ব্যালট পেপার এসেছে তা আমার জানা নেই।