দাদা-দাদির কবরের পাশে হাদিসুরকে দাফন করা হবে
পিবিসি নিউজঃ ইউক্রেনের ওলভিয়া বন্দরে রকেট হামলায় নিহত এমভি বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের নাবিক ও থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মাদ হাদিসুর রহমানের মরদেহ ঢাকায় পৌঁছেছে। সোমবার বেলা ১২টা ৫ মিনিটে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হাদিসুরের মরদেহবাহী তার্কিশ এয়ারের ফ্লাইটটি পৌঁছে।
কিছু দাপ্তরিক কাজ শেষে দুপুর ১টা বিমানবন্দর থেকে লাশবাহী বিশেষ এ্যাম্বুলেন্সে হাদিসুরের মরদেহ গ্রামের বাড়ি বরগুনার বেতাগীর উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে।
হাদিসের ছোট ভাই গোলাম মাওলা প্রিন্স জানান, লাশবাহী এ্যাম্বুলেন্সে ছোট ভাই প্রিন্স, ছোট চাচা মিজানুর রহমান এবং চাচাতো ভাই ক্যাপ্টেন তসলিম আহমেদ রয়েছেন।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে হাদিসুরের মরদেহের নামাজে জানাজা শেষে দাফন করা হবে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাকসুদুর রহমান ফোরকান বলেন, ‘হাদিসুরের মরদেহ ঢাকা থেকে দুপুর ১টায় রওনা দিয়েছে। গ্রামের বাড়ি বেতাগীর কতমতলা আসতে রাত ৮টা থেকে ৯টা হতে পারে। এসব নির্ভর করবে মাওয়া ফেরির উপর। এ কারণে রাতে দাফন না দিয়ে মঙ্গলবার সকাল ১০টায় জানাজা নামাজ শেষে দাফন করা হবে।’
সরেজমিনে সোমবার বিকেল ৩টার দিকে বাড়িতে হাদিসুরের ছোট চাচা জসিম হাওলাদার বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি হাদিসুরের দাদা-দাদির কবরের পাশে তাকে দাফন করা হবে।’
জানা গেছে, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের (বিএসসি) মালিকানাধীন জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধি ড্যানিশ কোম্পানি ডেল্টা কর্পোরেশনের অধীনে ভাড়ায় চলছিল। গত ২২ ফেব্রুয়ারি মুম্বাই থেকে তুরস্ক হয়ে জাহাজটি ইউক্রেনের ওলভিয়া বন্দরে যায়। ওলভিয়া থেকে সিমেন্ট ক্লে নিয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি ইতালির রেভেনা বন্দরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার কথা ছিল জাহাজটির।
কিন্তু এর আগেই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হলে ২৯ জন ক্রু নিয়ে ওলভিয়া বন্দরে আটকা পড়ে জাহাজটি। পরবর্তীতে গত বুধবার (০২ মার্চ) রকেট হামলায় জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান মারা যান। তবে জাহাজে থাকা বাকি ২৮ জনকে পরের দিন বৃহস্পতিবার অক্ষত অবস্থায় সরিয়ে নেওয়া হয় বলে জানিয়েছিল বিএসসি।
এরপর হাদিসুরের লাশ ও বেঁচে যাওয়া ২৮ নাবিকদের উদ্ধারে এগিয়ে আসে একটি আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। তাদের সহযোগিতায় গত শনিবার (০৫ মার্চ) বাংলাদেশ সময় দুপুরে ইউক্রেনের ওলভিয়া বন্দর সংলগ্ন বাংকার (শেল্টার হাউজ) থেকে বেরিয়ে মালদোভার পথে যাত্রা শুরু করেন ২৮ নাবিক। পরের দিন রোববার (০৬ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে তারা ইউক্রেন সীমান্ত পেরিয়ে মালদোভা হয়ে রোমানিয়া পৌঁছান।
গত বুধবার (০৯ মার্চ) ২৮ নাবিক রোমানিয়ার বুখারেস্ট বিমানবন্দর থেকে তার্কিশ এয়ারের একটি ফ্লাইটে ইস্তাম্বুল হয়ে ঢাকায় ফেরেন। তন্মধ্যে ১২ নাবিক বুধবার রাতেই নভো এয়ারের একটি লোকাল ফ্লাইটে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে পৌঁছান।