লাশের সাথে প্রতারণা, দায় কার?
পিবিসি নিউজঃ মাঝেমধ্যে আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিনব পন্থায় প্রতারণার খবর পেয়ে থাকি। কিন্তু মৃত লাশের সাথে প্রতারণার বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মালয়েশিয়া প্রবাসী আ: কাইয়ুমের লাশ দেশে আনার সহযোগিতার নামে মৃতের স্ত্রীর সাথে এমনই প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে ওয়েজ আনার্স কল্যাণ বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি যেসব দফতর আছে প্রবাসীদের সহযোগিতার জন্য সেগুলোর কাজ কী এবং কিভাবে প্রবাসীরা উপকৃত হবেন অধিকাংশ ভুক্তভোগীই জানেন না। জানানোর জন্যও তাদের কোনো উদ্যেগ নেই। সরকারি খরচে প্রবাসীর লাশ দেশে আনার বিধান রয়েছে। আবার সেবাগ্রহীতার একটা অংশ এসব দফতরে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অদক্ষতা ও তাদের অসহযোগিতার কারণে ভোগান্তির শিকার হয়ে সরকার প্রদত্ত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কিন্তু দায়ী সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেয়ার নজিরও খুব কম। তথ্য প্রমাণ চেয়ে সু-কৌশলে এড়িয়ে গিয়ে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে একাধিকবার সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রবাসীদের যেন হয়রানি না করা হয় এবং দেশ-বিদেশে প্রবাসীদের সম্ভব সব ধরনের সহযোগিতা যেন দেয়া হয়। প্রবাসীদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর এই আন্তরিক নির্দেশনার পরও আন্তরিক হচ্ছে না সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্তরা। প্রবাসী সংশ্লিষ্ট কোনো সাহায্য চাইতে গেলেই হাইকোর্ট দেখিয়ে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকে যেন তার করার কিছুই নেই। সংগত কারণেই সরকারের সুফল পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রবাসীরা।
সপ্তাহ খানেক আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগর আ: কাইয়ুম হৃদরোগে মারা যান কুয়ালালামপুরের একটি হাসপাতালে। পরিবারের অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে লাশ দেশে আনার খরচ তো দূরের কথা একটা কফিন কেনার ক্ষমতা নেই। মালয়েশিয়াস্থ ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলা এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হলে হাউমাউ করে কেঁদে সাংবাদিক ও প্রবাসী কমিউনিটির নের্তৃবৃন্দের সহযোগিতা কামনা করেছেন অসহায় স্ত্রী মনোয়ারা বেগম।
মনোয়ারা বেগম জানান, দূতাবাসে যাওয়ার পর বলে দেয়া হয়েছে জেলা ওয়েজ আনার্স কল্যাণ বোর্ডে আবেদন করার জন্য কিন্তু মনোয়ারা বেগমের কোনো ছেলে সন্তান নেই। নিজেই দুদিন অনেক কষ্ট করে এদিক-সেদিক ঘোরাঘুরি করে জানতে পারেন ওয়েজ আনার্স বোর্ডের কোনো শাখা এই জেলাতে নাই! তাহলে এটা কোন ধরনের ভোগান্তি?
দুঃখের বিষয় এই অসহায়ত্বের মাঝে সহযোগিতার হাত নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলো এগিয়ে না এলেও আ: কালাম আজাদ নামে এক প্রতারক ঠিকই এগিয়ে এসেছেন। তিনি ০১৮৭৫৮৫৯০২৭ নাম্বার থেকে ফোন করে মনোয়ারা বেগমকে বলেন, আমি আবুল কালাম আজাদ প্রবাসী কল্যাণ ওয়েজ আনার্স বোর্ডের উপ-সচিব, আপনার স্বামীর লাশ দেশ আনার জন্য ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দেয়া হবে বোর্ডের পক্ষ থেকে কিন্তু তার আগে ফর্ম পুরণের জন্য ৩ হাজার ৬০০ টাকা পাঠিয়ে দিন। আমরা আপনার ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ব্যাংক এ্যাকাউন্টে সাথে সাথেই পাঠিয়ে দিব।