বিএনপির ১০ দফা দাবি আদায় ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে : মির্জা ফখরুল
পিবিসি নিউজ ডেস্কঃ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি ঘোষিত ১০ দফা দাবিকে হালকাভাবে নেয়ার কোনো অবকাশ নেই। আজকে যদি এই দাবি আদায়ে আমরা ব্যর্থ হই, তাহলে আপনারা নিশ্চিত থাকতে পারেন এই জাতি ব্যর্থ জাতিতে পারিণত হবে। এই দেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র ছাড়া আমাদের কোনো ভবিষ্যত নেই এবং আমরা কলোনীতে পরিণত হবে।রোববার সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্ট বার মিলনায়তনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখা : ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা করেন।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।এ সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধান থেকে তুলে দিয়ে বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক দেশকে অনিশ্চিয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছেন।
অথচ এ মামলায় আদালত নয়জন এ্যামিকাস কিউরি নিয়োগ দিয়েছিল, তাদের মধ্যে ৮ জন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা রাখার পক্ষে অভিমত দিয়েছিলেন। এছাড়া পার্লামেন্টের যে কমিটি হয়েছিল সেখানেও ৯৯ ভাগ রাজনৈতিক দল এবং নাগরিক সমাজ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা রাখার পক্ষে মতামত দিয়েছিল। কিন্তু তা উল্টিয়ে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়।
তিনি বলেন, দেশ আজ গভীর সংকটে। দেশে চরম নৈরাজ্য অবস্থা তৈরি করেছে আওয়ামী লীগ। শুধু বিএনপির ৪০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এটা কি আমরা চিন্তা করতে পারি?
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ক্যাসিনো সম্রাটের জামিন হয়, হাজী সেলিম, মায়ার জামিন হয় কিন্তু গণতন্ত্রের জন্য যিনি সবকিছু ত্যাগ করেছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জামিন হয় না। জাতি পুরোপুরি বিভাজন হয়ে গেছে। এখন বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের, বিএনপির নেতাকর্মীদের কোথাও চাকরি হয় না। চাকরিতে এখনো ডিএনএ টেস্ট করা হয়। বিএনপির প্রমাণ পেলে তার চাকরি হয় না। পকিস্তান আমলে আমাদের যে লড়াই করতে হয়েছিল আওয়ামী লীগের শাসন আমলে এখন সেই লড়াই করতে হচ্ছে।
চাপার জোরে আওয়ামী লীগ দেশকে উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করেছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশের ৪২ ভাগ মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে বাস করে। অথচ চাপার জোরে আওয়ামী লীগের নেতারা অনুন্নত দেশকে উন্নত রাষ্ট্র বানিয়েছে। উন্নয়নের নহর বইয়ে দিচ্ছে। উন্নয়নের কথা বলে তারা লুটপাট চালাচ্ছে।
সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি এ জে মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে বিএনপির আইন সম্পাদক ও আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামালের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় জাতীয় সংসদের সাবেক স্পিকার ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন, জয়নুল আবেদীন, বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, আইনজীবী ফজলুর রহমান, আইনজীবী ফোরাম ঢাকা বার ইউনিটের সভাপতি মাসুদ আহমেদ তালুকদার, সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সভাপতি আবদুল জবাবার ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম সজল, ঢাকা বার ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক ফারুকী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
আইনজীবীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, মানুষ তাকিয়ে আছে আইনজীবীদের দিকে। আপনারা সামনে থেকে ১০ দফা আদায়ের সংগ্রামে নেতৃত্ব দিন। জনগণের সাবভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নেতৃত্ব দিন। এই দেশ কারো পৈত্রিক সম্পত্তি না। এই দেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন ফিরিয়ে আনতে হবে। ১০ দফা আদায় ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে। এতে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই।
ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেন, আমরা একটা নিরেপক্ষ নির্বাচন চাই, এটাই তাদের সহ্য হচ্ছে না। বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হতেই হবে।
তিনি বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ১৯ দফা বিএনপির ১০ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে। গণতন্ত্রের জন্য নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে হবে, তাহলে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে। বাংলাদেশ ইতিহাসে ইমারজিন টাইগারে পরিণত হবে।