চিনির বাজার অস্থির করে অতিরিক্ত দামে বিক্রির কারসাজি আওয়ামী ব্যবসায়ী সিণ্ডিকেটের
পিবিসি নিউজ ডেস্কঃ পবিত্র রমজান মাস সামনে রেখে আওয়ামী চিনি ব্যবসায়ী সিণ্ডিকেট অতি মুনাফার লোভে কারসাজিতে নেমেছে। বাজারে চিনির কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে সাধারণ মানুষের নিকট থেকে বেশি দামে বিক্রি করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া ইতোমধ্যেই শুরু করেছে এই সিণ্ডিকেট।
দাম নির্ধারণের পরও রাজধানীর বাজারে পাত্তাই দিচ্ছে না আওয়ামী সিণ্ডিকেট ব্যবসায়ীরা। হঠাৎ করেই যেন গায়েব হয়ে গেছে প্যাকেটজাত চিনি। আর খোলা চিনির বাজারদর তো একেবারে লাগামহীন।
সরকার যে দাম নির্ধারণ করেছে খুচরা খোলা চিনি কিনতে হলে প্রতি কেজিতে ১৩ টাকা বেশি আদায় করছেন দোকানীরা। বাধ্য হয়ে কিনছেন ক্রেতারা। কেউ কেউ খালি হাতেই ফিরছেন।
ক্রেতাদের ভাষ্য, আসছে রমজান মাসে চিনির বাজারে আগুন লাগাতে পারেন আওয়ামী মুনাফাখোর ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, এই সরকারের শেষ মুহূর্তে ইচ্ছামতো লুটপাটে মন দিয়েছে আওয়ামী লীগের ব্যবসায়ী নেতারা।কিন্তু, কেন এমন সংকট? এমন প্রশ্নে, আওয়ামী ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের দৌরাত্ন্যের কথা এড়িয়ে গেছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা।
আর পাইকারী ব্যবসায়ীরা বলছেন, চিনির বাজারে এ অবস্থার কারণ সরবরাহ-সংকট। মিল মালিকদের কথার সঙ্গে মিল নেই পাইকারি বিক্রেতাদের।
চলতি বছরের ২৬শে জানুয়ারী প্রতি কেজি চিনির দাম পাঁচ টাকা বাড়িয়ে বিজ্ঞপ্তি দেয় বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন। এতে প্রতি কেজি খোলা চিনির সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১০৭ টাকা এবং প্যাকেটজাত চিনি ১১২ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্য দিয়ে গত তিন মাসে দুই দফায় কেজিপ্রতি ১৭ টাকা বাড়ল চিনির দাম। এরপরও রাজধানীর বাজারে কোথাও খোলা চিনি নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে না।
মঙ্গলবার (৭ই ফেব্রুয়ারি) বিকেলে পশ্চিম রামপুরা বাজারের মেসার্স লামিয়া স্টোরে চিনি আছে কি না, জানতে চাওয়া হলে দোকানি আরাফাত হোসেন প্রতি কেজি খোলা চিনি ১২০ টাকা দাম হাঁকান। প্যাকেট চিনি চাইলে নেই বলে জানান তিনি।
খোলা চিনির দাম বেশি চাওয়ার কারণ জানতে চাইলে আরাফাত বলেন, পাইকারি বাজারে দাম বেশি হওয়ায় তাঁরাও বাড়তি দামে বিক্রি করছেন।
রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকায়, যা এক মাস আগে ছিল ১১০-১১৫ টাকা।
চিনির একাধিক পাইকারি ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মিল থেকে প্রতি কেজি চিনি ১০৫-১০৬ টাকায় কেনা হচ্ছে। বাজারে চিনির ঘাটতি রয়েছে। ঘাটতি পূরণে ভারত থেকে পরিশোধিত চিনি আমদানির দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
তবে পাইকারি ব্যবসায়ীদের কথার সঙ্গে মিল মালিকদের কথার মিল পাওয়া যায়নি। পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠান দেশবন্ধু গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, কেন নির্ধারিত দামে চিনি বিক্রি হচ্ছে না, এটি মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন। তবে মিল থেকে নির্ধারিত দামেই চিনি বিক্রি হচ্ছে। তাদের প্রতিষ্ঠান প্রতি কেজি চিনি ১০২ টাকায় বিক্রি করছে।