দিনে বিএনপির মিছিলে গুলি-কাঁদানে গ্যাস, রাতে ২০০ জনের বিরুদ্ধে পুলিশের সাজানো মামলা
পিবিসি নিউজ ডেস্কঃ বিএনপির চলমান আন্দোলন দমন করতে একের পর এক মিথ্যা মামলায় জর্জরিত করা হচ্ছে দলটির নেতা-কর্মীদেরকে। দমন-পীড়নের ধারাবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় বিএনপির ৫০ নেতাকর্মী ও অজ্ঞাত অন্তত ১৫০ জনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে সাজানো মামলা করেছে পুলিশ।
শনিবার রাতে পুলিশের উপপরিদর্শক নূর আলম বাদী হয়ে আড়াইহাজার থানায় মামলাটি দায়ের করেন।মামলায় ইয়াকুব নামের বিএনপির এক কর্মী গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছেন আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক।
গ্রেপ্তার ইয়াকুব (২৫) আড়াইহাজার থানা যুবদলের সদস্যসচিব খোরশেদ আলমের ছোটভাই বলে জানিয়েছে বিএনপি।ওসি দাবি করেন, গত শনিবার দুপুরে আড়াইহাজারের পাঁচরুখী এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এতে বাধা দিলে পুলিশের ওপর হামলা চালায় তারা।
ঘটনাস্থল থেকে বিস্ফোরিত ককটেলের অংশ, লাঠি, বাঁশ ও ইটের টুকরা জব্দ করা হয়েছে।আওয়ামী পুলিশের এমন মিথ্যাচার নতুন নয়।
বিএনপির কর্মসূচিতে প্রথমে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের গুণ্ডাদের বাধা ও হামলার পর সাজানো মামলা চলছে দেশব্যাপী। নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারেও এমনই সাজানো মামলা দায়ের করা হয়েছে।
দমন-পীড়নকে জায়েজ করতে ওসি দাবি করেন, নাশকতা ও সরকারি কাজে বাধা এবং হামলার অভিযোগে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে।বিস্ফোরক আইনের ওই মামলায় বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক লুৎফর রহমান আবদু সহ ৫০ জনের নাম উল্লেখ ও আরও ১০০-১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, শনিবার (১১ই ফেব্রুয়ারি) দুপুর সোয়া ১টার দিকে কেন্দ্র-ঘোষিত পদযাত্রা কর্মসূচির অংশ হিসেবে উপজেলার সাতগ্রাম ইউনিয়ন বিএনপি মিছিল বের করলে পাঁচরুখী এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। এক পর্যায়ে দাঙ্গা পুলিশ বিএনপির মিছিলে লাঠিচার্জ করে।
বিএনপির কর্মীরা পুলিশের হামলা ঠেকানোর চেষ্টা করলে পুলিশ গুলি ও কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে। জবাবে পাল্টা ইট-পাটকেল ছুঁড়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এতে বিএনপির ১০ জন নেতাকর্মী আহত হন।
বিএনপির অভিযোগ, তাদের শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা দিয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, মহাসড়কে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করার অনুরোধ জানালে বিএনপি নেতা-কর্মীরা পুলিশের ওপর চড়াও হয়।
পুলিশের মামলার প্রতিক্রিয়ায় জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক লুৎফর রহমান আবদু বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা করছিলাম। পাঁচরুখী বাজার থেকে কিছুটা দূরে মসজিদের সামনে গিয়েই পদযাত্রা শেষ করার কথা ছিল। অথচ তার মধ্যেই পুলিশ আমাদের বাধা দিয়ে লাঠিপেটা শুরু করে, গুলি ও টিয়ারগ্যাস ছোড়ে। আবার আমাদের নামেই মামলা দিয়েছে। বিএনপি নেতারা এই হামলা-মামলা নিয়েই টিকে আছে।
তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তার ইয়াকুব বিএনপি করে না। তার বড়ভাই যুবদলের সদস্যসচিব। তাকে অযথা চায়ের দোকান থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।