পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় স্ত্রীকে হত্যা
যাত্রাবাড়ী (ঢাকা) প্রতিনিধি: রাজধানীর কদমতলীতে ফাহমিদা ফারুকী এশা (২৩) নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। স্বামীর পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ নিহতের বাবার।
বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে পলাশপুর রেনেসা স্কুল অ্যান্ড কলেজ গলির ৩৪/৫ মাহী আলম চৌধুরীর বাড়ির ৫ম তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে তার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার দুটি কন্যাসন্তান রয়েছে।
নিহত এশা তার স্বামী আল ইমরান সাব্বিরের সঙ্গে ওই ফ্ল্যাটে থাকতেন। ঘটনার পর থেকে এশার স্বামী পলাতক। নিহত গৃহবধূর গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ থানার আরজি দুর্গাপুরে।
এশার বাবা ওমর ফারুক বলেন, আমার মেয়ের স্বামী ইমরানের পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় প্রায়ই এশাকে মারধর করত। বৃহস্পতিবার সকালেও তাকে মারধর করেছে। তাকে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমার মেয়ে তার ফেসবুকে লিখেছে— একজন স্বামী যদি পরকীয়া করে তাকে বাধা দেওয়া কি কোনো স্ত্রীর অপরাধ?
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে নিহত ফাহমিদার বাবা ওমর ফারুক অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়েকে আমার জামাইসহ তার পরিবারের সদস্যরা হত্যা করে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখেছে। পরে পুলিশকে খবর দিলে তারা মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়।
তিনি বলেন, আমার মেয়ে ফাহমিদার সঙ্গে সাব্বিরের আট বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর বিভিন্নভাবে আমার মেয়েকে তার স্বামী শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করত। সাব্বির পরকীয়া করত। গত ২২ তারিখে রাত ৩টার দিকে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বাসায় এসে আমার মেয়েকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। পরে গতকাল (বৃহস্পতিবার) সকালে আমার ছোট মেয়েকে ফোন দিয়ে ফাহমিদা জানায়, তার স্বামী তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছে এবং ডাক্তারের কাছে যাওয়ার জন্য টাকা পাঠাতে বলে। এরপর মেয়ের জামাই আল ইমরান আমার স্ত্রীকে ফোন করে বলে দুই নাতনিকে বাসায় নিয়ে আসতে সে আমার মেয়েকে নিয়ে কলেজে পরীক্ষার জন্য যাবে। পরে আমার স্ত্রী বাসায় গিয়ে আমার নাতনিদের নিয়ে আসে।
নিহত ফাহমিদার বাবা বলেন, বিকেলে আমার স্ত্রী মেয়ের ফোনে কল দিলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়, জামাইকে কল দিলে সে রিসিভ করে না। পরে সন্দেহ হলে সন্ধ্যায় আমার স্ত্রী সন্ধ্যায় মেয়ের বাসায় যায়। আমার সাব্বিরের কাছে মেয়ের কথা জানতে চাইলে জানায় সে ঘুমাচ্ছে। কিন্তু আমার স্ত্রী দরজা খুলে দেখে আমার মেয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছে। আমার স্ত্রীর কল পেয়ে দ্রুত আমি ঘটনা স্থলে যাই। এরপর তাকে (সাব্বির) সেখান থেকে নামিয়ে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায় পুলিশ।