ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে বাফেলো সিটি হলের সামনে গায়েবি জানাজা ও বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ
পিবিসি নিউজ: রেমিটেন্স পাঠানো বন্ধ করার হুমকি দিয়ে বিক্ষুব্দ প্রবাসীদের বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়েছে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের বাফেলো শহরে। ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে প্রথমে গায়েবি জানাজা, ছাত্রদের বিদেয়ী আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া এবং স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবি নিয়ে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে বাফেলো সিটি হলের সামনে নায়াগারা স্কয়ার এলাকা।
গত ১৯জুলাই,২০২৪ রোজ শুক্রবার জুম্মার নামাজের পরে দুপুর ৩ঘটিকায় অনুষ্ঠিত হয় এই বিক্ষোভ সমাবেশ। ওয়েস্টার্ন নিউইয়র্ক এলাকায় বসবাসরত প্রায় হাজার খানেক প্রবাসী বাংলাদেশীরা অংশ গ্রহণ করেন এই বিক্ষোভ সমাবেশে। কোটা সংস্কার আন্দোলন দমাতে কয়েকশ ছাত্রকে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করেছে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় প্রশাসনিক বাহিনী। পুলিশ, বিজিবি, সরকারি দলের ছাত্র শাখা বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সহ অন্যান্য সন্ত্রাসী বাহিনী অংশ নেয় ছাত্র হত্যার মতো এই ন্যাক্কারজনক কাজে। শেখ হাসিনার সরাসরি নির্দেশে এমন জঘন্য হত্যাকান্ড ঘটেছে বলে বিক্ষোভকারীরা দাবি করেছেন।
দেশপ্রেমিক বাফেলোবাসিদের উদ্যোগে আয়োজিত এই বিক্ষোভ সমাবেশে সকল শ্রেণী পেশার মানুষ অংশ নেয়। শিশু, কিশোর-কিশোরী, যুবক-যুবতী থেকে শুরু করে গৃহবধূ কিংবা বৃদ্ধ প্রবাসীরাও এসেছিলেন তাদের ক্ষোভের প্রতিফলন ঘটাতে। বাফেলো সিটি হলে কর্মরত বাংলাদেশী বংশদ্ভুত ও নিউইয়র্ক স্টেট্ বিএনপি ওয়েস্ট গঠন সমন্বয় কমিটির অন্যতম নেতা জাভেদ মোস্তফা সাম্প্রতিক ছাত্রহত্যার বিষয়টি বাফেলো মেয়রকে অবহিত করলে মেয়র স্ব-ইচ্ছায় তার ক্ষমতা বলে বিক্ষোভের পারমিশন দিয়ে ছিলেন। সিটি হলে কর্মরত কর্মকর্তারা সরাসরি এই বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ না নিলেও বিক্ষোভকারীদের প্রতিটা পদক্ষেপ তারা সচক্ষে পর্যবেক্ষণ করেছেন। সামান্য সময়ের নোটিশে প্রবাসীদের এতো বড় সমাবেশ বাফেলোবাসি আগে কখনও দেখেনি। কমিউনিটির গুরুত্বপূর্ণ সকল পর্যায়ের নেতাকর্মী এই বিক্ষোভ সমাবেশে দলে দলে যোগ দিয়েছিলেন।
১৮ই জুলাই বিকেলে মেয়র অফিস থেকে বিক্ষোভ সমাবেশের পারমিশন পাওয়ার সাথে সাথে বাফেলো বাংলার অফিসে একটি সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে এই বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয়া হয়। সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাফেলো সিটি হলে কর্মরত প্রবাসী কমিউনিটি লিডার জাভেদ মোস্তফা, পিবিসি টুয়েন্টিফোর টেলিভিশন এর সম্পাদক মতিউর রহমান লিটু, কমিউনিটি একটিভিস্ট আব্দুর রহিম, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ জিন্নাহ এবং সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার নুরুল করিম জনি।
ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে আয়োজিত এই বিক্ষোভ সমাবেশে একদিকে মুহুর মুহুর স্লোগান চলতে থাকে অন্যদিকে কমিউনিটি লিডাররা তাদের বক্তব্য দিয়ে প্রবাসীদের রেমিটেন্স পাঠানো বন্ধ করার আহবান জানান। বাংলাদেশের প্রতিটা অঞ্চলে ছড়িয়ে পরা ছাত্র বিক্ষোভ দমন করতে শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামীলীগ সরকার রীতিমতো যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন বলে দাবি করা হয়েছে। এমন জাতীয় ইস্যুতে সকলকে দলমত নির্বিশেষে সর্বোচ্চ ত্যাগ করার আহবান জানানো হয়েছে।