বহু বিশ্বনেতার গোপন সম্পদের তথ্য ফাঁস প্যানডোরা পেপার্সে
পিবিসি নিউজঃ এবার প্যানডোরা পেপার্সে এ যাবৎকালের অন্যতম বৃহৎ আর্থিক নথিপত্র ফাঁসের এক ঘটনায় বিশ্বের বড় বড় নেতা, রাজনীতিবিদ ও ধনকুবেরদের গোপন সম্পদ ও লেনদেনের তথ্য বেরিয়ে এসেছে। খবর বিবিসির।
বিবিসি বলছে, বিভিন্ন অফশোর কোম্পানির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে, এমন প্রায় ৩৫ জন বর্তমান ও সাবেক নেতা এবং তিন শতাধিক সরকারি কর্মকর্তার কথা ‘প্যানডোরা পেপার্স’ নামের নথিপত্রে উঠে এসেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ানহ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম সংযুক্ত আরব আমিরাত, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, পানামা, সাইপ্রাস, সিঙ্গাপুর, সুইজারল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে থাকা ১৪টি আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের প্রায় এক কোটি ২০ লাখ নথি বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য প্রকাশ করেছে।
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, চেক প্রধানমন্ত্রী আন্দ্রেই বাবিস, আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ, কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উহুরু কেনিয়াত্তা, সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের মতো নেতার গোপন সম্পদের তথ্য ‘প্যানডোরা পেপার্সে’ প্রকাশ পেয়েছে।
বিবিসি প্যানোরামার প্রকাশ করা এসব নথিপত্রে দেখা যায়, জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে গোপনে সাত কোটি পাউণ্ডের বাড়ি-জমির মালিক হয়েছেন।
আরও জানা যাচ্ছে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মোনাকোয় গোপন সম্পদের সঙ্গে সম্পর্কিত।
এছাড়া, আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ ও তাঁর সহযোগীরা যুক্তরাজ্যে প্রায় ৪০ কোটি পাউন্ডের জমি-বাড়ি কেনাবেচার চুক্তিতে জড়িত ছিলেন বলে এসব দলিলে দেখা গেছে।
যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার ও তাঁর স্ত্রীর ব্যাপারে জানা গেছে যে, তাঁরা লন্ডনে একটি অফিস কেনার সময় তিন লাখ ১২ হাজার পাউণ্ড কর স্ট্যাম্প শুল্ক বাঁচিয়েছেন। ওই ভবনের মালিকের একটি বিদেশি কোম্পানিও তাঁরা কিনে নেন।
জর্ডানের বাদশাহ’র আইনজীবীরা জানিয়েছেন, তাঁর জমি-বাড়িগুলো ব্যক্তিগত সম্পদ দিয়েই কেনা এবং সাধারণত এমন উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের সম্পত্তি অফশোর কোম্পানির মাধ্যমেই কেনা হয় নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা রক্ষার স্বার্থে।
গত সাত বছরে প্যারাডাইস পেপার্স, পানামা পেপার্স ইত্যাদি নামে যেসব গোপন দলিলপত্র ফাঁস হয়েছে, এবারের এই প্যানডোরা পেপার্স হচ্ছে তার সবশেষ ঘটনা।
বিবিসি প্যানোরামা, ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানসহ আরও কিছু মিডিয়া অংশীদার মিলে বিশ্বের ১৪টি কোম্পানির প্রায় এক কোটি ২০ লাখ নথিপত্র হাতে পেয়েছে। এই নথিপত্রগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে ওয়াশিংটনভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস।