ইরান যুদ্ধে আমেরিকার পিছুটান সামরিক শক্তির দুর্বলতা নয়-এটা সুদূর প্রসারী রাজনীতির অংশ! >>মতিউর রহমান লিটু
যারা মনে করেন ইরানের ফাঁকা আওয়াজে আমেরিকা ভয় পেয়ে শান্তির প্রস্তাব দিয়েছে! তাদের সাধারণ জ্ঞানের জন্য বলছি: ভয় পেয়ে নয় বরং ঠান্ডা মাথায় সুদূর পরিকল্পনার অংশ হিসাবে শান্তির প্রস্তাব দিয়েছে আমেরিকা, এটাই হলো রাজনীতির খেলা! এই মুহৃর্তে পাল্টা আঘাত করলে ইরান হয়ত ইসরাইলে হামলা করবে আর এটাই আমেরিকার দুর্বলতা, আমেরিকা চায়না তার বন্ধু রাষ্ট্র ইসরাইল আঘাতপ্রাপ্ত হোক! অপরদিকে শত্রুর শত্রু যেমনি বন্ধু হয় তেমনি সুন্নি মুসলমানদের বড় শত্রু ইরানের সিহাহ মুসলমান এবং ইসরাইলের ইয়াহুদীরা এটাকেই কাজে লাগাতে চায় সুন্নি বিরোধী ভবিষ্যৎ রাজনীতির মাঠে!
এখন ইরানে হামলা হওয়া মানে ইসরাইল ও ইরানের ক্ষতি হওয়া তার মানে ফায়দা লুটবে সুন্নি মুসলমানেরা এটাও রাজনীতির বড় হিসাব! তাই আপাদত আমেরিকার পিছুটান! এটাকে শক্তির দুর্বলতা মনে করা রীতিমতো অজ্ঞতার লক্ষণ!
সবার জানা উচিত: আমেরিকা পৃথিবীর বৃহত্তম “ব্যবহার উপযোগী” ভূখণ্ডের দেশ, ক্যানাডা আয়তনে বড় হলেও ভুখন্ডটি মানুষের ব্যবহার উপযোগী নয়. রাশিয়া, চীন সহ অন্যান্য বড় দেশগুলির প্রত্যেকে অন্যদেশের উপর নির্ভরশীল কিন্তু আমেরিকা সব কিছুতে স্বয়ং সম্পূর্ণ, পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক খাদ্য উদ্পাদনকারী দেশ আমেরিকা তাই একমাত্র সৃষ্টিকর্তা ব্যতীত কোন দেশের সরকারের পক্ষে এই দেশকে ধ্বংস করা সম্ভব নয়। আমেরিকা রাষ্ট্রীয়ভাবে সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস করে।
আমেরিকার প্রতি ডলার কিংবা কয়েনের গায়ে লেখা থাকে “ইন গড ওই ট্রাস্ট” অর্থাৎ “সৃষ্টি কর্তায় আমরা বিশ্বাসী”! পশ্চিমা দেশের মাঝে আমেরিকায় হলো সবচেয়ে বেশি ধর্মভীরু দেশ। ইউরোপের কোন দেশ আমেরিকার মতো এতো ধর্মপরায়ণ নয়। এখানে যার যার ধর্ম পালন করেন স্বাধীনভাবে- কেও কাউকে বাধা প্রধান করেন না।
আমেরিকা সম্পর্কে মানুষের অনেক ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে; ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে হলিউডে তাদের স্বাধীনভাবে মুভি বানাতে দেয়া হয়; সেখানে গল্প কাহিনীর আদলে ভৌতিক কিংবা উলঙ্গ মুভি বানিয়ে বিশ্ববাজারের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার কামানো হয় তার মানে এই নয় যে আমেরিকার লোকজন এরকম ভৌতিক কিংবা উলঙ্গ! ঠিক যেভাবে হিন্দি ছবি দেখে বোঝার উপায় নেই ইন্ডিয়া কতটা ভিখারি ও বর্ণবৈষম্যের দেশ!
এবার আসি সামরিক শক্তি সম্পর্কে; সকল শক্তির বড় শক্তি হিসাবে ধরা হয়- পারমাণবিক শক্তি! আমেরিকার হাতে যে পরিমান রাসায়নিক ও পারমাণবিক অস্র রয়েছে তা দিয়ে তেরো বার পৃথিবীর ভূখন্ডকে আড়াইদিন পর্যন্ত জ্বালিয়ে রাখতে পারে- অর্থাৎ তেরোবার পৃথিবীকে ধ্বংস করার পারমাণবিক ক্ষমতা রয়েছে আমেরিকার হাতে। তবে এই পারমানবিক ক্ষমতার মানে এই নয় যে আমেরিকা সবসময় পারমাণবিক অস্র ব্যবহারের হুমকি দিয়ে থাকেন! স্বাভাবিক সামরিক শক্তিও পৃথিবীর অন্য যেকোন দেশের তুলনায় অপরিসীম। সময় করে পিবিসি টুয়েন্টিফোর ডটকমে এবিষয়ে বিস্তারিত লিখবো তবে এখানে যা বুঝাতে চেয়েছি আশাকরি বুজতে পেরেছেন! আমেরিকা কোন দেশকে ভয় করেনা তবে রাজনৈতিক কারণে সমঝোতা করে থাকে এটাই আমেরিকার সৌন্দর্য!
ভালো অথবা খারাপ মানুষ সব দেশেই রয়েছে এখানেও রাজনৈতিক নেতারা অন্য সাধারণ মানুষের চেয়ে খারাপ তাই বলে বিশ্বাঙ্গনে কোন রাজনৈতিক নেতার ভুল কাজ বা খারাপ কাজের জন্য গোটা আমেরিকাকে খারাপ বলে গালি দেয়া স্বল্প জ্ঞানের পরিচয় বহন করে!
সাধারণ আমেরিকানদের মানবিকতাবোধ বিশ্বের যেকোন মহান মানুষের মতোই ভালো!