১৯ বছরের ঐতিহ্যকে স্মরণে রেখে উদার আকাশ ঈদ-শারদ উৎসব সংখ্যা ১৪২৭ প্রকাশ করলেন নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী
বিশেষ প্রতিবেদন: বহু ভাষা ও বহু ধর্মের দেশ এই ভারত। এই দেশের মূল্যবান সংস্কৃতির টানে বহির্দেশ থেকে বহু মানুষ এখানে এসেছেন এবং এই সংস্কৃতির মেলবন্ধনে বাঁধা পড়েছেন। এখানে অনন্ত সম্প্রদায়ের সহবাস চলছে। সংস্কৃতির কাজ সেটাই। তাকে স্মরণ রেখে ‘উদার আকাশ’ যে কাজ করেছে তা সংস্কৃতির সমন্বয় সাধনের কাজ। এই মুহূর্তে আমাদের দেশে যে সন্ধিক্ষণ চলছে তা সত্যিই ভাবায়। এমন সময়ে উদার আকাশ ঈদ-শারদ উৎসব সংখ্যা প্রকাশ সত্যিই উল্লেখযোগ্য একটি পদক্ষেপ। উদার আকাশ ঈদ-শারদ উৎসব সংখ্যা ১৪২৭ প্রকাশ করে একথাগুলি বললেন বাংলার প্রখ্যাত লেখক ও পুরাণ-রামায়ণ-মহাভারত-গবেষক নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী। একটি অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে লেখক তাঁর ঢাকুড়িয়ার বাসভনে এই পত্রিকাটির উদ্বোধন করেন। তাঁর হাতে এই পত্রিকাটি তুলে দেন সম্পাদক ফারুক আহমেদ, সহ-সম্পাদক মৌসুমী বিশ্বাস ও রাইসা নূর। বিশ্বজোড়া করোনাকালীন দুর্যোগের মধ্যে যখন বহু স্বনামধন্য পত্রিকা ছাপাখানার মুখ দেখতে পাচ্ছে না, কিম্বা অনেকেই অনলাইনে পিডিএফ ফর্মাটে দায় সারছেন তখন স্বমহিমায় আরও বৃহৎকলেবরে দুই বাংলার উল্লেখযোগ্য লেখকদের সঙ্গে নতুন প্রতিভাবানদের লেখা সযত্নে দু’মলাটের মধ্যে ধরে প্রকাশিত হয়েছে উনিশ বছরের ঐতিহ্যশালী উদার আকাশ পত্রিকাটি।
এদিন পত্রিকার একটি কপি সম্পাদক ফারুক আহমেদ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মাননীয় মন্ত্রী আবদুর রেজ্জাক মোল্লার হাতে তুলে দিয়ে তাঁর আশীর্বাদ নেন। সম্প্রতি একটি ভুয়ো খবরে মন্ত্রীর মৃত্যু সংবাদ পরিবেশিত হয়। এই ঘটনার পর আশা করা যায় সেই মিথ্যেটা মুছে যাবে।
উভয়বঙ্গের প্রায় ১৬৩ জন সাহিত্য-যোদ্ধার প্রবন্ধ, সাক্ষাৎকার, ভ্রমণ, গল্প, কবিতা সহ একাধিক বিষয় নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে এই বিশেষ সংখ্যাটি। এতে রয়েছে ৩৩টি প্রবন্ধ, ২১টি গল্প, ৯৪টি কবিতা, ৩টি অনুবাদ কবিতা, ছড়া, একটি সাক্ষাৎকার ও ২টি স্মরণ। এছাড়াও রয়েছে ‘উদার আকাশ’-এর বিগত দুটো সংখ্যা নিয়ে এম. সদর আলীর লেখা পাঠ প্রতিক্রিয়া, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দ্বিশতজন্মবর্ষ পূর্তি উপলক্ষ্যে ছড়ার মাধ্যমে শ্রদ্ধাঞ্জলি, মানবসেবা সংক্রান্ত প্রতিবেদন, আধুনিক বাংলা কবিতা : স্বপ্ন সম্ভাবনা সংক্রান্ত সুবোধ সরকারের তুখোড় আলোচনা।
২৫৬ পাতার এই সংকলন যাদের লেখায় সমৃদ্ধ হয়েছে তাঁরা হলেন প্রবন্ধে বসব চৌধুরী, চন্দ্রপ্রকাশ সরকার, খাজিম আহমেদ, জয়ন্ত ঘোষাল, সুমন ভট্টাচার্য, মনিরুল ইসলাম, মীরাতুন নাহার, মইনুল হাসান, জহির-উল-ইসলাম, আমিনুল ইসলাম, তৈমুর খান, আবু রাইহান, আবেদা সুলতানা, সাইফুল সেখ, মনিরুদ্দিন খান, গোলাম রাশিদ, প্রদিতি রাউত প্রমা, শেখ মকবুল ইসলাম, বাহারুল হক, রিফাত আহমেদ, খন্দকার মাহমুদুল হাসান, মোহাম্মদ শামসুল আলম, শেখ মকবুল ইসলাম, শান্তনু মন্ডল, শান্তনু প্রধান, শুভেন্দু মন্ডল, সৈয়দ মাজহারুল পারভেজ, সুজাউদ্দিন সেখ, শিবরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়, একররমূল হক শেখ, অরূপ চন্দ্র প্রমুখ।
ইতিহাস গবেষক জাহিরুল হাসান-এর একটি সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সম্পাদক ফারুক আহমেদ। সদ্য প্রয়াত ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়কে স্মরণ বিভাগে আলোকপাত করছেন সম্পাদক।
এই সংকলনে কবিতা লিখেছেন সুবোধ সরকার, জহর সেনমজুমদার, নাসের হোসেন, মুহম্মদ মতিউল্লাহ, পাবলো শাহি, তুষার ভট্টাচার্য, গোলাম রসুল, সৌমিত বসু, অংশুমান কর, এবাদুল হক, তাজিমুর রহমান, আবদুস শুকুর খান, গৌরশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়, পিয়াস মজিদ, কামরুল বাহার আরিফ, রাজন গঙ্গোপাধ্যায়, নরেশ মন্ডল, আশিস সান্যাল, অমল কর, হান্নান আহসান, আসাদুল্লা আল গালিব, নাসিম-এ-আলম, সুব্রতা ঘোষ রায়, হীরক বন্দ্যোপাধ্যায়, নাহার আহমেদ, সুখেন্দু বিকাশ মৈত্র, চৈতি চক্রবর্তী, দীনমহম্মদ সেখ, কুশল চক্রবর্তী, আজহারুল ইসলাম, রুচিরা চক্রবর্তী, সেখ ওয়াসিম গুল, সায়নী চক্রবর্তী, নাফিসা খান, মোনালিসা রেহমান, শিল্পী মাহমুদা, মো: আমানুল্লা মোল্লা, মো: হুমায়ুন কবীর, মৃগাঙ্ক গুহ, মৌমিতা ঘোষ, রোকেয়া দীপা, আযাদ কামাল, প্রবীর ঘোষ রায়, কাশিনাথ মজুমদার পিংকু, নিলুফা ইয়াসমিন, আরফিনা, বাদল মেহেদী, সৌরভ আহমেদ সাকিব, চন্দ্রলেখা কর্মকার, ফিরোজ আলি আবির, আনোয়ার কামাল, নিজামুদ্দিন মন্ডল, সোনালী ঘোষ, বিবেকানন্দ বসাক, শেলী সেনগুপ্তা, মনিরুল ইসলাম, নিয়াজুল হক, ইলা দাস, মো: আব্দুল হাফিজ, জালালউদ্দিন আহম্মেদ, দর্পণা গঙ্গোপাধ্যায়, অয়ন চৌধুরী, আবদুর রব খান, পিনাকী চট্টোপাধ্যায়, মিঠুন মন্ডল, এস হজরত আলি, বিশ্বজিৎ মন্ডল, তাহমিনা কোরাইশী, সৈকত ঘোষ, মাহমুদ কামাল, মহম্মদ বাকীবিল্লাহ মন্ডল, মোহিনীমোহন সরকার, রবীন্দ্রনাথ রায়, প্রদীপ গঙ্গোপাধ্যায়, পার্থ রাহা, ঝুমা সরকার, সোমা মজুমদার, রাজকুমার শেখ, মুজিবর রহমান, রতন বোস, লোকমান হোসেন পলা, সংঘমিত্রা মুখার্জি, দেবাশিস সাহা, নুরুল আমিন বিশ্বাস, লিটন রাকিব, অশোক পাল, নাহারফরিদ খান, হাসনাইন সাজ্জাদী, কুশল ভৌমিক, সরকার মাহবুব, চৈতালী বসু, গৌর নস্কর, প্রিয়াঙ্কী দাস, রাজু মন্ডল, নূপুর পান্ডে, সোহিনী রায়, সরফরাজ আলি, এম এ ওহাব, তরুণ কুমার চৌধুরী প্রমুখ।
একটি দীর্ঘ কবিতা লিখেছেন লালমিয়া মোল্লা।
এছাড়া ছড়ায় বিদ্যাসাগর স্মরণ করেছেন আনসার উল হক, স্বপন পাল, ইভা চক্রবর্তী, জ্যোতির্ময় সরদার, চন্দন নাথ।
সাধারণ ছড়া বিভাগে আছেন পঞ্চমী গোল ও শঙ্কর কুমার চক্রবর্তী।
অনুবাদ কবিতায় আছেন অমিতাভ চক্রবর্তী ও কবিরুল ইসলাম কঙ্ক।
গল্প লিখেছেন মঈন শেখ, মাসউদ আহমাদ, দীপক সাহা, কুমারেশ চক্রবর্তী, সামশুল আলম, অরূপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সৈয়দ রেজাউল করিম, রোকেয়া ইসলাম, সোনিয়া তাসমিন খান, অংশুমান রায়, দেবাশিস মজুমদার, সৈয়দ মাজহারুল পারভেজ, শামসুন নাহার, তানবির কাজি, কুশল মৈত্র, রফিকুল নাজিম, মোশারফ হোসেন, হারাধন চৌধুরী, প্রত্যুষা সরকার, তুহিনা মন্ডল, মনসুর আলী গাজী প্রমুখ।
বিবিধ বিভাগে মানব সেবায় শিস-এর ভূমিকা নিয়ে লিখেছেন মৌসুমী বিশ্বাস, সংস্কৃতি সংবাদ পরিবেশন করেছেন রিন্টু আহমেদ।
ওয়েবনিয়ার-এ উদার আকাশ আন্তর্জাতিক আন্তর্জালিক বক্তৃতামালায় ‘আধুনিক বাংলা কবিতা : স্বপ্ন ও সম্ভাবনা’ নিয়ে সুন্দর বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন কবি সুবোধ সরকার। অনুষ্ঠানটি সংকলন ও সংযোজনায় ছিলেন অরূপ বন্দ্যোপাধ্যায়।
পত্রিকাটির প্রচ্ছদ, ইলাস্ট্রেশন ও অঙ্গসজ্জা নিপুণ হাতে করেছেন প্রখ্যাত শিল্পী সারফুদ্দিন আহমেদ। অঙ্গসজ্জায় আর একজন সহযোগী ছিলেন গৌরগোপাল ভৌমিক।
উদার আকাশ প্রকাশন উদার জীবন অন্বেষণ করতেই আত্মপ্রকাশ। ইতিমধ্যে পাঠক দ্বারা সমাদৃত হয়েছে উদার আকাশ পত্রিকা ও প্রকাশনের বহু উল্লেখযোগ্য প্রয়াস। উদার আকাশ পত্রিকার বিশেষ সংখ্যাটি দুই বাংলার মানুষের মনে দাগ কাটলে আমাদের প্রয়াস সার্থক হবে জানালেন সম্পাদক ফারুক আহমেদ। মিশ্র সংস্কৃতি আমাদের অর্জিত বৈভব এবং কাশফুলে বারুদের গন্ধ আমাদের ভাবায় এই বিষয়ে সম্পাদকীয় লেখা হয়েছে।