নুরুল হুদাকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করা উচিত: টিআইবি
কেএম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে গুরুতর অসদাচরণের অভিযোগ ওঠায় তাদের স্বেচ্ছায় পদত্যাগের পরামর্শ দিয়েছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। হুদা কমিশনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ৪২ বিশিষ্ট নাগরিকের প্রেসিডেন্ট বরাবর আবেদন পাঠানোর বিষয়ে এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এই পরামর্শ দেন তিনি। এ সময় বিশিষ্ট নাগরিকরা ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন।
টিআইবি এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বিশিষ্ট নাগরিকদের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতির কাছে যে আবেদন করা হয়েছে তাতে সহমত পোষণ করছি। কারণ বর্তমান নির্বাচন কমিশন সরাসরি আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি ও অসদাচরণে জড়িয়ে পড়েছে, যা আগে কখনো কোনো কমিশন করেনি। এমনকি আগে এরকম দৃষ্টান্ত দেখা যায়নি। আগের সমস্ত রেকর্ড ভঙ্গ করেছে বলে আমি মনে করি। তার মতে, নিবার্চন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। এটির যে গুরুত্ব তার অবমাননা করা হয়েছে এবং কলঙ্কিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেছি। পাশাপাশি সরকার প্রধান প্রধানমন্ত্রীর কাছেও আবেদন করবো। রাষ্টপতি আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। আশা করছি সরকার প্রধান বিষয়টি বিবেচনা করবেন। তিনি বলেন, কমিশনে যারা আছেন এই কমিশনারগণ এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার স্বেচ্ছায় দায়িত্ব থেকে অবসরে যেতে পারেন। অথবা কেউ কেউ নৈতিক অবস্থান থেকে পদত্যাগ করতে পারেন।
সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, বিজয়ের মাসে নির্বাচন কমিশন মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গেও বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, আগের অনুষ্ঠিত হওয়া নির্বাচনগুলোর বৈধতার বিষয় অনেক বড় বিষয়। কারণ, যে দিনের নির্বাচন সে দিনেই হওয়ার কথা। কিন্তু আমরা দেখেছি ভোট আগের রাতে হয়েছে। বিবিসিসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসব তথ্য দেখেছি। তাই গত নির্বাচনগুলোর বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক।
ড. শাহদীন মালিক বলেন, বর্তমানে গণতন্ত্র ভেঙ্গে পড়েছে। নির্বাচন এখন হয় না। এখন নির্বাচন খেলা হয়। তাই রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করে আমরা নাগরিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করলাম।
৪২ নাগরিক হচ্ছেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খান, ড. আকবর আলি খান, এডভোকেট সুলতানা কামাল, রাশেদা কে চৌধুরী, মানবাধিকারকর্মী ড. হামিদা হোসেন, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম, মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির, সেন্ট্রাল ইউমেন্স ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক পারভীন হাসান, সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আহমেদ কামাল, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেড. আই খান পান্না, ড. শাহদীন মালিক, আলোকচিত্রশিল্পী ড. শহিদুল আলম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, অর্থনীতিবিদ ড. আহসান মনসুর, সাবেক সচিব আবদুল লতিফ মণ্ডল, স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, এসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট-এর নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সি আর আবরার, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, লেখক অধ্যাপক রেহনুমা আহমেদ, সাধনার আর্টিস্টিক ডিরেক্টর লুবনা মরিয়ম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আকমল হোসেন, সোয়াস ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন-এর অধ্যাপক, গবেষক স্বপন আদনান, ব্রতী’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন মুরশিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফিরদৌস আজিম, সাবেক ব্যাংকার সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ, সিনিয়র সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, গোলাম মোর্তুজা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, অধ্যাপক ড. শাহনাজ হুদা, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, ক্লিনিকাল নিউরোসাইন্স সেন্টার, বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশন-এর পরিচালক অধ্যাপক নায়লা জামান খান, নাগরিক উদ্যোগ-এর প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন, মানবাধিকারকর্মী নূর খান লিটন।