আত্রাইয়ে ৮ মাস বেতন নেই সরকারি হাইস্কুলের শিক্ষক কর্মচারিদের
কিউ, এম, সাঈদ টিটো, নওগাঁ : নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপিঠ আহসান উল্লাহ মেমোরিয়াল মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়। সাম্প্রতিককালে জাতীয়করণ করা হয়। এরপর থেকে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষকের পদ গ্রহণ করার দ্বন্দ্বে মুখ থুবড়ে পড়েছে বিদ্যাপিঠটির স্বাভাবিক কার্যক্রম।
জাতীয়করণ করার পর বিদ্যালয়ে আট মাস ধরে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। দীর্ঘদিন শূন্য থাকায় ও পদ নিয়ে দ্বন্দ্বে শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন-ভাতা বন্ধ রয়েছে। ফলে মহামারি করোনা ভাইরাস সংকটের মধ্যে শিক্ষক ও কর্মচারীরা পরিবার-পরিজন নিয়ে অর্থকষ্টে আছেন।
এমপিও শিট ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ করা ২ ও ৩ নম্বর বাদ দিয়ে ৪ নম্বর ক্রমিকে থাকা শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেয়ায় বিদ্যালয়ে বিশৃঙ্খল পরিবেশ বিরাজ করছে। আর্থিক ক্ষমতা সম্পন্ন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক না থাকায় আট মাস ধরে বেতন হচ্ছেনা। এতে বিদ্যালয়ের প্রশাসনিকসহ দৈনন্দিন কার্যক্রমে নেমে এসেছে স্থবিরতা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গতবছর ২৪ জুলাই প্রধান শিক্ষক অবসরে যান। এরপর আর্থিক ক্ষমতা বলে বিদ্যালয়ের দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এমপিও শিট ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ করা ২ নম্বর ক্রমিকে থাকা মোহাম্মাদ মাহাতাব উদ্দিন এবং ৩ নম্বর ক্রমিকে থাকা শারমিন আখতারকে বাদ দিয়ে ৪ নম্বর ক্রমিকে থাকা জবারানী ঘোষকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ইউএনও ছানাউল ইসলাম। এই নিয়োগ যথাযথ নিয়মে না হওয়ায় তা চ্যালেঞ্জ করে গত ৩ সেপ্টেম্বর মোহাম্মাদ মাহাতাব উদ্দিন নিজেকে আর্থিক ক্ষমতাসহ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেয়ার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বরাবর আবেদন করেন।
এছাড়া ২৩ সেপ্টেম্বর জবারানী ঘোষও একই পদে দায়িত্ব নেয়ার জন্য মহপরিচালক বরাবর আবেদন করেন। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের দপ্তর থেকে গত ৫ নভেম্বর আর্থিক ক্ষমতার বিষয়ে সুস্পষ্ট মতামত চেয়ে রাজশাহী অঞ্চলের উপ-পরিচালক বরাবর চিঠি দেন। চিঠির জবাবে গত ২৩ নভেম্বর রাজশাহী অঞ্চেলের উপ-পরিচালক ড. শারমিন ফেরদৌস চৌধুরী এমপিও শিট ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়োগে থাকা ২ নং ক্রমিকের শিক্ষক মোহাম্মাদ মাহাতাব উদ্দিনকে আর্থিক ক্ষমতাসহ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেয়ার পক্ষে মত দেন।
চিঠি প্রদানের পর আর্থিক ক্ষমতার মতামত যথাযথ হয়নি মর্মে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী হিউম্যান রাইটস ও মাইনরিটি ওয়ার্ডের সভাপতি অ্যাডভোকেট বীরেন ঘোষ রাজশাহীর উপ-পরিচালককে টেলিফোনে আইনগত মতামত দিলে গত ২ ডিসেম্বর উপ-পরিচালক পুনরায় মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের আইন সেলের পরামর্শ মোতাবেক আর্থিক ক্ষমতা প্রদানের মতামত দেন।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও আত্রাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার ছানাউল ইসলাম বলেন, ‘মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক আর্থিক ক্ষমতাসহ প্রধান শিক্ষক না থাকায় শিক্ষক-কর্মচারীরা তাদের বেতন উত্তোলন করতে পারছেন না। দ্রুত সমস্যাটি সমাধান করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে