সুশাসনের জন্য দেশকে ১৭ প্রদেশ করার প্রস্তাব জাফরুল্লাহ চৌধুরীর
পিবিসি নিউজ ডেস্কঃ গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে সুষ্ঠু নির্বাচন যেমন সম্ভব নয়, তেমনি ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ ছাড়া সুশাসন প্রতিষ্ঠাও সম্ভব হবে না। ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণের জন্য দেশকে ১৬ থেকে ১৭টি প্রদেশে ভাগ করার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।
বুধবার (৮ই ফেব্রুয়ারি) ভাসানী অনুসারী পরিষদের উদ্যোগে স্বাধীনতা ও মুক্তিসংগ্রামের অবিসংবাদিত নেতা ভাসানীর কাগমারী সম্মেলন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ প্রস্তাব দেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, বর্তমানে যে শাসন কাঠামো আছে তা দিয়ে জনগণের অধিকার ও সুশাসন নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। তাই দেশকে ১৬ থেকে ১৭টি প্রদেশে ভাগ করতে হবে। যেখানে প্রত্যেক প্রদেশে মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন, হাইকোর্ট থাকবে। তাহলেই ভারসাম্য রক্ষা হবে। এছাড়া পরিবর্তন হবে না।
তিনি বলেন, আজ বাংলাদেশে কোনো গণতন্ত্র নাই, এটা আমরা সবাই জানি। এই সরকারকে ক্ষমতায় রেখে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আমাদের অবশ্যই রাস্তায় থাকতে হবে। সবাইকে সম্মিলিত আন্দোলন করতে হবে। মওলানা ভাসানীর দেখানো পথে আমাদের অগ্রসর হতে হবে। মওলানা ভাসানী জাতিকে নির্মাণ করেছেন। তাই তাকে শ্রদ্ধা করতে হবে। তাকে সম্মান করা না হলে অন্যায় ও গুনাহ করা হবে।
তিনি বলেন, শাসনের সাথে সুশাসন জড়িত। ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ ছাড়া সুশাসন সম্ভব হবে না। সরকার যে কায়দা কানুন করছে নির্বাচনের খেলার, এরই মধ্যে তা প্রমাণ হয়ে গেছে।
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, পৃথিবীর কোনো স্বৈরশাসক বেশি দিন টিকে নাই। পারভেজ মোশারফ মারা গেছেন। আমরা চাই আপনি বেঁচে থাকেন এবং বিচারের সম্মুখীন হন। রাস্তায় আপনার পাশেই থাকবো। আপনার প্রতি কোনো অন্যায় হতে দেব না। আপনি আজকে খালেদা জিয়ার প্রতি অন্যায় করছেন। সেই অন্যায় যেন রিপিট না হয় সেটা খেয়াল রাখব।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী আরও বলেন, বাংলাদেশের নির্মাতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, অন্য কেউ নয়। নকল নির্বাচন দেশকে ঘিরে ধরেছে। আমাদের সাবধান থাকতে হবে। ঐক্যের প্রয়োজনে সবাইকে একত্রিত হতে হবে।
তিনি বলেন, বাজারে পৌঁছার আগেই জিনিসের দাম বেড়ে যাচ্ছে। অথচ তা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে না। বাংলাদেশে যদি গণতন্ত্র থাকত তাহলে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় কাউন্সিলকে একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হতো না। এই সরকারকে ক্ষমতায় রেখে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই রাস্তায় থাকতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জুনায়েদ সাকী বলেন, যখন আমরা সংকটে পড়ি তখন ইতিহাসের কাছে ফিরে যাই। কোনো দল যখন তার আদর্শ ও নীতি থেকে সরে গেছে তখন সেই দল থেকে ভাসানীও সরে গেছেন। ৭২ সালের সংবিধানে জনগণের অধিকারের কিছু কথা থাকলেও তা কেড়ে নেওয়ার ব্যবস্থাও আছে। এক ব্যক্তিকে, প্রধানমন্ত্রীকে যে ক্ষমতা দেওয়া আছে তাতে জনগণের অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রগুলো ব্যর্থ করে দিয়েছে। স্বৈরাচারী কাঠামোর সংবিধানের পরিবর্তন করা না গেলে জনগণের স্বার্থ রক্ষা করা।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুলসহ অন্যরা।ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের ব্যারিস্টার সাদিয়া আরমান প্রমুখ।